ঢাকা ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বাড়ছে জনগণের ভোগান্তি

সংস্কারের এক মাস পরই দেবে গেছে ১৯০ কোটি টাকার সড়ক

সংস্কারের এক মাস পরই দেবে গেছে ১৯০ কোটি টাকার সড়ক

সংস্কারের মাত্র এক মাসের মাথায় আবারো দেবে গেছে প্রায় ১৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের কুমারখালী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন গোলচত্বর এলাকা। সেখানে চার থেকে পাঁচটি স্থানে প্রায় আধাহাত গভীর ও ২০০ থেকে ৩০০ মিটার দৈর্ঘ্যরে সরু নালা সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে সড়কটি নির্মাণের পর একই স্থানে অন্তত ৮ থেকে ১০ বার সংস্কার ও দেবে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। উল্টে যাওয়ার উপক্রম হচ্ছে যানবাহনগুলো। হোচট খেয়ে ছিটকে পড়ছেন পথচারীরা। তবুও প্রয়োজনে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে মানুষ। স্থানীয়দের ভাষ্য, পাকা সড়কের নিচের অংশে নির্মাণকাজে অনিয়ম ছিল। সেখানে কাঁদা জমেছে। সেজন্য বছরে কয়েক বার দেবে যাচ্ছে সড়কের গোলচত্বর এলাকা। এতে স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। স্থায়ীভাবে সড়ক সংস্কারের পাশাপাশি দোষীদের শাস্তির দাবি জানান তারা। গতকাল সকালে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, গোলচত্বও সংলগ্ন পশ্চিম ও উত্তর পাশের চার থেকে পাঁচটি স্থানে সড়ক দেবে কয়েকটি সরু খাল ও ছোট বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। ঝুঁকি নিয়ে চলছে হরেকরকম যানবহন। সেগুলো উল্টে যেকোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। ঝুঁকি এড়াতে অনেক বোঝায় যানবাহন ট্রাফিক আইন ভেঙে উল্টোপথে চলছে। এছাড়া সড়কের টোলপ্লাজা, আলাউদ্দিন নগর, কাজীপাড়া মোড়, মোড়াগাছা এলাকারও কয়েকটি স্থান দেবে গেছে সড়ক। এসময় ইজিবাইক (অটো) চালক টিটু খান বলেন, কয়দিন আগেই সারল (মেরামত করা)। আবারো দেবে খাল হয়ে গেছে। বছরে কয়েকবার এমনভাবে সড়ক দেবে যায়। খুব ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন তারা। তার ভাষ্য, কাজে অনিয়ম থাকায় নিচে গলন (থলথলে কাঁদা) সৃষ্টি হয়েছে। সেজন্য বারবার একই স্থানে দেবে যাচ্ছে। স্থানীয়রা বলছেন, অপরিকল্পিতভাবে সংস্কারের কারণে বারবার দেবে যাচ্ছে সড়ক। নষ্ট হচ্ছে টাকা। সেখানে প্রায় ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। দুর্ঘটনা ও ঝুঁকি কমাতে

স্থয়ী সমাধানের দাবি জানান তিনি। গোলচত্বর এলাকার মুদি দোকানি সুভাষ চন্দ্র বলেন, প্রতিদিনই দুর্ঘটনা ঘটছে। বারবার দোকান ফেলে ছুটে যান তিনি। কখন যেন দোকানের ভিতরে গাড়ি চলে আসে এই ভয়ে থাকেন তিনি। কুষ্টিয়া সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগ ও স্থানীয়য়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় ১৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই আঞ্চলিক মহাসড়কের কাজের ঠিকাদার মেহেরপুরের জহুরুল ইসলাম। ২০১৮ সালে সড়কটির পুনর্নির্মাণ করা হয়েছিল।

সড়কটি দেবে গেলে ২০২০ সালের জুনমাসে প্রথম সংস্কারকাজ শেষ করে ঠিকাদার। সড়ক সংস্কারে কয়েক মাস মাস পরই গোলচত্বর এলাকায় ক্ষত সৃষ্টি হয়। এরপর ২০২১ সালে জুন মাসে দেবে যাওয়া অংশ সংস্কার করা হয়। বছর পার না হতেই ২০২২ সালে কয়েকবার একই স্থানে আবার সরু খাল ও গর্ত সৃষ্টি হলে তা সংস্কার করে সওজ বিভাগ। গত ৪ মে সর্বশেষ সংস্কার কাজ করা হয়। বর্তমানেও একই স্থানগুলো দেবে স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। কুমারখালী পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এসএম রফিক বলেন, গোলচত্বর এলাকাটি মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। নির্মাণের পর থেকে প্রায় ৮ থেকে ১০ বার একই স্থানে সড়ক দেবে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তার ভাষ্য, কাজে অনিয়ম থাকায় নিচের অংশে পানি জমে থলথলে কাঁদা জমে গেছে। স্থায়ীভাবে সংস্কারের পাশাপাশি অনিয়মের বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখার দাবি জানান তিনি।

কুষ্টিয়া সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ সেলিম আজাদ খাঁন বলেন, কাজে কোনো অনিয়ম নেই। মহাসড়কে অবৈধভাবে স্থানীয়দের উদ্যোগে স্প্রিডব্রেকার দেয়া হয়েছে। সেখানে অতিরিক্ত বোঝায় যানবাহনগুলো হার্ডব্রেক করছে। আর এতেই বারবার সড়ক দেবে যাচ্ছে আবার সংস্কার করা হচ্ছে। তার ভাষ্য, তিনি সড়কের দেবে যাওয়া স্থানগুলো পরিদর্শন করেছেন। ঠিকাদার নিয়োগের মাধ্যমে খুব দ্রুতই স্থয়ীভাবে সমস্যার সমাধান করবেন তিনি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত