ঢাকা ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কন্যামণ্ডল আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাঠ

শাকসবজির দিগন্তজোড়া সবুজের সমারোহ

শাকসবজির দিগন্তজোড়া সবুজের সমারোহ

সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলা সবুজ প্রান্তরে পরিণত হয়েছে ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানাধীন দত্তেরবাজার ইউনিয়নের কন্যামণ্ডল আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাঠ। মাঠের যে দিকে তাকানো যায় শুধু সবুজ আর সবুজ। সবুজের সমারোহে চোখ যেন জুড়িয়ে যায়। পুরো মাঠজুড়ে হাসছে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের স্বপ্ন। মাঠটিতে শাক-সবজির সবুজের বাংলাদেশের একটি চিত্র ফুটে উঠেছে। মাঠজুড়ে শোভা পাচ্ছে শাক-সবজির দিগন্তজোড়া সবুজের সমারোহ। আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাঠের শাক-সবজির বাহার দেখলে যে কারো মন দুলে উঠবে। সবার চোখ আটকে যাবে। দেখে মনে হবে অভ্যর্থনা জানাচ্ছে। দেশের এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে প্রধানমন্ত্রীর এমন নির্দেশনায় অনাবাদি পতিত জমি ও বসতবাড়ির আঙিনায় পারিবারিক পুষ্টিবাগান স্থাপন প্রকল্পের আওতায় গফরগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে উপজেলা কৃষি অফিস ওই আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাঠে বিষমুক্ত সবজি বাগান গড়ে তোলে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবিদুর রহমানের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কন্যামণ্ডল আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলোতে ৭২টি পরিবার বসবাস করছেন। আশ্রয়ণের পাশের মাঠেই এই পারিবারিক পুষ্টিবাগান স্থাপন করা হয়েছে। যাদের পুষ্টিবাগান দেয়া হয়েছে এমন ১৮০ জন কৃষককে সার-বীজসহ অন্যান্য কৃষি উপকরণ দেয়া হয়েছে। কন্যামণ্ডল আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা, সাইফুল ইসলাম, মোফাচ্ছের, আ. মজিদ, রায়হান, কাদের, সাজেদা খাতুন, কল্পনা আক্তার, শাপলাসহ আরো অনেকে বলেন, আশ্রয়ণের মাঠের পতিত জায়গায় কৃষি অফিস থেকে এই সবজি বাগান করে দেয়া হয়। এখন সবজি বাগানগুলো শাক-সবজিতে ভরে উঠেছে। এখন নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে শাক-সবজি বিক্রিও করতে পারছি। আমাদের সবজি বিষমুক্ত হওয়ায় চাহিদাও রয়েছে বেশ। আশ্রয়ণ প্রকল্পের ম্যানেজার মফিজ উদ্দিন (৫৬) বলেন, এখানে সবজি বাগান করে দেয়ার পর থেকে ইউএনও এবং কৃষি কর্মকর্তা সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর রাখছেন। বাগানটি এখন ভরে উঠেছে শাক-সবজিতে। সেখান থেকে আমরা নিয়মিত শাক-সবজি খাচ্ছি পাশাপাশি আশপাশের মানুষদেরও দিচ্ছি। বিশেষ করে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নিশাত হাসান সার্বক্ষণিক তদারকি করছেন। গফরগাঁও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নূর মোহাম্মদ বলেন, এক ইঞ্চি জায়গাও যেন অনাবাদি না থাকে প্রধানমন্ত্রীর এমন নির্দেশনায় গফরগাঁও উপজেলার অনাচেকানাচে পড়ে থাকা পতিত জমি আবাদের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে। অনেক জায়গায় সফলও হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় উপজেলার কন্যামণ্ডল আশ্রয়ণ প্রকল্পের অনাবাদি মাঠটি আবাদের আওতায় এনে সেখানকার ২০ জন কৃষককে প্রশিক্ষিত করেছি। এখন তার সুফল পাচ্ছে সবাই। আশ্রয়ণ প্রকল্পের পরিবারগুলো শাক-সবজির চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি পাচ্ছে নিরাপদ পুষ্টি। পাশাপাশি শাক-সবজি বিক্রি করে আয়ও করছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবিদুর রহমান বলেন, কন্যামণ্ডল আশ্রয়ণ প্রকল্পের আশ্রিতদের কর্মসংস্থানের জন্য উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে আশ্রয়ণের অনাবাদি জমি চাষের আওতায় এনে সেখানে পুষ্টি বাগান করে দেয়া হয়েছে। পুষ্টি বাগানের জন্য বীজ-সারসহ সব উপকরণ দেয়া হয়েছে। সেখানে তারা শ্রম দিয়ে খুবই সুন্দর শাক-সবজি ফলিয়েছেন। সেখান থেকে তারা নিজেরাও খাচ্ছেন পাশাপাশি বিক্রি করে লাভবানও হচ্ছেন। এখন অর্থনৈতিভাবে তারা অত্যন্ত ভালো আছেন। পরবর্তী সময় উপজেলায় যেসব আশ্রয়ণ প্রকল্প রয়েছে সেগুলোও পুষ্টি বাগানের প্রকল্পের আওতায় আনা হবে। প্রধানমন্ত্রী যে ঘোষণা দিয়েছিলেন সেটার শতভাগ বাস্তবায়নে আমরা এ আশ্রয়ণ প্রকল্প করতে পেরেছি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত