আঙুল ফুটানোর অভ্যাসের সঙ্গে আমরা প্রায় সবাই কম বেশ পরিচিত। কারণ প্রায় সবারই এ অভ্যাস আছে। কেন এই আঙুল ফুটান, তার সুনির্দিষ্ট কারণও কেউ বলতে পারবেন না। অনেকে কেবল ভালোলাগার কারণেই এমনটা করে থাকেন। অনেক সময় মনে হয়, আঙুলে কোথাও জড়তা রয়েছে। এরপর তা ফুটালে মনে হয়, দূর হয়ে গেল। কিন্তু অতি সাধারণ এই অভ্যাস কি আসলেই সাধারণ, না কি এটি হতে পারে আপনার ক্ষতির কারণ? চলুন জেনে নেওয়া যাক- বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আঙুল ফুটানোর অভ্যাসের কারণে আপনি নিজেরই ক্ষতি করছেন। কারণ এই অভ্যাস একেবারেই ভালো কিছু নয়। এর ফলে শরীরে দেখা দিতে পারে একাধিক সমস্যা। অনেকের ধারণা, আঙুল ফুটানোর সময় হাড়ে হাড়ে ঘষা লেগে মটমট শব্দ হয়। এই ধারণা মোটেই ঠিক নয়। আঙুল ফুটানোর সময় হাড়ের সঙ্গে ঘষা লাগে না। চাপ ছাড়া আঙুল ফোটানো সম্ভব নয়। আঙুলের হাড়ের যেসব সন্ধি থাকে তার চারপাশে এক ধরনের তরল থাকে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এই তরলকে বলা হয় সাইনোভিয়াল ফ্লুইড। আঙুল ফুটানোর জন্য চাপ দিলে অস্থিসন্ধিগুলো স্বাভাবিক অবস্থান থেকে সরে যায়। যে কারণে ওই তরলের মধ্যে বুদবুদ তৈরি হয়। এই বুদবুদ তৈরি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ফেটে যায়। ফলে আমাদের কানে সেই আওয়াজই আসে। আঙুল ফোটানোর কারণে সৃষ্ট মটমট শব্দ হাড়ে হাড়ে ঘষা লাগার ফলে হয় না। অনেকে মনে করেন, আঙুল ফোটানোর অভ্যাসের কারণে পরবর্তীতে তা বাতের কারণ হতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর সঙ্গে বাতের কোনো সম্পর্ক নেই। তবে অতিরিক্ত পরিমাণে আঙুল ফোটানোর অভ্যাসের কারণে শরীরে অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই অভ্যাস নিয়ন্ত্রণে না থাকলে আঙুলের অস্থিসন্ধিগুলো ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ে। সেখান থেকে শরীরে অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। ঘন ঘন আঙুল ফোটানোর অভ্যাসের কারণে আঙুলের স্নায়ুর পাশাপাশি শরীরের অন্য স্নায়ুরও ক্ষতি হতে পারে। আঙুল ফোটালে হাড়ের সংযোগস্থলের কোষেরও ক্ষতি হয়। এমনকী এটি লিগামেন্ট ছিঁড়ে যাওয়ারও কারণ হতে পারে। তাই এ ধরনের অভ্যাস থাকলে তা বাদ দেয়াই উত্তম।