ময়মনসিংহ নগরীর সাহেব আলী সড়কের ওপর নির্মাণাধীন প্রগতি টাওয়ারের ২০তলা ভবনের ছাদ থেকে পড়ে শ্রমিক নিহতের ঘটনায় নানা রহস্য দানা বেঁধেছে। অভিযোগ উঠেছে- নির্মাণাধীন ওই ভবনটির ২০তলার অনুমোদন নেই। ফলে বিল্ডিং কোড না মেনে নির্মাণাধীন এই ভবনটি নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে।
এই অবস্থায় ভবন মালিক সিন্ডিকেট ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে বলেও দাবি স্থানীয় সূত্রের। ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের নগর পরিকল্পনাবিদ মানস বিশ্বাস বলেন, সিটি কর্পোরেশন ঘোষণার আগে ২০১৭ সালের মার্চ মাসের দিকে তৎকালীন পৌরসভা থেকে এই ভবনের অনুমোদন নিয়েছিল মালিক পক্ষ। তবে এ সংক্রান্ত নথি না দেখে আমি নিশ্চিতভাবে কিছু বলতে পারছি না। কোনো পৌরসভা ২০তলা ভবনের অনুমোদন দিতে পারে কি না বা নির্মাণাধীন এই ভবনে বিল্ডিং কোড মানা হয়েছে কি না- জানতে চাইলে এই নগর পরিকল্পনাবিদ আরো বলেন, সড়কের ওপরে নির্মাণাধীন ভবনটিতে সঠিকভাবে বিল্ডিং কোড বা বিধিমালা মানা হয়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। জানতে চাইলে প্রগতি টাওয়ারের বর্তমান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মাহাবুবুর রহমান ওই ভবনে নিজের মালিকানা পরিচয় এড়িয়ে যান। তিনি বলেন, গত দুই বছর আগে আমি এই জমিটি বিক্রি করে দিয়েছি। শুনেছি ক্রেতাপক্ষ পৌরসভা থেকে ২০তলার অনুমোদন নিয়েছে। কিন্তু তারা কীভাবে এই অনুমোদন পেয়েছে, তা আমার জানা নেই। সচেতন মহলের প্রশ্ন- দুই বছর আগে জমিটি ক্রয় করা হলে বর্তমান মালিকপক্ষ ২০১৭ সালে পৌরসভা থেকে ২০তলা ভবন নির্মাণের অনুমোদন পেল কীভাবে? ভবনের নিরাপত্তা কর্মী মো. শহীদুল্লাহ জানান, ভূমি কর্মকর্তা (নায়েব), শিক্ষকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মোট ১২ জন মালিক মিলে ৩৩ শতাংশ ভূমির ওপর এই ভবন নির্মাণ করছেন। তারাই এ বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারবেন। তবে বর্তমানে মালিক সিন্ডিকেট পক্ষ ফ্ল্যাট বিক্রি করার জন্য এই ভবনের মালিকানা ১৭০টি ভাগে বণ্টন করেছেন বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র। এ বিষয়ে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ বলেন, গত ১১ জুন সকালে ওই ভবনের ছাদ থেকে পড়ে শিমুল মিয়া (৩৫) নামের এক নির্মাণ শ্রমিক মারা যান। সে জামালপুর সদর উপজেলার মধ্য বটতলা গ্রামের মো. রফিকুল ইসলামের ছেলে। তবে ভবন নীতিমালা বা বিল্ডিং কোড বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলতে পারবেন। এই বিষয়টি আমার নয়।