ঢাকা ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আড়াই মাসের সাংসদ হতে ডজন প্রার্থীর দৌড়ঝাঁপ

আড়াই মাসের সাংসদ হতে ডজন প্রার্থীর দৌড়ঝাঁপ

চার মাসের ব্যবধানে চট্টগ্রামের দু’জন সংসদ সদস্য ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন। সর্বশেষ মারা যান জনপ্রিয় আওয়ামী লীগ নেতা চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং, পাহাড়তলী ও হালিশহর) আসনের সংসদ সদস্য ডা.আফছারুল আমিন। তার শূন্য আসনে আগামী ৩০ জুলাই উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশন এরই মধ্যে এই আসনের নির্বাচনের জন্য তফশিল ঘোষণা করেছেন। দলীয় সূত্র জানায়, জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত হবে। নতুন নির্বাচিত সংসদ সদস্য দায়িত্ব পালন করতে পারবেন সর্বোচ্চ আড়াই মাস। আড়াই মাসের সংসদ সদস্য হতে থেমে নেই দলের সম্ভাব্য প্রার্থীদের দৌড়। সেই নামের তালিকায় সম্ভাব্য কারা হতে পারেন তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা কল্পনা। নামের খাতায় যুক্ত হতে অনেকে এখনই দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন বলে জানা গেছে। এর মধ্যে আছেন দলের সিনিয়র, হেভিওয়েট ও ত্যাগী নেতারা। তবে কেউ আগাম নিশ্চিত হতে পারছে না, কে পাবেন দলের মনোনয়ন। চট্টগ্রাম-৮ আসনে দলের প্রার্থী মনোনয়ন অনেকের ধারনা পাল্টে দিয়েছিল। তাই দলের নেতাকর্মীরা মনে করছেন চট্টগ্রাম-১০ আসনেও হয়তো পুরোনোদের বদলে আসতে পারে নতুন মুখ।

বর্তমানে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে আলোচনায় আছেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। তিনি দলের প্রয়োজনে দিনভর ব্যস্ত থাকেন সাংগঠনিক তৎপরতায়। দলের জন্য মাঠেঘাটে চষে বেড়ান এমন নেতা মনে করেন সাধারণ কর্মীরা। তবে দলীয় সূত্র জানায়, তিনি ওই আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী। কিন্তু সরাসরি মনোনয়ন চাইবেন না। সেই ক্ষেত্রে দলের হাই কমান্ডের নির্দেশনার জন্য অপেক্ষা করবেন। অর্থাৎ হাইকমান্ডের নির্দেশনা পেলেই কেবল তিনি প্রার্থী হওয়ার জন্য মনোনয়ন চাইবেন। সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে নগর আওয়ামী লীগেরসহ সভাপতি সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, সাবেক সিটি মেয়র এম মনজুর আলম, নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক চসিক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন, নগর আওয়ামী লীগে নেতা এমএ ছালাম, প্রয়াত সাংসদের ছোট ভাই এরশাদুল আমিনের নামও শোনা যাচ্ছে। প্রার্থী আলোচনায় আরো রয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা ফরিদ মাহমুদ, আওয়ামী লীগ নেতা মহিউদ্দিন বাচ্চু, প্রয়াত ডা. আফছারুল আমীনের ছেলে ফয়সাল আমীনও। আওয়ামী যুবলীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মাহমুদুল হকও রয়েছেন আলোচনায়।

দলের কয়েকজন সিনিয়র নেতার সাথে কথা বলে জানা গেছে, এবার হেভিয়েট নেতাদের পাশাপাশি পুরোনো ত্যাগী নেতারাও প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করতে মনোনয়ন পাবেন। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন আসনে উপনির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের বাইরে দলের তৃণমূল রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ত্যাগী নেতারাই মনোনয়ন পেয়েছেন। চট্টগ্রাম-৮ আসনেও মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন নোমান আল মাহমুদ। যদিও মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ার আগেও অনেক হেভিওয়েট প্রার্থীর নাম আলোচনায় ছিল। শেষ পর্যন্ত তিনিই মনোনয়ন পান দলের। তাই দলের নেতাকর্মীরা মনে করছেন চট্টগ্রাম-১০ আসনেও হেভিয়েট প্রার্থীদের বাইরে তৃণমূল রাজনীতির সঙ্গে জড়িত কোনো ত্যাগী নেতা মনোনয়ন পেতে পারেন।

প্রসঙ্গত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৮, ১১, ১২, ১৩, ১৪, ২৪, ২৫ ও ২৬ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে চট্টগ্রাম-১০ আসন। ১৯৯১ সালের পর বিএনপির প্রার্থীরা তিনবার এই আসনে বিজয়ী হয়েছেন। এক সময় এই আসন ছিল বিএনপির ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত। পরে গত তিনটি সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ডা. আফছারুল আমীন এই আসনে টানা তিনবার বিজয়ী হয়েছিলেন। তার মৃত্যুতে আসনটি শূন্য হওয়ায় আগামী ৩০ জুলাই এ আসনের উপনির্বাচনের ভোট গ্রহণের তারিখ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ৪ জুলাই, মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ৬ জুলাই, আপিল দায়ের করা যাবে ৭ থেকে ৯ জুলাই পর্যন্ত আপিল নিষ্পত্তি হবে ১০ থেকে ১১ জুলাই, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১২ জুলাই এবং প্রতীক বরাদ্দ হবে ১৩ জুলাই। সব কেন্দ্রে ভোট নেয়া হবে ইভিএম ব্যবহার করে। ভোটকেন্দ্র্রে স্থাপন করা হবে সিসিটিভি ক্যামেরা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত