ঢাকা ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ৩০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কোরবানির ঈদ

উত্তাপ চট্টগ্রামের মশলার বাজার

উত্তাপ চট্টগ্রামের মশলার বাজার

কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামে মশলার বাজারে উত্তাপ বেড়েইে চলেছে। পাইকারি ও খুচরা দুই পর্যায়েই লাফিয়ে বাড়ছে দাম। পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে মসলার বাজার দু’মাস ধরে চলছে অস্থিরতা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, অতিরিক্ত দামের কারণে মানুষ মশলাজাতীয় পণ্য কেনা অনেক কমিয়ে দিয়েছে। এজন্য বিক্রি কমেছে ব্যাপক হারে। বিক্রেতারা বলছেন, আমদানি কম। তাই দাম বেড়েছে। আর ক্রেতারা বরাবরের মতো অভিযোগ করেছেন সিন্ডিকেডের কারসাজির কারণেই বাড়ছে দাম। কোরবানির ঈদের পর দাম কমবে। কেননা, তখন চাহিদা কম থাকবে। এদিকে পেঁয়াজের দামে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা এখন নেই। চাহিদা বাড়লেও দাম কমছে ধীরে। কেজিতে অন্তত ৬০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা থেকে ৪২ টাকায়। এ ব্যাপারে খাতুনগঞ্জের পাইকার ব্যবসায়ী নুরুল আলম বলেন, প্রতি বছর কোরবানির ঈদের আগে মশলার দাম বাড়ে। তবে এবার মশলাজাতীয় পণ্যের প্রায় সব পণ্যের দাম বেড়েছে। অতিরিক্ত দামের কারণে খুব লাভ হচ্ছে মনে করি না। কারণ বাড়তি দামের কারণে ক্রেতারা বাজার বিমুখ হয়ে পড়েছেন। এতে ব্যবসায়ীদের লাভের চেয়ে ক্ষতির পাল্লাই ভারি হচ্ছে।

ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে পাওয়া দামের তথ্যে দেখা যায়, বর্তমানে পাইকারি পর্যায়ে প্রতি কেজি চিকন জিরা বিক্রি হচ্ছে ৮২০ টাকা এবং মিষ্টি জিরা ২৯০ থেকে ৩০০ টাকায়। তবে জিরা খুচরা পর্যায়ে ৮৫০ থেকে ৮৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ গেল ৩ মাস আগেও ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হয় জিরা। বর্তমানে পাইকারিতে প্রতি কেজি এলাচি ১ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৬০০ টাকায়। ৩ মাস আগে এলাচির দাম ছিল ১ হাজার ১০০ টাকা। ৮০০ টাকার লবঙ্গ বর্তমানে ১ হাজার ৪০০ টাকা, ৪৯০ টাকার গোলমরিচ ৬৭০ টাকা, বর্তমানে দারুচিনির দাম ৩২০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হলেও ৩ মাস আগে এই দাম ৭০ টাকা কম ছিল। তবে খুচরা বাজারে গোলমরিচ ১ হাজার টাকা ও লবঙ্গ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫০০ টাকায়।

এদিকে চীনা আদা ও চীনা রসুনের দামও বেড়েছে বাজারে। এর মধ্যে চীনা আদা পাওয়াই যাচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে মিয়ানমার ও ভিয়েতনাম থেকে আসা আদার দাম ১৮০ থেকে ২০০ টাকা এবং চীনা রসুনের দাম ১৪৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে বাজারে। স্বাভাবিক সময়ে ২০০ থেকে ২৫০ টাকার মধ্যে শুকনা মরিচ বিক্রি হলেও বর্তমানে তা ঠেকেছে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়। মসলার মধ্যে শুকনা হলুদ বিক্রি হচ্ছে ১২৫ থেকে ১৩০ টাকায়। ভারত থেকে পেঁয়াজ আসার পর পাইকারিতে পেঁয়াজের দাম এখন ৪০ টাকা থেকে ৪২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কোথাও ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় ঠেকেছে। যদিও সরকারের আমদানি অনুমতির ঘোষণার আগ পর্যন্ত পণ্যটির দাম ঠেকেছিল ১০০ টাকায়।

এদিকে খাতুনগঞ্জে মরিচের দাম কেজিপ্রতি ২০ টাকা বেড়ে ১৬০ টাকা, দারুচিনি ১২০ টাকা বেড়ে ৩৫০ টাকা ও চায়না আদার দাম ১০ টাকা বেড়ে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক মাস আগেই জিরার দাম কেজিতে বাড়ে ১০০ থেকে ১৬০ টাকা এবং লবঙ্গের দাম ১০০ টাকা পর্যন্ত বাড়ে প্রতি কেজিতে। দারুচিনি, তেজপাতা ও ধনিয়ার দাম কেজিতে বেড়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির পর চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে মাত্র ২০ দিনের ব্যবধানে কেজি প্রতি পেঁয়াজের দাম কমেছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি পেঁয়াজ মানভেদে ৪০ টাকা থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত ৪ জুন পাইকারিতে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৯০ টাকায় বিক্রি হলেও গেল রোববার কেজি প্রতি পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৩৫ টাকায়। বর্তমানে খুচরায় প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৪০ টাকা থেকে ৪২ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম বলেন, শুক্রবার খাতুনগঞ্জে পাইকারিতে ভারতীয় পেঁয়াজ কেজিপ্রতি মানভেদে বিক্রি হয় ৩৫ টাকা। পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত যানবাহনের ভাড়া বেড়ে যাওয়ায় পেঁয়াজের দাম এর থেকে আর কমানো যাচ্ছে না।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত