মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে চলছে এক্সপ্রেসওয়ে পারাপার
সর্বাধিক দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা
প্রকাশ : ০৫ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
এমএ কাইয়ুম মাইজভান্ডারী, শ্রীনগর (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি
বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ের পদ্মা সেতু উত্তর থানার সামনের এলাকা সর্বাধিক দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা। নিমিষেই মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে অবিরত পারাপার হচ্ছে যাত্রীসহ সব ধরনের যানবাহন। এখানে কোনো ফুটওভার ব্রিজ, বাস স্টপিজ, আন্ডার পাস, জেব্রা ক্রসিং, রোড ডিভাইডার, স্প্রিড ব্রেকার এমনকি কোনো যাত্রী ছাউনিও নেই। ঢাকা থেকে দক্ষিণবঙ্গগামী পদ্মা সেতুতে উঠতে এবং দক্ষিণবঙ্গ থেকে পদ্মা সেতু থেকে নামতে পদ্মা সেতুর উত্তর থানার সামনে দুর্ঘটনা প্রতিরোধের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় হরহামেশাই ঘটছে দুর্ঘটনা। তাই এই এলাকা ডেথ জোন হিসেবে পরিচিত। ঢাকা থেকে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং ও টঙ্গিবাড়ী উপজেলাগামী যাত্রীবাহী বাসসহ বিভিন্ন যানবাহন পদ্মা সেতুর উত্তর থানার সামনে এসে ডানদিকে অর্থাৎ পশ্চিমে আড়াআড়ি পাড় হতেই পেছনে থাকা সেতুগামী দ্রুত গতির বাসসহ বিভিন্ন যান এবং পশ্চিম পাশের সার্ভিস লেন দিয়ে পূর্বদিকে আড়াআড়ি পারাপারের সময় পদ্মা সেতু থেকে নেমে ঢাকাগামী দক্ষিণবঙ্গের দ্রুত গতির বাসসহ বিভিন্ন যানবাহনের পেছনে ধাক্কা দেয়াতে দুর্ঘটনার মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলছে। এখানে কোনো যানবাহন তাদের গতি নিয়ন্ত্রণ না করেই যানবাহন চালাচ্ছে। যদিও ওখানে ট্রাফিক পুলিশ নিয়মিত তাদের কর্তব্য পালন করছেন। তবুও কোনোভাবেই দুর্ঘটনা এড়াতে পারছেন না। জানা যায়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়ক ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে বাংলাদেশের সর্বপ্রথম জাতীয় এক্সপ্রেসওয়ে। এটি সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অধীনে। এটি এশিয়ান হাইওয়ে নেটওয়ার্ক এএইচ১-এর একটি অংশ। এই ছয় লেনের এক্সপ্রেসওয়েতে দুটি সার্ভিস লেন, ৫টি ফ্লাইওভার, ১৯টি আন্ডারপাস, দুটি ইন্টারচেঞ্জ, চারটি রেলওয়ে ওভার ব্রিজ, চারটি বড় সেতু, ২৫টি ছোট সেতু এবং ৫৪টি কালভার্ট রয়েছে। পদ্মা সেতুর নির্মাণ শেষ হওয়ার পর, পদ্মা সেতুর মাধ্যমে এক্সপ্রেসওয়ের দুই পাশ সংযুক্ত করা হয়েছে। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ফুটওভার ব্রিজ বা নির্দিষ্ট বাসস্টপিজ না থাকায় এক্সপ্রেসওয়েসহ সার্ভিস লেনের বাসসহ বিভিন্ন যানবাহন আড়াআড়ি পারাপারের পেছনে থাকা দ্রুত গতি বিভিন্ন যানবাহন সামনের যানবাহনকে সজোরে ধাক্কা দিচ্ছে। পদ্মা সেতু বর্ষপূর্তীর দিন সকালে নিয়ন্ত্রণহীন এক মাইক্রোবাসের ধাক্কায় আব্দুল মোতাবেল নামে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ সদস্য ও দাঁড়িয়ে থাকা নারীযাত্রীসহ তিনজন নিহত হয়। এ সময় অপর তিনজন গুরুত্বর আহত হয়।
শরিয়তপুর পরিবহনের বাসচালক শাহীন বলেন, এই রাস্তার সবচেয়ে ভয়ানক রাস্তা হচ্ছে পদ্মাে সেতু উত্তর থানার সামনের টুকু। মহাসড়কের মাঝ বরাবর এভাবে আড়াআড়িভাবে যানবাহনসহ মানুষজন পারাপার হলে দুর্ঘটনা ঘটবে। তাই এখানে একটি ব্রিজ বা বাসস্ট্যান্ডের প্রয়োজন। মাওয়া ট্রাফিক জোনের টি আই জিয়াউল হায়দার জানান, এখানে নির্দিষ্ট কোনো বাসস্টপিস না থানায় এভাবে আড়াআড়িভাবে যানবাহনসহ যাত্রীরা পারাপার হচ্ছে। দ্রুত এখানে বাসস্টপিজ বা ফুটওভার ব্রিজ প্রয়োজন। পদ্মা সেতু উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আলমগীর হোসাইন জানান, এক্সপ্রেসওয়ের মাঝখানে রোড ডিভাইডার না থাকায় যত্রতত্র যানবাহনসহ যাত্রীরা যাতায়াত করছেন। যার কারণে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। কর্তৃপক্ষের খুব দ্রুত রাস্তার মাঝখানে রোড ডিভাইডার দিয়ে এখানে একটি ফুট ফ্লাইওভার ব্রিজ এবং একটি নিয়মিত বাসস্টপিজ স্থাপন করা। তাহলে দুর্ঘটনা কমে আসবে।