ঈদের ছুটিতে বৃষ্টি উপেক্ষা করে উপচেপড়া ভিড়

চট্টগ্রামের বিনোদনকেন্দ্র

প্রকাশ : ০২ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  তামিম রহমান, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে ঈদের ছুটিতে বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে সব বয়সি লোকজনের উপচেপড়া ভিড় গতকাল শনিবারও অব্যাহত ছিল। পতেঙ্গা সি বিচ থেকে ফয়’স লেক কনকর্ড এমিউজমেন্ট পার্ক, চিড়িয়াখানা থেকে সবখানে বিনোদন প্রত্যাশী লোকজনে ঠাসা ছিল। বিনোদনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। গতকাল থেকে ৮৫০ টাকা প্রতিজনে ‘ফুল ডে’ বিনোদন কেন্দ্র ভ্রমণের প্যাকেজ চালু করেছে। এই বিনোদন প্যাকেজে অনেকে ঘুরেছেন নান্দনিক বিভিন্ন স্পটে। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ঈদের ছুটি কাটাতে সব বয়সি মানুষের আনন্দ বিনোদনের জন্য নগরের বিনোদন কেন্দ্রগুলো সেজেছে নতুন রূপে। গত শুক্রবার বৃষ্টির দাপট থাকলেও বাধা হতে পারেনি বিনোদনপ্রত্যাশী মানুষের জন্য। সমানে ছুটেছে নানা স্পটে। গতকাল আকাশ তুলনামূলকভাবে পরিষ্কার থাকায় বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে লোকজনের ঢল নামে।

কনকর্ডের ফয়’স লেক কমপ্লেক্সে রয়েছে অ্যামিউজমেন্ট পার্ক, ওয়াটার পার্ক সী-ওয়ার্ল্ড, ফয়’স লেক রিসোর্ট ও বাংলো। ফয়’স লেক কমপ্লেক্সে ভ্রমণে নগরবাসী পায় বাড়তি অনন্দ। এখানে রয়েছে বিনোদনের সব উপকরণ আর পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বন্ধু-বান্ধব ও পরিবারের সবাইকে নিয়ে ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিতে তাই মানুষ ভিড় করে ফয়’স লেকে। ঈদের বিশেষ সময় কাটানোর জন্য ফয়’স লেকে বিশেষ আয়োজনও করা হয়েছে। ঈদের দিন বিকাল থেকে নগরীর পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত, চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা, কাজির দেউড়ি শিশুপার্ক, আগ্রাবাদে কর্ণফুলী শিশুপার্ক ও স্বাধীনতা কমপ্লেক্সে অন্যান্যবারের তুলনায় শিশু ও অভিভাবকদের ভিড় কম দেখা গেছে বৈরি আবহাওয়ার কারণে।

পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত আধুনিকায়নের ফলে এখন নগরবাসীর চিত্তবিনোদনের সবচেয়ে পছন্দের জায়গা। প্রায় ৪ কিলোমিটার সৈকত এলাকায় নগরীর বাসিন্দা ছাড়াও দেশের অন্যান্য প্রান্তের মানুষও আসেন প্রশান্তির খোঁজে। তবে আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় সৈকতে সমুদ্রের পানিতে নামার সুযোগ মিলছে না। নেভাল একাডেমিতেও পর্যটকদের আনাগোনা দেখা গেছে। এজন্য ওই এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। কনকর্ড এন্টারটেইনমেন্ট কম্পানি লিমিটেডের উপ-ব্যবস্থাপক (বিপণন) বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, ফয়’স লেক অ্যামিউজমেন্ট পার্ক এবং সী-ওয়ার্ল্ডে দর্শনার্থীরা আসছেন। সামনের দিনগুলোতে দর্শনার্থী বাড়বে। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় নেয়া হয়েছে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা।

ফয়’স লেক অ্যামিউজমেন্ট পার্কের পাশেই চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার দিকেই দর্শকদের নজর থাকে বেশি। শিশুরা সাদা বাঘ, সিংহ, ক্যাঙ্গারু আর ওয়াইল্ড বিস্টের খাঁচায় ভিড় জমায়। চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর ডা. শাহাদাত হোসেন শুভ বলেন, চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় সাম্প্রতিক সময়ে নতুন নতুন অনেক প্রাণি এসেছে। এ কারণে শিশু বিনোদনের অন্যতম আকর্ষণীয় স্পট এখন চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা। চিড়িয়াখানায় জলহস্তি আনা হবে। বর্তমানে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় ৬৬ প্রজাতির ৬২০ পশুপাখি রয়েছে। নগরে ঈদের ছুটি কাটাতে পতেঙ্গা প্রজাপতি পার্ক, কর্ণফুলী নদীর অভয় মিত্র ঘাট ও হালিশহর সাগর পাড়ে ঘুরেছেন অনেকে। এছাড়া সীতাকুণ্ডের গুলিয়াখালী সাগরপাড়, চন্দ্রনাথ পাহাড়, মীরসরাইয়ে মহামায়া লেক, আনোয়ারায় পারকি সমুদ্র সৈকত, রাউজানে মহামুনি মন্দির, বেতাগি কর্ণফুলী নদীর পাড়, রাউজান রাবার বাগান, ফটিকছড়ি চা-বাগান এলাকায় ছুটেছেন বিপুল দর্শনার্থী। ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে পতেঙ্গা সৈকত ও ডিসি পার্কগামী পর্যটক বাস সার্ভিসে অতিরিক্ত বাস যুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। শুক্র ও শনিবার নিউমার্কেট রুটের পাশাপাশি বহদ্দারহাট ও চকবাজার থেকে দুটি করে মোট চারটি অতিরিক্ত বাস সংযোজন করা হয় দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে। নগরীর জিয়া শিশু পার্কে আসা দর্শনার্থী রিজিয়া বেগম জানান, স্কুল ছুটি। তাই বাচ্চাদের নিয়ে ঘুরতে আসলাম পার্কে। অন্যবারের মতো এবারো এই পার্কে নানা রাইডস সাজানো হয়েছে। এতে দর্শনার্থীরা বিশেষ করে শিশুরা বেশ আনন্দ পেয়েছে।