কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত থানাহাট বাজারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের তত্ত্বাবধানে কোটি টাকা ব্যয়ে একটি ড্রেন নির্মাণ করা হলেও বাজারের মূল সড়কের সাথে সংযোগ না দেয়ায় সামান্য বৃষ্টিতে রাস্তাগুলোতে জলাবদ্ধতাসহ কাদাপানি জমে পথচারীদের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে কয়েকশ’ ব্যবসায়ীসহ প্রায় লক্ষাধিক বাজারগামী মানুষ।
উপজেলার প্রধান সড়কসহ বিভিন্ন গলিতে ড্রেনেজব্যবস্থা কাজ না করায় সামান্য বৃষ্টিতেই বেহাল দশা দেখা দিয়েছে। পানি নিষ্কাশনের পথ না থাকায় থানাহাট বাজারের প্রধান সড়কসহ বিভিন্ন গলির রাস্তাগুলো জন দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। উপজেলার মাটিকাটা মোড়, থানা মোড়, এলএসডি মোড় হতে সন্তোষ ডাক্তারের মোড় পর্যন্ত এবং বীর বিক্রম সড়কসহ বিভিন্ন গলি সড়কগুলো ভারি বৃষ্টিপাতের সময় মানুষ চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। সামান্য বৃষ্টিতে পানি জমে স্থানগুলোতে খানা-খন্দের সৃষ্টি হওয়ায় প্রতিনিয়ত
ঘটছে বিভিন্ন দুর্ঘটনা। রাস্তাগুলো কাঁদা আর খানাখন্দের শহরে পরিণত হয়েছে। বছর দুয়েক আগে থানাহাট বাজারের ভেতরে
এলজিইডির তত্ত্বাবধানে কোটি টাকা ব্যয়ে একটি ড্রেন নির্মাণ করা হলেও বাজারের ভেতরের রাস্তাগুলোর সাথে সংযোগ না দেয়ায় তা কাজে আসছে না। ড্রেনটি নির্মাণের পর এটি পানি নিষ্কাশনের উপযোগী না করায় ড্রেনের ভিতরে মাটি ও ময়লা জমে বন্ধ হয়ে আছে। ফলে প্রধান সড়কসহ বিভিন্ন গলি-রাস্তাগুলোতে কাঁদা ও পানি জমে থাকায় ব্যবসায়ী, পথচারী, স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীসহ বাজারগামী প্রায় লক্ষাধিক মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। ভ্যানচালক চাঁদ মিয়া ও ইদ্রিস আলী জানান, ভাঙা আর কাদার রাস্তায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভ্যান গাড়ি চালাতে হচ্ছে। প্রায়ই আমরা দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছি।
থানাহাট পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা জানায়, রাস্তার বেহাল দশায় তাদের স্কুল যেতে অনেক কষ্ট হয়। প্রায় সময়ই কাদায় তাদের জুতা ও জামা কাপড় নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়াও রাস্তায় সৃষ্ট খানা খন্দে পড়ে যাওয়ার ভয় থাকে।
চিলমারী বিএম কলেজের সহকারী অধ্যাপক জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, বিশেষ করে বাজারের ঢোকার একমাত্র সড়কটির রণি মোড়ে বৃষ্টি এলেই এক হাঁটু পানি জমে থাকে। এই পানি সরে যেতে প্রায় দেড় সপ্তাহ সময় লাগে। এই সময়টা মরণফাঁদে পরিণত হয় রাস্তাটি। চিলমারী অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক জানান, তার অফিসের স্টাফদের দুপুরের খাবারের জন্য রণি মোড়ে যেতেই হয়। তবে দুর্গন্ধযুক্ত পচা পানি পাড়িয়ে যেতে যেতে অনেকের শরীরে নানা রকম চর্ম রোগ দেখা দেয় বর্ষা মৌসুমে। কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ড্রেনটি পানি নিষ্কাশনের উপযোগী করা হলে জন দুর্ভোগ কিছুটা লাঘব হতো বলে সচেতন মহলের দাবি।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী মো. ফিরোজুর রহমানের মুখোমুখি হলে তিনি বলেন, রাস্তাগুলোর কাজ এখনো শেষ হয়নি। সংযোগের কাজ এখনও প্রক্রিয়াধীন। অল্প সময়ের মধ্যে সমস্যার সমাধান করা হবে। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক রুকুনুজ্জামান শাহীন বলেন, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের সাথে কথা হয়েছে, অতি দ্রুত রাস্তাগুলোর কাজ করা হবে।