সুসংবাদ প্রতিদিন
এক চারায় দুইবার ধান
প্রকাশ : ১৪ জুন ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আলোকিত ডেস্ক
এক চারা লাগিয়ে দুইবার ধান পাওয়ার কথা কখনো শুনেছেন? অবাক করার মতো হলেও এমনই ঘটনা ঘটেছে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে। সেখানে জমিতে ধানের চারা লাগিয়ে প্রথম পর্যায়ে ধান কাটার কয়েক দিনের মধ্যে সেই চারা থেকে দ্বিতীয়বার ফসল ফলিয়ে এলাকায় তাক লাগিয়ে দিয়েছেন স্থানীয় কয়েকজন চাষি।
সরেজমিনে দেখা যায়, কৃষক আ. সাহেদ শ্রমিক নিয়ে ক্ষেতে ধান কাটছেন। তিনি সাড়ে ৪ বিঘা জমিতে ইরি-বোরো চারা রোপণ করেন এবং গত মে মাসের শুরুতে প্রথম পর্যায়ে ফসল কেটে ঘরে তোলেন। এর ৮ থেকে ১০ দিনের মধ্যে জমিতে ধানের নাড়া (শিকড়সহ অবশিষ্ট অংশ) থেকে পুনরায় নতুন গাছ গজিয়ে ধানক্ষেতগুলো সবুজে ভরে যায়। ওই কৃষকদের ধানের নাড়াগুলো নষ্ট না করে রেটুন পদ্ধতিতে সামান্য ইউরিয়া ও টিএসপি সার ছিটিয়ে নতুন গজিয়ে ওঠা ধান গাছের পরিচর্যা করার পরামর্শ দিয়েছে স্থানীয় কৃষি অফিস। এতে নতুন করে ধানের শীষ বেড়িয়ে একপর্যায়ে তা পরিপক্ক হয়। পরে ওই ক্ষেত থেকে দ্বিতীয় দফায় ফসল কেটেছেন তারা। একজন কৃষি উদ্দোক্তা আকিল উদ্দিন জানান, আমার এলাকার কৃষক মিনু মিয়ার ক্ষেতে এমন ধান উৎপাদন হয়। তাই আমিও এ বছর এ পদ্ধতিতে ধান উৎপাদন করি। প্রথম পর্যায়ে ধান কাটার পর কয়েক দিনের মধ্যেই ধানের চারা গজিয়ে ক্ষেতে ধানের শীষ বের হয়। তারপর ধীরে ধীরে ধান পাকতে শুরু করে। ওই ধানক্ষেতে কোনো রকম সার বা কীটনাশক কিছুই প্রয়োগ করিনি। তবে যেন তেন ধানে এরকম উৎপাদন হয় না। কেবলমাত্র হাইব্রিড তেজ গোল্ড, ছক্কা, ঝলক, ধানীগোল্ড ধানে দ্বিতীয়বার ধান উৎপাদন করা সম্ভব। দ্বিতীয় পর্যায়ে আমার প্রতি একর জমি থেকে ১৪ থেকে ১৫ মন হিসেবে সাড়ে চার একর জমি থেকে আনুমানিক ৭০ মণ ধান ঘরে তুলতে পারব বলে আশা করছি। ঢেকিয়া গ্রামের কৃষক মিনু মিয়া জানান, গত বছর আমার ২ একর জমিতে এ পদ্ধতিতে ধান উৎপাদন করি, এতে অধিক ফলন হয়েছিল। তাই এ বছর চার একর জমিতে এ পদ্ধতিতে ধান চাষ করি। আমার ক্ষেতের ধান দেখে অনেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে এ পদ্ধতিতে চাষাবাদ শুরু করেছে। স্থানীয় কৃষক আফাজ বলেন, এই পদ্ধতিতে একই জমি থেকে দুবার ফসল উৎপাদনের বিষয়ে আমার তেমন কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না। আগামীতে আমিও এই পদ্ধতিতে দ্বিতীয় পর্যায়ে ফসল উৎপাদন করব। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাহজাহান কবির বলেন, এটি একটি আধুনিক পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে একবার ধান বীজ রোপণ করে দুবার ফসল উৎপাদন করতে পারবেন। এতে কৃষক দ্বিগুণ ধান ও খড় পাবেন। ফলে তারা আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।