নাম নেই তালিকায়
মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিলেও জীবন যুদ্ধে পরাজিত আব্দুর রশিদ
প্রকাশ : ১৫ জুন ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
স্টাফ রিপোর্টার, সিরাজগঞ্জ
জীবন বাজি রেখে মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রীয়ভাবে অংশ নিয়ে দেশ স্বাধীন করলেও মুক্তিযোদ্ধার আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পাননি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদ সরকার (৬৮)। দেশ স্বাধীনের ৫২ বছর পেরিয়ে গেলেও মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম না থাকায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন ওই বীর মুক্তিযোদ্ধা। তার আকুতি প্রধানমন্ত্রী যদি একটু সুদৃষ্টি দেন তাহলে জীবনের শেষ বয়সে তার নামটা মুক্তিযোদ্ধার তালিকাভুক্ত হবে এবং মৃত্যুর আগে নিজেকে শান্ত¡না দিতে পারবেন জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান হিসেবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জেলার কাজিপুর উপজেলার দোয়েল গ্রামের আব্দুর রশিদ সরকার মহান মুক্তিযুদ্ধে বেসরকারি সাব সেক্টর এবং মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পলাশডাঙ্গা যুব শিবির থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। তিনি কাজিপুর ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বিভিন্ন রণাঙ্গনে অংশ নিয়ে পাকসেনাদের প্রতিহত ও পরাস্ত করেন। স্বীকৃতি হিসেবে পলাশডাঙ্গা যুব শিবির পরিচালক প্রয়াত সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিফ মির্জা কর্তৃক সনদপ্রাপ্ত হন তিনি। শুধু তাই নয়, দেশরক্ষা বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ আতাউল গণি ওসমানী কর্তৃক স্বাধীনতা সংগ্রামের সনদ ও যুদ্ধকালীন কমান্ডার আমির হোসেন ভুলু কর্তৃক সনদপ্রাপ্ত হন তিনি। তিনি মহকুমা প্রশাসকের নিকট অস্ত্র জমা দেন। কিন্তু এখনো মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার নাম তালিকাভুক্ত হয়নি। নিজের নাম তালিকাভুক্ত করতে ২০১৭ সাল থেকে একাধিকবার জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল বরাবর আবেদন করেন। কিন্তু যাচাই-বাছাই কমিটি তার আবেদন বাতিলের তালিকাভুক্ত করায় তিনি আজো মুক্তিযোদ্ধার আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি অর্জন করতে পারেননি। আর সেজন্যই তার ভাগ্যে মিলছে না কোনো প্রকার রাষ্ট্রীয় সহযোগিতা। একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হয়েও কেন নাম তালিকাতে নেই এমন প্রশ্ন করতেই আব্দুর রশিদ সরকার কান্নাজড়িত কণ্ঠে সাংবাদিকদের বলেন, নিজের জীবন বাজী রেখে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে দেশের জন্য যুদ্ধ করেছি। কিন্তু এখনো মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় আমার নাম নেই। নিজের সন্তানদের কাছে পরিচয়ও দিতে পারি না আমি মুক্তিযুদ্ধ করেছি। যুদ্ধকালীন ব্যাটালিয়ন কমান্ডার থেকে শুরু করে সর্বশেষ স্থানীয় সংসদ সদস্য প্রত্যয়ন প্রদান করলেও ৭নং সেক্টরের একজন মুক্তিযোদ্ধা হতে পারিনি। এজন্য সরকারপ্রধানের নিকট আবেদন আমার যুদ্ধকালীন সময়ের সব প্রমাণপত্র যাচাই করে দ্রুত মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করা হোক। এদিকে পরিবার-পরিজন নিয়ে তিনি মানেবতর জীবনযাপন করছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া এই বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত এবং রাষ্ট্রীয় সব সুবিধা প্রদানে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তার পরিবার ও এলাকাবাসী।