ঢাকা ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সুসংবাদ প্রতিদিন

গোখাদ্যের চাহিদা পূরণে ঘাস চাষে সফলতা

গোখাদ্যের চাহিদা পূরণে ঘাস চাষে সফলতা

উপকূলীয় লবণাক্ত এলাকায় গোখাদ্য বিশেষ করে উচ্চফলনশীল সবুজ ঘাসের ঘাটতি দূর করতে পাকচোং জাতের ঘাস চাষ করে সফলতা পেয়েছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের পিএইচডি শিক্ষার্থী পীযূষ কান্তি ঘোষ। কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে এ গবেষণার প্রকল্প পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. মো. সফিকুল ইসলাম। গবেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় লবণাক্ত এলাকায় প্রাণিসম্পদ উন্নয়নের অন্যতম প্রধান প্রতিবন্ধকতা হলো গোখাদ্যের অভাব ও দানাদার খাদ্যের উচ্চমূল্য। মাটি ও পানিতে লবণের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় উপকূলীয় অঞ্চলের জমিতে ঘাসের উৎপাদন আশানুরূপ হয় না। গবাদি পশু পালনের জন্য খামারিকে শুধু খড়ের ওপর নির্ভর করতে হয়। ফলে এ অঞ্চলের খামারিরা গবাদি পশু পালনে ক্রমান্বয়ে আগ্রহ হারাচ্ছেন। এ বিষয়ে এরই মধ্যে তিন উপজেলায় দুই শতাধিক খামারিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। শিগগির এ গবেষণালব্ধ ফলাফল এ অঞ্চলের খামারিদের উপকারে আসবে। গবাদি পশু থেকে মাংস ও দুধ উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদী এ গবেষক। প্রকল্প পরিচালক প্রফেসর ড. মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘একটি গবেষণা প্রকল্পের আওতায় দুই ধাপে খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরায় এ গবেষণাকর্মটি পরিচালিত হয়। প্রথম ধাপে এ অঞ্চলে কী পরিমাণ গবাদি পশু আছে এবং গবাদি পশু কী কী কারণে কমে যাচ্ছে; সেটা খুঁজে বের করা হয়। খামারিরা কোন কোন ঘাস বা গোখাদ্য ব্যবহার করেন; সে বিষয়েও খোঁজ নেওয়া হয়। সেখান থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে ১৭টি ঘাসের জাত নিয়ে ৫টি লবণাক্ততার মাত্রা তৈরি করে টবে চাষ করা হয়।’ এ ঘাস রোপণের উপযুক্ত সময় ফাল্গুন-চৈত্র মাস (মধ্য ফেব্রুয়ারি থেকে মধ্য এপ্রিল)। তবে অতিরিক্ত বৃষ্টিতে কাটিং রোপণ করা উচিত নয়। জানা গেছে, দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলে জন্মানো পাকচোং ঘাস পুষ্টিমান বিবেচনায় খুবই উন্নত। ঘাসটি নরম হওয়ায় গবাদি পশু খুবই আগ্রহ নিয়ে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে। এ ঘাসে ৭০ শতাংশের ওপরে জলীয় পদার্থ থাকে। খাদ্যের উপাদানের সবচেয়ে দামি অংশ প্রোটিন বা আমিষ তুলনামূলকভাবে অন্য ঘাসের প্রায় সমান। এ বিষয়ে গবেষক পীযূষ কান্তি ঘোষ বলেন, ‘পাকচোং ঘাস চাষাবাদের মাধ্যমে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলে ঘাসের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। গবাদি পশু লালন-পালন অর্থনৈতিকভাবে টেকসই হবে এবং খামারিরা আর্থিকভাবে লাভবান হবেন। তাদের জীবনযাত্রার মানের উন্নয়ন ঘটবে। একই সঙ্গে বেকারত্ব দূর হবে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। সর্বোপরি আমার বিশ্বাস, উপকূলীয় অঞ্চলের গবাদি পশুর উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে এ দেশে প্রাণিসম্পদের বিপ্লব ঘটানো সম্ভব।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত