সুসংবাদ প্রতিদিন
সোনালি আঁশ ঘিরে চাষিদের স্বপ্ন
প্রকাশ : ১৮ জুন ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আলোকিত ডেস্ক
যশোরের শার্শায় অনুকূল পরিবেশে আশানুরূপ লাভজনক হওয়ায় চলতি বছর বেড়েছে সোনালি আঁশ খ্যাত ফসল পাট চাষ। এ চাষকে ঘিরে স্থানীয় কৃষক আগামীর সোনালি আঁশে এরই মধ্যে রঙিন স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন। অন্য ফসলের চেয়ে তুলনামূলক কম খরচ, উৎপাদন ভালো, লাভজনক, স্থানীয়ভাবে সহজলভ্য ও সরাসরি পাইকারি বাজার সৃষ্টি হওয়ায় পাট চাষে ঝুঁকেছেন কৃষক। এছাড়া নিয়মিত কৃষি বিভাগ থেকে উদ্বুদ্ধকরণ, পরার্মশ প্রদান, সরকারি সহায়তার ফলে চাষিদের মধ্যে আগ্রহ বেড়েছে। সব মিলিয়ে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ায় প্রতি মৌসুমে বাড়ছে পাট চাষ। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর শার্শা উপজেলায় ৫৪৬০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর ১০ হেক্টর বেশি জমিতে চাষ হয়েছে। পাটের জাতের মধ্যে আছে ইন্ডিয়ান কৃষি সেবাইন ১৩৫২৪, শঙ্খ ৯৮৯৭, দেশি রবি ১ এবং তোষা ৮। পাট কাটার সময় আষাঢ় মাসের শেষ পর্যন্ত। চাষিরা জমি প্রস্তুত করে বা বিনা চাষে ধানের জমিতে ছিটিয়ে পাট চাষ করেছেন। চাষ করা পাট বীজ বোনার ১২০ এবং ধানের জমিতে ছিটিয়ে বোনার ১১০ দিনের মধ্যে কাটার উপযোগী হয়। উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের এমন পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। ডিহি ইউনিয়নের দরিদুর্গাপুর গ্রামের কৃষক লাভলু মিয়া, নিজাম উদ্দিন ও জহুরুদ্দিন জানান, কর্মকর্তাদের উৎসাহ ও পরামর্শ অনুযায়ী তারা ২০ বিঘার মতো ধানের জমিতে ছিটিয়ে পাট চাষ করেছেন। আগাম ব্যবস্থা নেয়ায় প্রচণ্ড দাবদাহে পাটে তেমন রোগবালাই দেখা যায়নি। তবে বৃষ্টিহীন পাটক্ষেতে সেচ দিতে কিছুটা সমস্যা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বিঘাপ্রতি ৮-১৬ মণ ফলনের সম্ভাবনা দেখছেন তারা। পাটের দাম ভালো পেলে খরচ বাদ দিয়ে বিঘাপ্রতি ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকার মতো লাভ করতে পারবেন। দরিদুর্গাপুরের আকবার আলি ও গোকর্ণ গ্রামের আলমগীর হোসেন বলেন, ‘পাট চাষ বাড়াতে সরকারি সহায়তা বাড়াতে হবে। বিদেশে রপ্তানির ব্যবস্থা করে দাম বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। প্রতি মণ পাটের দাম একবার ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। গত বছর মান অনুযায়ী ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার ৭০০ টাকা পর্যন্ত পাওয়া গিয়েছিল। দাম বাড়লে পাটের সুদিন ফিরে আসবে।’ নিজামপুর ও ডিহি ইউনিয়নে দায়িত্বরত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা অসিত কুমার মন্ডল এবং আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘পাট চাষে চাষিদের পাশে থেকে ভালো ফলন পেতে সার্বিক পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে।’ শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ কুমার মন্ডল বলেন, ‘চলতি মৌসুমে সরকারি প্রণোদনার ১ কেজি করে পাট বীজ উপজেলার ৪ হাজার ৩০০ কৃষকের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। সার বরাদ্দ না থাকায় দেয়া সম্ভব হয়নি। তবে পাট উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে চাষিদের সহায়তা করা হয়েছে। পাটের বাজার মোটামুটি ভালো। ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত ওঠানামা করছে। যদি রপ্তানি করতে পারি, তাহলে দাম আরো বাড়বে।’