অন্যরকম

যেখানে হাঙর বাঁচে ৪’শ বছর!

প্রকাশ : ২০ জুন ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

গ্রিনল্যান্ডের হাঙর প্রথম এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধেরও সাক্ষী। কোনো শিল্প-স্থাপত্য কিন্তু নয়, একদম জীবিত প্রাণী। নাম গ্রিনল্যান্ডের হাঙর হলেও শুধু গ্রিনল্যান্ডেই নয়, ক্যারিবিয়ান সাগরেও দিব্যি খেলে বেড়ায় তারা। তবে বরফশীতল সাগর-মহাসাগরের গভীরেই তাদের চলাচল। সূর্যের মুখ দেখতে তারা সাঁতরে উপরে ওঠে না খুব একটা। সাধারণত মাইনাস ১ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় থাকাই তাদের পছন্দ। মানুষের কাছে বহু বছর পর্যন্ত অধরাই ছিল তারা। ১৯৯৫ সালে প্রথমবার এই হাঙরের ছবি তুলতে সক্ষম হন গবেষকরা। তারও ১৮ বছর পর প্রথমবার এই প্রাণীর ভিডিওতে ধরা পড়ে। গ্রিনল্যান্ডের হাঙর যখন পূর্ণবয়স্ক হয়, তখন তাদের আকার হয় সাদা হাঙরের (গ্রেট হোয়াইট) মতো। তবু সাদা হাঙরের সঙ্গে অনেক পার্থক্য রয়েছে গ্রিনল্যান্ডের হাঙরের। এই হাঙরের বৈজ্ঞানিক নাম সমনিওসাস মাইক্রোসেফালাস। কয়েকশ’ বছর বাঁচে এই হাঙর। আর অন্তত দেড়শ’ বছর না হলে সঙ্গম করতে পারে না। এসব হাঙরের পেশিতে থাকে প্রচুর পরিমাণে টক্সিন। তাই এই মাছ খেলে মারাত্মক নেশা হতে পারে। এই মাছ শিকার করে রোদে শুকিয়ে নেয়া হয়। তার পরেই খাওয়া যায়। গ্রিনল্যান্ডের এই হাঙর নিয়ে দীর্ঘ গবেষণা করেছেন ইন্ডিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী পিটার জি বুশনেল।

তিনি জানিয়েছেন, এই পৃথিবীতে যত প্রাণী রয়েছে, তার মধ্যে সম্ভবত সবচেয়ে বেশি বছর বাঁচে গ্রিনল্যান্ডের হাঙর। কত বছর বাঁচে এরা? বুশনেলের দাবি, চারশ’ বছর বা তার বেশি সময়ও বাঁচতে পারে এই হাঙর। কোনো গ্রিনল্যান্ডের হাঙর যদি স্বল্প সময়ও বাঁচে, তা হলেও সেটা ২৭২ বছরের কম নয়। বাওহেড তিমি গড়ে ২১১ বছর বাঁচে। তার থেকেও বেশি বাঁচে গ্রিনল্যান্ডের হাঙর। ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী জর্জ এইচ বার্জেসর এর মতে, যা মনে করা হচ্ছে, তার থেকেও হয়তো বেশি বছর বাঁচে গ্রিনল্যান্ডের হাঙর। বুশনেল গ্রিনল্যান্ডের প্রায় ২৮টি স্ত্রী হাঙরকে নিয়ে পরীক্ষা চালিয়েছেন। তাতে দেখা গেছে, ওই হাঙরগুলির বয়স ২৭২ থেকে ৫১২ বছর। শত শত বছর বেঁচে থাকলেও গ্রিনল্যান্ডের হাঙর; কিন্তু বিপজ্জনক নয়। মানুষকে আক্রমণ করেছে বলে প্রমাণ পাননি গবেষকরা। স্থানীয়রা অনেক সময় দাবি করেন, মাছ ধরার ছোট নৌকা দেখলে হামলা করে তারা। তবে গবেষকরাই এই দাবি মানেননি। তারা জানিয়েছেন, মানুষ আক্রমণ না করলে এই হাঙর হামলা চালায় না। গবেষণায় দেখা গেছে, গ্রিনল্যান্ডের হাঙর খুব ভালো ডুবুরি। ২২০০ মিটার পর্যন্ত গভীরে চলে যায় তারা।