কুমিল্লার তিতাস উপজেলা একটি নিচু এলাকা। সাধারণত এ এলাকার কৃষকরা জমিতে ধানের পাশাপাশি কেউ আবার সবজি চাষ করে থাকেন। কিন্তু শখের বসে ব্যতিক্রম উদ্যোগ নিয়েছেন মুহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন পলাশ। তিনি চাষ করছেন ড্রাগন ফল। তার এ ড্রাগন চাষে বর্তমানে আয়ের পথ দেখাচ্ছে অন্যদের। তার দেখাদেখি ড্রাগন ফল চাষ শুরু করছেন অনেকেই। প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন এসে ড্রাগনের চাষ পদ্ধতি জেনে নিচ্ছেন। সরেজমিন মুহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন পলাশের বাগান ঘুরে দেখা যায়, চারিদিকে সবুজের সমারোহ। প্রায় পাঁচ ফুট উচ্চতার প্রতিটি কংক্রিটের খুঁটি পেঁচিয়ে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে ড্রাগন ফলের গাছ। প্রতিটি গাছে ঝুলছে ৮ থেকে ১০টি করে কাঁচা, পাকা ও আধা পাকা ড্রাগন ফল। বাগানে কর্মরত শ্রমিক জলিল বলেন, গত দুই বছর পূর্বে নিজের ৩০ শতাংশ জমিতে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করেন। ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথমে ৫৫ টাকা করে ৬০০টি ড্রাগন ফল গাছের চারা এনে রোপণ করেন। রোপণের চার মাসেই গাছে ফল আসে। প্রথমবার প্রতিটি গাছে ৪ থেকে ৫টি ফল আসলেও এ বছর দ্বিতীয়বারে প্রতিটি গাছে ১০ থেকে ২০টি ফল আসছে। ওই একই জমিতে সাথী ফসল হিসেবে রয়েছে আম, পেঁপে ও লেবুগাছ। বর্তমানে প্রতি কেজি ড্রাগন ফল বাগান থেকে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। যা বাজার মূল্য রয়েছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। এ বিষয়ে দেলোয়ার হোসেন পলাশ জানান, ড্রাগন ফল চাষ চারা রোপণ করি। ইনশাআল্লাহ গত দুই বছরের মতো এ বছরও পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনের চাহিদা পূরণ করেও কয়েক লাখ টাকা বিক্রি করতে পারব। তাই চিন্তা করছি এবছর ড্রাগন ফলের চাষ আরো বাড়াবো। কারণ বাজারে ড্রাগন ফলের চাহিদা অনেক এবং ফলটি বেশ রসালো ও সুস্বাদু। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সালাহউদ্দিন জানান, সব ধরনের মাটিতে ড্রাগন চাষ হয়। তবে উঁচু জমিতে ভালো ফলন পাওয়া যায়। তিন মিটার পর পর গর্ত করে চারা রোপণ করতে হয়। বছরের যে কোনো সময় চারা রোপণ করা যায়। তবে এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে হলে ভালো। বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন চাষ করার জন্য উপজেলা কৃষি অফিস চাষিদের উৎসাহিত করেছে।