কিশোরগঞ্জের প্রায় ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে এবার অনুষ্ঠিত হবে ১৯৬তম ঈদুল আজহার জামাত। ঐতিহাসিক এ মাঠে আশপাশের জেলা ছাড়াও দেশ-বিদেশ থেকে মুসুল্লি ঈদের জামাতে অংশ নেন। এরই মধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। ঈদের জামাত ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা। গতকাল সকালে সরেজমিন শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে গিয়ে দেখা যায়, চলছে ঈদুল আজহার নামাজের জন্য সবশেষ প্রস্তুতি। নামাজের সময় মুসুল্লিদের কাতার সোজা করার জন্য দাগ কাটাও শেষ পর্যায়ে। প্রতি বছর কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে ঈদের জামাতের জন্য নেওয়া হয় ব্যাপক প্রস্তুতি।
এবারও সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে স্থানীয় ও দূর-দূরান্ত থেকে আসা মুসুল্লিদের কথা মাথায় রেখে। এ মাঠে ঈদের একটি মাত্র জামাত সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত হবে। দেশ-বিদেশের প্রচুর মুসুল্লি শোলাকিয়া ঈদগাহে নামাজ পড়তে আসেন। বংশ পরম্পরায় এ মাঠে নামাজ পড়েন মুসুল্লিরা।
২০১৬ সালের ৭ জুলাই ঈদুল ফিতরের নামাজ চলাকালীন শোলাকিয়া ঈদগাহের কাছে পুলিশের একটি নিরাপত্তা চৌকিতে জঙ্গিদের অতর্কিত হামলায় দুই পুলিশ সদস্যসহ নিহত হন চারজন। সেই থেকে ঈদের জামাতে বাড়তি নিরাপত্তার ওপর জোর দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
ঈদগাহ পর্যবেক্ষণের জন্য তৈরি হয়েছে ছয়টি ওয়াচ টাওয়ার। পর্যবেক্ষণে থাকবে চারটি ড্রোন ক্যামেরা। পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ বেশ কয়েক স্তরের নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থাকবে জেলা শহরসহ ঈদগাহ মাঠ। দূর-দূরান্তের মুসুল্লিদের সুবিধার্থে ঈদের দিন ময়মনসিংহ ও ভৈরব থেকে শোলাকিয়া স্পেশাল নামে দুটি বিশেষ ট্রেন চলাচল করবে।
কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহমুদ পারভেজ জানান, দূর-দূরান্ত থেকে ঈদগাঁ মাঠে আসা মুসুল্লিরা যাতে করে সুশৃঙ্খলভাবে নামাজ আদায় করে বাড়ি ফিরে যেতে পারেন। সেজন্য জেলা প্রশাসন এবং পৌরসভার পক্ষ থেকে সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তাব্যাবস্থা করা হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে এবারের ১৯৬তম ঈদুল আজহার জামাত আদায় করে নিশ্চিন্তে বাড়ি ফিরে যেতে পারবেন মুসুল্লিরা।
কথিত আছে, ১৮২৮ সালে প্রথম ঈদুল ফিতরের বড় জামাতে এ মাঠে প্রথম সোয়ালাখ মুসল্লি একসঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করেন। সেই থেকে এ মাঠের নাম হয় ‘সোয়ালাখিয়া’, যা এখন শোলাকিয়া নামে পরিচিত।