সুসংবাদ প্রতিদিন
কাপাসিয়ায় পতিত জমিতে আনারস চাষ
প্রকাশ : ২৫ জুন ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আলোকিত ডেস্ক
গাজীপুর জেলার কাপাসিয়ায় কোথাও লালমাটি, কোথাও বেলে মাটি আবার কোথাও দোআঁশ মাটি। তবে লাল মাটির এলাকাই বেশি। দুই দশক আগেও এসব জমিতে ধানচাষ হতো। বাকি সময় ওই জমি পতিত পড়ে থাকত। কয়েক বছর ধরে লালমাটির টেকটিলায় দেশি জাতের পাশাপাশি জলডুগি ও ক্যালেন্ডার আনারসের চাষ শুরু হয়। ফলন ভালো হওয়ায় পাঁচণ্ডছয় বছরের ব্যবধানে আনারস চাষের পরিমাণ দ্বিগুণ বেড়েছে। কাপাসিয়ার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অনেক কৃষক ১ থেকে ১০ বিঘা পর্যন্ত জমিতে আনারসের চাষ করেছেন। তাদের উৎপাদিত আনারস পাইকাররা এসে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। এসব আনারস ছড়িয়ে পড়ছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। ২০ টাকা থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত প্রতিটি আনারস কেনাবেচা হয়। আনারসের রয়েছে প্রচুর পুষ্টিগুণ। আনারসে থাকা ভিটামিন ‘এ’ এবং ‘সি’ ক্যালসিয়াম পটাশিয়াম ও ফসফরাস মানব দেহের পুষ্টির ঘাটতি পূরণে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া ওজন নিয়ন্ত্রণ করে, হাড় গঠনে সহায়তা করে, দাঁত ও মাঢ়ির সুরক্ষা দেয়, চোখের স্বাস্থ্য রক্ষায় কার্যকরী, হজম শক্তি বাড়ায়, রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা দেয়। উপজেলার লোহাদী গ্রামের আনারস চাষি মো. আরমান বলেন, আমি এক বিঘা জমিতে আনারসের চাষ করেছি। ক্যালেন্ডার ও জলডুগি দুই জাতের আনারসের চাষ করা হয়েছে। এ বছর আনারসের দাম অনেক ভালো। আমার এক বিঘা জমিতে যে পরিমাণ আনারস হয়েছে তা প্রায় ১ লাখ টাকা মতো বিক্রি হবে। এ বছর আরও কিছু জমিতে নতুন করে আনারসের চারা রোপণ করব। কাপাসিয়া উপজেলা সদরের বাসিন্দা মো. পারভেজ এ সড়ক দিয়ে যাওয়ার পথে রাস্তার পাশে আনারস বিক্রি করতে দেখে বাড়ির জন্য আটটি আনারস কিনেছেন। তিনি বলেন, এ এলাকার আনারস অনেক সুস্বাদু।
স্থানীয় এলাকার মাসুদ রানা বলেন, আমি সপ্তাহে দুই দিন এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করি। সড়কের পাশে আনারস বিক্রেতাদের কাছ থেকে আনারস কিনে নিয়ে যাই বাসার জন্য। আজ চারটি জলডুগি আনারস কিনেছি। এখানকার আনারসগুলো অনেক মিষ্টি ও সুস্বাদু। আনারসগুলো টাটকা ও বিষমুক্ত। প্রতিটি আনারস ২০ থেকে ৬০ টাকা করে কিনি। কাপাসিয়া কৃষি অফিসের তথ্য থেকে জানা গেছে, কাপাসিয়ায় ৪৫০ হেক্টর জমিতে আনারসের চাষ হয়েছে। উৎপাদিত আনারসের পরিমাণ প্রায় ৫ হাজার ১৭৫ মেট্রিক টন। পুরো কাপাসিয়ায় ৩ হাজার ২৫০ জন কৃষক নিয়মিত আনারসের চাষ করছেন। বিগত পাঁচণ্ডছয় বছরের আনারস চাষির সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। কাপাসিয়া উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদা মিলি বলেন, এ এলাকায় আগে শুধু দেশীয় জাতের আনারস পাওয়া যেত। এখন ক্যালেন্ডার ও জলডুগি আনারসের চাহিদা বেড়েছে।