চাঁদপুর জেলায় এ বছর ৭০ হাজার কোরবানির পশুর চাহিদা। চাহিদার অধিকাংশ জোগান দিচ্ছে স্থানীয়ভাবে খামারিদের লালন-পালন করা পশু। এছাড়াও চরাঞ্চল থেকে একটি বড় অংশ কোরবানির হাটের চাহিদা মিটাচ্ছে। জেলার প্রায় ৩০টি ছোট-বড় চরাঞ্চল ও শরীয়তপুর জেলার একাংশ থেকে হাটে এসেছে গরু। তবে দাম তুলনামূলক গত বছরের চেয়ে কিছুটা বেশি। এর কারণ হিসেবে খামারিরা বলছে গবাদি পশুর সব ধরনের খাদ্যের দাম বেড়েছে। ৭০ হাজার থেকে শুরু করে ১ লাখ ৭০-৭৫ হাজারের মধ্যে অধিকাংশ গরু বিক্রি হচ্ছে। গতকাল বিকালে সদর উপজেলার সবচেয়ে বড় পশুর হাট সফরমালী কোরবানির পশুর হাটে গিয়ে দেখা গেছে হাজার হাজার ছোট ও বড় সাইজের গুরু। গরুর মূল হাটসহ আশপাশের সড়ক ও জমিতে গরু নিয়ে বসেছেন বেপারি ও খামারের মালিকরা। আবার অনেকেই ব্যক্তিগতভাবে বাড়িতে পালিত গরু নিয়ে বাজারে এসেছেন। সদরের ইসলামপুর গাছতলা গ্রামের রোমান পাঠান সফরমালী বাজারে এসেছেন ভাগিদারদের নিয়ে কোরবানির জন্য গরু কিনতে। তিনি বলেন, সফরমালী বাজারে ক্রেতার সংখ্যা অনেক বেশি। যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই ভালো। যে কারণে চরাঞ্চলের লোকজন নদীপথে এই হাটে গুরু নিয়ে আসছে। তবে দাম তুলনামূলক বেশি। কারণ সদরের আরেক বড় বাজার বাগাদীর হাটে গরু থাকলেও ক্রেতা তেমন নেই। চাঁদপুর শহরের কোড়ালিয়া রোডের বাসিন্দা ও চাল ব্যবসায়ী নাজমুল পাটওয়ারি বলেন, তিনি ১ লাখ ৭১ হাজার দিয়ে একটি ও ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে আরেকটি গরু কিনেছেন। তিনি দেশীয় জাতের এই দুইটি গরু কিনে খুবই আনন্দিত। তার ভাগিদার যারা তারাও সন্তুষ্ট।
শরীয়তপুর জেলার সখিপুর থানার তারাবুনিয়া থেকে নিজ খামারের ১০টি গরু নিয়ে এসেছেন জসিম উদ্দিন। তিনি সন্ধ্যার আগেই তার গরুগুলো বিক্রি করে দিয়েছেন। দাম পেয়েছেন প্রতিটি ১ লাখ থেকে ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা। প্রত্যেকটি গরুর সাইজ প্রায় সমান। ভালো দাম পেয়েছেন বলে তিনি মন্তব্য করেন।
সাপ্তাহিক গরুর বাজারের পরিচালনার দায়িত্বে আছেন স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল আজিজ খান দুদু। তিনি বলেন, এটি সাপ্তাহিক পশুর হাট। যে কারণে একটি পরিচিতি আছে। দেশীয় গরু কোরবানি দেয়ার জন্য শহরের অধিকাংশ মানুষ এখানে ছুটে আসে। আমরা সার্বিক নিরাপত্তাসহ ক্রেতা-বিক্রেতার সব সুযোগ-সুবিধা চালু রেখেছি।
এদিকে বাজার ঘুরে দেখা গেছে ক্রেতা-বিক্রেতাদের জন্য স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা টহল দিচ্ছেন। বিকালে সরেজমিন পরিদর্শনে আসেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ইয়াসির আরাফাত। তিনি পুরো বাজার ঘুরে দেখেন এবং ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলেন।