পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গের তকমা রয়েছে মাউন্ট এভারেস্টের। এবার নতুন করে সুবিশাল এক পর্বতমালার হদিস পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। কোথায় এ প্রকাণ্ড পর্বত শ্রেণির খোঁজ পেলেন বিজ্ঞানীরা? ভূগর্ভের কেন্দ্রমণ্ডল ও গুরুমণ্ডলের মাঝে ওই পর্বত অবস্থান করছে বলে জানা গেছে। এভারেস্টের চেয়ে এই পাহাড়ের উচ্চতা অন্তত চার থেকে পাঁচ গুণ বেশ বলে দাবি করেছেন গবেষকরা। সম্প্রতি ভূগর্ভের বিষয়ে গবেষণা চালায় যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি দল। ভূমিকম্প ও পরীক্ষামূলক পারমাণবিক বিস্ফোরণের জেরে তৈরি হওয়া তরঙ্গের সেসমিক ডেটা বিশ্লেষণ করেন তারা। তখনই সুবিশাল ওই পর্বতমালার অস্তিত্বের কথা জানতে পারেন বিজ্ঞানীরা। এই কাজে অ্যান্টার্কটিকার সেসমোলজি সেন্টারের সাহায্য পেয়েছিলেন তারা। উল্লেখ্য, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে মাউন্ট এভারেস্টের উচ্চতা ৮ হাজার ৮৪৮ মিটার। ভূবিজ্ঞানীদের দাবি, ভূগর্ভে লুকিয়ে থাকা ওই পর্বতমালার সর্বোচ্চ শৃঙ্গের উচ্চতা প্রায় ৩৮ কিলোমিটার। অ্যারিজোনা স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূপদার্থবিদ অ্যাডওয়ার্ড গারনেরো বলেন, অ্যান্টার্কটিকা থেকে পাওয়া হাজার হাজার সেসমিক রেকর্ড বিশ্লেষণ করা হয়েছিল। হাইডেফিনিশন ইমেজিং পদ্ধতির মাধ্যমে ওই বিশ্লেষণের সময় ব্যতিক্রমী উপাদানের খোঁজ মিলেছিল। একেক জায়গায় উপাদানগুলো একেক রকম পুরু। কোথাও কয়েক কিলোমিটার, কোথাও অনেক বেশি। এটা যে পৃথিবীর গর্ভে থাকা একটা পর্বত, তখনই বুঝতে পারি আমরা। কীভাবে ভূগর্ভের ওই অংশ পর্বত গড়ে উঠল? বিজ্ঞানীদের অনুমান, সম্ভবত প্রাচীনকালে টেকটনিক প্লেট গুরুমণ্ডলের ভেতরে ঢুকে গিয়েছিল। পরবর্তীকালে ওই প্লেট গুরুমণ্ডল ও কেন্দ্রমণ্ডলের মাঝে বিস্তৃত হয়ে যায়। এর ফলে এই পর্বত গজিয়ে ওঠে বলে মনে করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, ভূপদার্থবিদের আরও দাবি, সুবিশাল ওই পর্বতমালায় রয়েছে ব্যাসল্ট পাথর। আবার প্রস্তরীভূত শিলাও সেখানে পাওয়া যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। অ্যারিজোনার গবেষকদের দলে ছিলেন আলাবামা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামান্থা হ্যানসেন। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সেসমিক তথ্য বিষণে ভূগর্ভের ভেতরের সর্বোচ্চ রেজলিউশনের ছবি ধরা পড়েছে। ওই পাহাড়টিকে নিয়ে যেরকম কল্পনা করা হচ্ছে, বাস্তবে সেটি আরও অনেক বেশি বড়। ১৯৫২ সালে প্রথমবার এভারেস্টের বুকে পা রাখে মানুষ। ওই বছর পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ জয় করেন শেরপা তেনজিং নোরগে। তার সঙ্গে ছিলেন পর্বতারোহী এডমন্ড হিলারি।