কোনো কিছু বোঝার আগেই কাঁচামরিচের দাম চার গুণ বেড়ে গেছে। সীমিত টাকা নিয়ে বাজারে যাওযা মানুষ কাঁচামরিচ কিনতে গিয়ে রীতিমতো হতভম্ব হয়ে যাচ্ছেন। বারবার দোকানদারকে জিজ্ঞেস করছেন ভাই দাম কত বললেন, দোকানদার ক্রেতার এই হতচকিতভাব বুঝতে পেরে দাম বাড়ার কারণটা বুঝিয়ে দিচ্ছেন। অথচ সীমিত আয়ের মানুষ দোকানদারের কথায় কেন যেন বিশ্বাস আনতে পারছে না। তারা বলছেন ঈদ এলে দাম বাড়ে এটা ঠিক- তাই বলে ১০০ টাকার কাঁচামরিচ ৪০০ টাকা হয় কীভাবে। কাঁচামরিচ এখন ক্রেতার ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। আমদানির অনুমতি দিয়েও লাগাম টানা যাচ্ছে না কাঁচামরিচের দাম। বাজারে এখন কাঁচামরিচের কেজি ৩৪০ থেকে ৩৬০ টাকা। পরিমাণে কম নিলে কোথাও কোথাও দাম পড়ছে ৪০০ টাকা। গতকাল সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা এক পোয়া (২৫০ গ্রাম) কাঁচামরিচ বিক্রি করছেন ১০০ টাকা। আর এক কেজি কিনলে দাম রাখা হচ্ছে ৩৪০ থেকে ৩৬০ টাকা। জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের একজন পাইকারি কাঁচামরিচ ব্যবসায়ী জানান, পাইকারিতেও কাঁচামরিচের দাম কমেনি। প্রতি পাল্লা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫০০ টাকায়। অর্থাৎ কেজি পড়ছে ৩০০ টাকা। আর ভারত থেকে আমদানি হওয়া কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৪০০ টাকা পাল্লা।
তিনি বলেন, ভারতের মরিচ সামান্য পরিমাণে আমদানি হয়েছে। কিন্তু ঈদের কারণে মরিচের চাহিদা অনেক বেশি। সে কারণে দামে খুব একটা প্রভাব পড়েনি এখনো। হঠাৎ কাঁচামরিচের অস্বাভাবিক দাম বেড়ে যাওয়ায় গত রোববার আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, রোববার সারাদিনে কাঁচামরিচের ৩০টি আইপিতে ১১ হাজার আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
রামপুরা কাঁচাবাজারের একজন সবজি ব্যবসায়ী জানান, কাঁচামালের দাম এমনই হয়। যখন বাড়ে, হুট করে বাড়ে। আবার যখন কমে আসে, তখন অন্যসব পণ্যের চেয়ে দ্রুত পড়ে যায়। কিন্তু এখন মরিচের চাহিদা অনেক। সেই তুলনায় সরবরাহ কম। হঠাৎ করে কাঁচামরিচের এমন অস্বাভাবিক দাম বাড়ার কারণ বলতে পারছেন না অধিকাংশ খুচরা ব্যবসায়ী। কেউ কেউ অভিযোগ করছেন, কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়ানো হচ্ছে।
অন্যদিকে পাইকারি বিক্রেতারা বলছেন, ভারতের মরিচ আমদানি হলেও দেশি মরিচের কিছুটা সংকট রয়েছে। বৃষ্টিতে কাঁচামরিচের ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বাজারে সরবরাহ কম। সরকার আমদানির অনুমতি দিয়ে প্রমাণ করেছে কাঁচামরিচের ঘাটতি রয়েছে। সব কিছু মিলেই কাঁচামরিচের দাম বেড়ে গেছে।
তারা বলছেন, সরকার কাঁচামরিচ আমদানির অনুমতি দিলেও ঈদের আগে দাম কমার সম্ভাবনা নেই। কারণ আমদানি করা কাঁচামরিচ দেশে আসতে সময় লাগবে।