বাংলাদেশের তরুণদের উদ্ভাবনে দেশ পাল্টে যাবে বলে মনে করেন জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের মহাপরিচালক মোহাম্মাদ মুনীর। তিনি বলেন, বিজ্ঞানকে কীভাবে উদ্ভাসিত উজ্জীবিত করতে পারা যায়, সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। দেশের তরুণদের কাজে লাগাতে পারলে বিদেশ থেকে ডলার খরচ করে অনতে হবে না- পরামর্শকদের। তখন দেশের ডলার দেশে থাকবে। গতকাল আগারগাঁওয়ের শেরে বাংলা নগরের বিজ্ঞান জাদুঘরে জাতীয় বিজ্ঞান মেলা উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের মহাপরিচালক একথা বলেন। তিনি বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির জগতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে এ বিজ্ঞান মেলা। বিশেষ করে তরুণ সমাজকে জ্ঞান চর্চায় উদ্বুদ্ধ এবং তাদের উদ্ভাবনী ক্ষমতাকে বিকশিত করার অপূর্ব সুযোগ এ মেলা। তরুণ সমাজকে অশ্লীলতা, মাদকাসক্তি, মোবাইল আসক্তিসহ সব ধরনের সামাজিক অপরাধ থেকে ফিরিয়ে এনে বিজ্ঞান চর্চায় মগ্ন রাখলে তাদের সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ঘটবে এবং উদ্ভাবনের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। প্রযুক্তির উৎকর্ষ দিয়ে খাদ্যে ও ওষুধে ভেজাল, পরিবেশ দূষণ, নৌ ও সড়ক দুর্ঘটনা এবং অগ্নিকাণ্ড ইত্যাদি নানা সমস্যার সমাধান সম্ভব বলেও তিনি উল্লেখ করেন তিনি। মোহাম্মাদ মুনীর আরও বলেন, ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা এবং নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে আজ থেকে শুরু হচ্ছে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের আয়োজনে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ। এ উপলক্ষ্যে সারা দেশ থেকে প্রায় ৭০০ জন প্রতিযোগী এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবে। শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ সহস্রাধিক অতিথির আগমন ঘটবে এ কর্মসূচিতে। এ উপলক্ষ্যে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর ব্যাপক কর্মসূচি নিয়েছে।
যা থাকছে প্রযুক্তি মেলায় : মেলা, অলিম্পিয়াড ও কুইজ প্রতিযোগিতার মধ্যদিয়ে আজ থেকে শুরু হচ্ছে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ। জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের আয়োজনে ৪৪তম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলা উপলক্ষ্যে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বসছে খুদে বিজ্ঞানীদের এই মিলনমেলা। তিন দিনের এই জাতীয় বিজ্ঞান উৎসবে সারাদেশ থেকে অংশ নিচ্ছে প্রায় ৭০০ জন প্রতিযোগী। এবারের উৎসবে তারা তুলে ধরবেন নিজেদের সেরা উদ্ভাবন। এসব উদ্ভাবন নিয়েই হতে যাচ্ছে ৭ম জাতীয় বিজ্ঞান অলিম্পিয়াড ও বিজ্ঞান কুইজ প্রতিযোগিতা। মেলা উপলক্ষ্যে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কমপ্লেক্স ভবনে স্থাপন করা হচ্ছে ১৫৫টি স্টল। স্টলগুলোতে খুদে উদ্ভাবক ও বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবন দেখতে উপস্থিত হবেন শিক্ষক-অভিভাবকসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ। মেধা ও মননের টেকসই প্রয়োগে নিজেদের সমস্যা নিজেরাই খুঁজে নেবে বাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম। এ প্রতিযোগিতার সবচেয়ে বড় আকর্ষণ তরুণ বিজ্ঞনীদের নানা সৃজনশীল বৈজ্ঞানিক প্রকল্প বা মডেল উপস্থাপন। এর মধ্যে থাকছে অগ্নিনির্বাপণ, স্মার্ট কৃষি, সৌর বিদ্যুৎ, বায়ু বিদ্যুৎ, পরিবেশ দূষণরোধ, জলবায়ু পরিবর্তন, রোবটিক্স, সবুজ নগরায়ন, চিকিৎসাব্যবস্থাসহ অসংখ্য মডেল। আগামী ২১ জুন পুরস্কার প্রদান ও সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান।