ঢাকা ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ৩০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সুসংবাদ প্রতিদিন

পদ্মায় ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষ

পদ্মায় ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষ

পদ্মা নদীতে ভাসমান খাঁচায় চাষ হচ্ছে তেলাপিয়া মাছ। এর সঙ্গে পরীক্ষামূলক রুই, কাতলাসহ কয়েক প্রজাতির মাছও রয়েছে খাঁচাগুলোতে। পদ্মা নদীর পানি প্রবাহ কাজে লাগিয়ে খাঁচায় বছরে তিনবার মাছ চাষ করা সম্ভব। এমন পদ্ধতিতে সল্প খরচে অধিক মাছ উৎপাদন হওয়ায় বড় পরিসরে মাছ চাষের কথা বলছেন সংশ্লিষ্টরা। রাজশাহী চারঘাট উপজেলার ইউসুফপুর ইউনিয়নের টাঙ্গনগ্রামে পদ্মা নদীতে এমন ভাসমান খাঁচায় মনোসেক্স জাতের তেলাপিয়া মাছের চাষ করা হচ্ছে। এই গ্রামের ৪০ জনের সদস্য এই মাছ চাষের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। তারা সবাই ইউসুফপুর টাঙ্গন মৎসজীবী সমবায় সমিতির সদস্য।

এই প্রথম পরীক্ষমূলক রাজশাহীর পদ্মা নদীতে ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষ করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ৬২টি তেলাপিয়া মাছের পোনার ওজন ছিল এক কেজি। এমন পোনা ছাড়া হয়েছিল খাঁচাগুলোতে। খাঁচায় মাছ ছাড়ার এক মাস ১৪ দিনের মাথায় মাত্র ৬টি তেলাপিয়া মাছের ওজন দাঁড়িয়েছে এক কেজিতে। আগামী এক মাসের মধ্যে একেকটি মাছের ওজন প্রায় ৩০০-৪০০ গ্রাম হবে। এই মাছগুলো অতি দ্রুত বাড়ছে। এর আগে পদ্মা নদীতে ১০টি খাঁচার জাল, দড়ি, বাঁশ, ড্রাম, জিআই পাইপ দিয়ে খাঁচা স্থাপন করা হয়েছে। পরে সেই খাঁচাগুলোতে তেলাপিয়া মাছের পোনা ছাড়া হয়েছে। খাঁচার মাছগুলোকে খাবার দিচ্ছেন নজিবার হোসেন। তাকে মাছের খাবার দেওয়া ও দেখাশোনার জন্য প্রতিমাসে ৬ হাজার টাকা দেওয়া হয়।

নজিবার হোসেন বলেন, অল্প খাবার করে দিনে চারবার খাবার দেয়। চারবারে ১০ থেকে ১২ কেজি খাবার লাগে। নদীর পানি হওয়া মাছ দ্রুত বাড়ছে। ইউসুফপুর টাঙ্গন মৎসজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি মাহাবুর রহমান বলেন, ‘কাঁচা পদ্ধতিতে বছরে তিনবার মাছের চাষ করা যাবে। একটা খাঁচায় এক হাজার পিস মাছ আছে। ১০টি খাঁচায় ১০ হাজার পিস মাছ আছে। প্রতিটি খাঁচার পরিমাণ ১২০০ ঘন ফুট। তবে পদ্মার পানি বেড়েছে। স্রোতের কারণে সমস্যা হতে পারে। তেমন হলে মাছ তুলে বিক্রি করে দেওয়া হবে। মাছগুলো বিক্রি করা হলে আমাদের সমিতির ফান্ডে টাকা রাখা হবে। পরে মাছ চাষে খরচ করা হবে। খাঁচায় মাছ চাষে জড়িতরা জানান, প্রবহমান নদীর পানিকে ব্যবহার করেও খাঁচা পদ্ধতিতে মাছ উৎপাদন করা সম্ভব। নদীর পানি প্রবহমান থাকায় প্রতিনিয়ত খাঁচার অভ্যন্তরের পানি পরিবর্তন হয়। যেটি পকুরে সম্ভব নয়। চারঘাট উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা ওয়ালিউল্লাহ মোল্লা জানান, এই পদ্ধতিতে বছরে তিনবার মাছের চাষ করা যাবে। এইভাবে মাছ চাষ করলে খুব সীমিত খরচ হয়। এই খাঁচায় ছাড়া ৬২টি তেলাপিয়া মাছের ওজন ছিল এক কেজি। এক মাস ১৪ দিনে ৬টি তেলাপিয়া মাছের ওজন দাঁড়িয়েছে এক কেজিতে। খাঁচাগুলো মাছে ভরে গেছে। নদী এলাকায় বসবাসরত মৎস্যচাষিদের সংগঠিত করে- এমন উদ্যোগ গ্রহণ করা গেলে এই মাছ চাষ অর্থনীতি ভূমিকা রাখবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত