পেরিয়ে গেছে ৯ বছর

তবুও বাস্তবায়ন হয়নি রংপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ

প্রকাশ : ১০ জুন ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আব্দুর রহমান মিন্টু, রংপুর

পরিকল্পিত, আধুনিক, তথ্যপ্রযুক্তি, স্মার্ট, আগামী প্রজন্মের বসবাসযোগ্য, উন্নত নাগরিক সুবিধা, পরিবেশবান্ধব, সুশৃঙ্খল নগরায়ণ বাস্তবায়নে রংপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বাস্তবায়ন হয়নি। রংপুর বিভাগ হয়েছে ২০১০ সালে। রংপুর সিটি করপোরেশন ২০১২ গঠিত হয়। রংপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বাস্তবায়নের ৯ বছর পেরিয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত রংপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বাস্তবায়ন হয়নি। ৯ বছর আগে মন্ত্রিপরিষদে রংপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠনের অনুমোদন দিলেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় ওই ফাইল লাল ফিতায় বন্দি হয়ে রয়েছে। ফলে রংপুর নগরীকে ঘিরে কোনো মাস্টার প্লান তৈরি করা এখন পর্যন্ত সম্ভব হয়নি। জানা গেছে, ২০১৪ সালের ৮ জুন রংপুর, সিলেট ও বরিশাল বিভাগে নতুন করে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠনের অনুমোদন দেয় প্রশাসনিক উন্নয়ন-সংক্রান্ত সচিব কমিটি। সে সময় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে মতামতের আলোকে টেকনিক্যাল কমিটি কর্তৃক যাচাই-বাছাইয়ের পর প্রস্তাবিত রংপুরসহ তিনটি কর্তৃপক্ষের আইনের খসড়া প্রণয়ন করা হয়। পুরোনো রংপুর জেলা বিভাগে উন্নীত হওয়ার ফলে ক্রমবর্ধমান হারে নগরায়ণ সৃষ্টি হচ্ছে। বিভাগীয় শহরের আওতাধীন অনেক স্থানই আকর্ষণীয় ট্যুরিস্ট স্পট গড়ে তোলার অনুকূল অবস্থা বিদ্যমান রয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাকে সামনে রেখে রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলার দর্শনীয় স্থান সংরক্ষণ পরিকল্পিতভাবে উন্নয়নের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি বলে উল্লেখ করা হয় প্রস্তাবে। রংপুর জেলা শহর এবং সংলগ্ন এলাকায় ব্যাপক এবং অপরিকল্পিত উন্নয়ন নানাবিধ সমস্যা সৃষ্টি করছে। পরিবেশ-সংকটপূর্ণ এলাকায় আবাসিক ও বাণিজ্যক প্রকল্প বাস্তবায়ন, অপরিকল্পিতভাবে হোটেল, আবাসিক হোটেল, মোটেল, অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণ, বহুতল ভবন নির্মাণ ইত্যাদি এ সমস্যার মূল কারণ বলে সে সময় প্রকল্পের সার-সংক্ষেপে বলা হয়। সে সময় সার-সংক্ষেপে আরও বলা হয়, বেসরকারি পর্যায়ে নির্মিত ভবনের নকশা অনুমোদনসহ অন্যান্য ছাড়পত্র প্রদান করা হচ্ছে। অথচ বহুতল বিশিষ্ট ইমারত বা নগরীর সৌন্দর্য রক্ষা করে বিকাশের কোনো ধারণা বা কারিগরি অভিজ্ঞতা সম্পন্ন জনবল নেই। তাই জাতীয় স্বার্থে রংপুর, সিলেট ও বরিশাল এলাকার ভবিষ্যৎ উন্নয়নকে যুক্তিসঙ্গতভাবে পরিচালনা করার প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে তিন বিভাগে পরিকল্পিত উন্নয়নের জন্য উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠন করা প্রয়োজন মনে করে মন্ত্রিপরিষদ। আধুনিক ও পরিকল্পিত নগরী হিসেবে উন্নয়ন ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের স্বার্থে রংপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠন করা অপরিহার্য।

মন্ত্রিপরিষদের অনুমোদনের পরেও রংপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠনের বিষয়টি রয়ে গেছে উপেক্ষিত। ফলে উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত করার বিষয়টি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। অথচ রংপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বাস্তবায়ন হলে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণের মধ্য দিয়ে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নের পথ সহজেই প্রসারিত করা সম্ভব বলে মনে করছেন স্থানীয় সুধী মহল। সেই সঙ্গে আর্থসামাজিক অবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন ঘটত। ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাকে সামনে রেখে রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলার দর্শনীয় স্থান সংরক্ষণ, পরিকল্পিতভাবে উন্নয়নের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। রংপুর জেলা আওয়ামী লীগ আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এরশাদুল হক রঞ্জু পরিকল্পিত,আধুনিক, তথ্যপ্রযুক্তি, স্মার্ট, আগামী প্রজন্মের বসবাস যোগ্য, উন্নত নাগরিক সুবিধা, পরিবেশবান্ধব, সুশৃঙ্খল নগরায়ণ বাস্তবায়নে রংপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ; দ্রুত বাস্তবায়ন রংপুরের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্রুত আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

জেলা সুজনের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন বলেন, পরিকল্পিত নগরী গড়তে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কোনো বিকল্প নেই। তাই আমলাতান্ত্রিক জটিলতা নিরসন করে দ্রুত রংপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বাস্তবায়ন জরুরি। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি। রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা জানান, রংপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ৯ বছর আগে মন্ত্রিপরিষদ অনুমোদন দিয়েছে। অথচ দীর্ঘদিনেও এটি বাস্তবায়ন হয়নি, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। রংপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এবং নগরীকে ঘিরে কোনো মাস্টার প্লান না থাকায় অপরিকল্পিত নগরায়ণ বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না। এ বিষয়ে সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া জরুরি।