কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের ঘটনার সত্যতা পায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটি। তদন্ত কমিটি সাক্ষ্য গ্রহণকালে সাক্ষীদের নিরাপত্তা ও তাদের নামণ্ডপরিচয় গোপন রাখা হবে বলে জানান। এ শর্তে তারা সাক্ষ্য দেন তদন্ত কমিটির কাছে। জানা যায়, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলগালা তদন্ত প্রতিবেদন ফাঁস হয়ে অভিযুক্তদের কাছে পৌঁছেছে সেই কপি। তদন্ত প্রতিবেদনে ছাত্রলীগ নেত্রী অন্তরা কর্তৃক ভুক্তভোগীকে নির্যাতনের হুকুমদাতা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অভিযুক্ত অন্য চারজন তার কথামতো ভুক্তভোগীকে নির্যাতন করেন।
৮ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে সাক্ষ্যদানকারী ১২ ছাত্রীর নাম রয়েছে। এতে সাক্ষ্য প্রদানকারী ছাত্রীরা চরম নিরাপত্তা শঙ্কায় রয়েছেন বলে জানান একাধিক সাক্ষ্য দানকারী ছাত্রী। উচ্চ আদালত থেকে সাক্ষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষার নির্দেশনা থাকলেও কীভাবে কপি প্রকাশ্যে এলো তা নিয়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষের অসতর্কতার কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করছেন অনেকেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সাক্ষীদানকারী ছাত্রী বলেন, আমরা তদন্ত কমিটির কাছে জাস্ট সত্যটা তুলে ধরেছি। বলা হয়েছিল আমাদের নাম কোনোভাবে প্রকাশ করা হবে না। কিন্তু এভাবে সাক্ষীদের নাম প্রকাশ করলে ভবিষ্যতে চোখের সামনে কোনো অন্যায় ঘটলেও প্রত্যক্ষদর্শীরা সাক্ষ্য দিতে সাহস করবে না। এখন আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
এদিকে তদন্ত প্রতিবেদন ফাঁস হওয়ার বিষয়টি নজরে আনেন অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরা নিজেই। তিনি তদন্ত প্রতিবেদনের একটি পৃষ্ঠা নিজস্ব ফেইসবুকে আইডিতে শেয়ার করলে বিষয়টি সবার সামনে আসে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবেদনের কপি সরবরাহ না করলেও অভিযুক্তরা হাইকোর্ট থেকে সংগ্রহ করেছে বলে জানা যায়।
অভিযুক্ত সাময়িক বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরা বলেন, আমি আদালত থেকে একটি মাধ্যমে প্রতিবেদনের কপি সংগ্রহ করেছি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পৃষ্ঠা দিয়েছি, সেখানে কারো নাম ছিল না। তবে তথ্য পেলেও আমি কাউকে ক্ষতি করিনি। আর করবও না।
তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব উপ-রেজিস্ট্রার আলীবদ্দীন খান বলেন, আমাদের এখান থেকে তদন্ত প্রতিবেদন ফাঁস হওয়ার সুযোগ নেই। তবে বিষয়টি নিয়মের মধ্যে থেকে হয়নি। বিভিন্ন জায়গায় তদন্ত প্রতিবেদন ছড়িয়ে পরাটাও দুঃখজনক। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ থেকে এম আলী হাসান বলেন, তদন্ত কমিটি আমার কাছে দুই কপি সিলগালা প্রতিবেদন জমা দেন। এক কপি হাইকোর্টে পাঠিয়েছি। আরেক কপি আমার অফিসে সিলগালা অবস্থায় এখনও আছে। সাক্ষীদের নিরাপত্তার বিষয় দুই জেলার পুলিশ প্রশাসন ও প্রক্টরিয়াল বডি দেখবে।