সুসংবাদ প্রতিদিন
গোপালগঞ্জ ও রাজবাড়ীতে তিলের বাম্পার ফলন
প্রকাশ : ২১ জুন ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আলোকিত ডেস্ক
ঔষধি গুণসম্পন্ন উচ্চ ফলনশীল ফসল বিনা তিল। এবার গোপালগঞ্জ ও রাজবাড়ী জেলায় এই ফসলের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) উদ্ভাবিত বিনা তিল-২ চাষ করে দুই জেলার কৃষকরা প্রতি হেক্টরে ১ হাজার ৭০০ কেজি ফলন পেয়েছেন। গোপালগঞ্জ বিনা উপকেন্দ্র অফিস সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে। এ বছর আবহাওয়া তিল চাষের অনুকূলে ছিল। ক্ষেতে পোকা মাকড়ের আক্রমণ হয়নি। এ কারণে তিলের বাম্পার ফলন হয়েছে। ঔষধি গুণসম্পন্ন এই তিলের তেল হৃদরোগ, চর্মরোগ প্রতিরোধী ও চুলের যত্নে অতুলনীয়। এই জাতের তিলের চাষ বৃদ্ধি করে ভোজ্য তেলের আমদানি-নির্ভরতা কমানো সম্ভব। এছাড়া তিলের ফলন দেখে লাভজনক এ তিল চাষে দুই জেলার কৃষকরা আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। গোপালগঞ্জ বিনা উপকেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সৌরভ অধিকারী জানিয়েছেন, চলতি মৌসুমে গোপালগঞ্জ ও রাজবাড়ী জেলার ৫০ বিঘা জমিতে বিনা তিল-২ এর ৫০টি প্রদর্শনী প্লট করেন ৫০ জন কৃষক। বিনা উপকেন্দ্র থেকে কৃষককে বিনামূল্যে বীজ, সার, ছাত্রাক নাশক প্রদান করা হয়। পাশাপাশি বিনা উপকেন্দ্রের বিজ্ঞানী ও বৈজ্ঞানিক সহকারীরা দুই জেলার কৃষককে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছেন। বিনা উপকেন্দ্রের পরামর্শে বিনা তিলের আবাদ করে কৃষকেরা হেক্টরে এই তিলের ১ দশমিক ৭ টন ফলন পেয়েছেন। গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার ফুকরা গ্রামের কৃষক মো. রফিক সিকদার বলেন, এই বছর বিনা উপকেন্দ্র থেকে বিনামূল্যে বীজ, সার, ছত্রাক নাশক পেয়ে পতিত জমিতে প্রথম বিনা তিল-২ চাষ করি। গোপালগঞ্জ জেলার একই গ্রামর কৃষক আরাফাত সরদার বলেন, এ তিল ৯০ দিনে ক্ষেত থেকে কেটেছি। এখন অন্য ফসল চাষ করতে পারছি। ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি ও কৃষকের উন্নয়নে উচ্চ ফলনশীল ফসলের জাত সম্প্রসারণে বিনা কাজ করে যাবে বলে আমি প্রত্যাশা করি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাফরোজা আক্তার বলেন, ঔষধি গুণসম্পান্ন এ তিলের তেল হৃদরোগ, চর্মরোগ প্রতিরোধী ও চুলের যত্নে অতুলনীয়। এ জাতের তিলে ৪৫ ভাগ তেল পাওয়া যায়। লাভজনক এ তিলের চাষ বৃদ্ধি করে ভোজ্য তেলের আমদানি-নির্ভরতা কমানো সম্ভব। বিনা’র মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম বলেন, সরকার ভোজ্য তেলের আমদানি-নির্ভরতা কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে। সেই লক্ষ্যে আমরা ভোজ্য তেল চাষাবাদ বৃদ্ধির জন্য কাজ করছি। গত সরিষা মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি সরিষা উৎপাদিত হয়েছে। তেল ফসলের মধ্যে তিল একটি অন্যতম ফসল। বিনা-২ জাতের তিলে প্রচুর তেল পাওয়া যায়। এটির চাষাবাদ সম্প্রসারণ করতে পারলে দেশে তেলে আমদানি নির্ভরতা কমানো সম্ভব। এতে একদিকে যেমন কৃষকের আয় বৃদ্ধি পাবে অন্যদিকে অন্য দিকে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে।