ঢাকা ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

চমেকে ডায়ালাইসিস সেবা বন্ধ

চট্টগ্রামে মৃত্যুর ঝুঁকিতে বিপুল সংখ্যক রোগী

চট্টগ্রামে মৃত্যুর ঝুঁকিতে বিপুল সংখ্যক রোগী

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চালু থাকা কিডনি ডায়ালাইসিস সেবা বন্ধের ঘোষণায় শঙ্কায় পড়েছেন শত শত রোগী। গতকাল ডায়ালাইসিস পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান স্যান্ডর ডায়ালাইসিস সার্ভিস বাংলাদেশ (প্রা.) লিমিটেড এক নোটিশে বিষয়টি জানানোর পর এ শঙ্কা ছড়িয়ে পড়ে। আজ বৃহস্পতিবার থেকে এই সেবা বন্ধের নোটিশ দেয়া হয়। গেল জানুয়ারি মাসে সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাওনা বকেয়া থাকার অজুহাতে একবার বন্ধ করে দেয়া হয়। এ সময় রোগীদের তীব্র আন্দোলনের মুখে আবার চালু করা হয়। আন্দোলনের সময় পুলিশের মারধরে আহত হয়েছিলেন ডায়ালাইসিস করতে আসা এক রোগীর সন্তান। ফের একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

গতকাল দেয়া নোটিশে বলা হয়, আজ বৃহস্পতিবার থেকে স্যান্ডর ডায়ারাইসিস সার্ভিস সংক্রান্ত সব কার্যক্রম স্থগিত থাকবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (অর্থ) কর্তৃক সার্ভিস পেমেন্ট পরিশোধে বারবার অনাকাঙ্ক্ষিত বিলম্ব ও অসহযোগিতার কারণে হঠাৎ করে এ চরম সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি। চিঠিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (অর্থ) ফরিদা ইয়াসমিনের নাম ও ফোন নাম্বার উল্লেখ করে সেবা বন্ধ বা চালুর ব্যাপারে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। এমনকি এ ধরনের স্বাস্থ্যসেবা নিরবচ্ছিন্নভাবে চালাতে তিনি আন্তরিক নন অভিযোগ করা হয় ওই নোটিশে।

একই নোটিশে স্যান্ডর ম্যানেজারের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ‘ডায়ালাইসিসের মতো জরুরি সেবা বন্ধ করার কোনো উদ্দেশ্য আমাদের নেই। কিন্তু এমন বিরূপ পরিস্থিতিতে সেবা চালু রাখা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। চলমান সমস্যার স্থায়ী সমাধান না হওয়া পর্যন্ত সব রোগীদের বিকল্প ব্যবস্থা রাখার জন্য বিনীতভাবে অনুরোধ করা হলো। চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান সাংবাদিকদের বলেন, চমেক হাসপাতালে কিডনি ডায়ালাইসিসের যে সেবা রয়েছে তা পর্যাপ্ত নয়। তাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে একটি ডায়ালাইসিস সেবা সেন্টার চালু করা হয়েছিল, যা একটি বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে আসছে। এতে গরিব রোগীরা স্বল্পমূল্যে সেবা পেয়ে আসছেন। হঠাৎ করে সেবা বন্ধ হয়ে গেলে তারা বিপাকে পড়বেন। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবগত করব। এর আগে কাঁচামাল সংকটে চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি দুপুরের পর থেকে ডায়ালাইসিস সেবা কার্যক্রম বন্ধ রাখে স্যান্ডর। এছাড়া ৮ জানুয়ারি ডায়ালাইসিস সেবা বন্ধ করা নিয়ে আন্দোলনে নামে রোগীরা। চমেক হাসপাতালে রোগীরা বিষয়টি অবহিত হয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেছেন, সরকার নানা খাতে অর্থ বরাদ্দ দিয়ে থাকে। বিশেষ করে জরুরি সেবার ক্ষেত্রে দ্রুত অর্থ বরাদ্দ করা প্রয়োজন। ডায়ারাইসিস রোগীদের জন্য জীবন মরণ সমস্যা। গরিব রোগীরা চমেকে ভর্তুকি মূল্যে ডায়ালাইসিস সেবা পায়। সেজন্য জটিল কিডনি রোগীদের চমেকে ডায়ালাইসিই একমাত্র ভরসা। এখন ডায়ালাইসিস বন্ধ হয়ে গেলে বিপুল রোগী চরম দুর্ভোগে পড়বেন। অনেকটা তারা মৃত্যু ঝুঁকিতে পড়বেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত