অন্যরকম

হাতির ক্যান্সার হয় সবচেয়ে কম

প্রকাশ : ০৭ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকরা ক্যান্সারের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই গবেষণা চালাচ্ছেন। মানুষের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রাণীর ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিয়েও চলছে চর্চা। গবেষকদের দাবি, প্রাণীদের মধ্যে হাতির ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা সবচেয়ে কম। তারা দাবি করেছেন, এর পেছনে অতিকায় প্রাণীটির অ-কোষের ভূমিকা রয়েছে। বিশ্বের বড় প্রাণীগুলোর মধ্যে হাতি ও তিমির দেহে কোষের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। ফলে এই দুই প্রাণীর ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও সর্বাধিক বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে গবেষণায় অন্য তথ্য উঠে আসে। দেখা যায়, মানুষের চেয়ে হাতির এই মরণ রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা অনেকটাই কম। ১৯৭৭ সালে ক্যান্সার নিয়ে ইউরোপের জার্নালে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়। সেখানে বিজ্ঞানীরা দাবি করেন, এই মরণ রোগে বছরে মাত্র ৫ শতাংশ হাতির মৃত্যু হয়। শতাংশের বিচারে মানুষের ক্ষেত্রে এই সংখ্যা ২৫ থেকে ৩০। এই তত্ত্ব সামনে আসার পর শোরগোল পড়ে যায়। টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, মানব দেহে টিপি৫৩ এর সমতুল্য জিন রয়েছে। এই জিন প্রোটিন তৈরি করতে সক্ষম, যা ক্ষতিগ্রস্ত ডিএনএকে মেরামত করতে পারে। শুধু তাই নয়, কোষের ভেঙে যাওয়া আটকে দিয়ে ক্যান্সার ঠেকাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এই জিন। বিজ্ঞানীদের দাবি, ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই চালাতে সক্ষম এই রকমের জিনের সমতুল্য ২০ ধরনের জিন রয়েছেন হাতির শরীরে, যা এই মারণ রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই বাড়িয়ে তোলে। সেই কারণেই ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাতির মৃত্যু হয় খুব কম। প্রসঙ্গত, মানুষের মতো বাইরে নয়, দেহের মধ্যেই থাকে হাতির অ-কোষ। শুক্রাণু উৎপাদনের সময় দেহের উচ্চ তাপমাত্রা বাইরে বেরিয়ে যেতে সাহায্য করে ওই অ-কোষ। ওই সময় হাতির দেহের তাপমাত্রা প্রায় ৩ ডিগ্রি কমিয়ে আনে তাদের দেহের মধ্যে থাকা অ-কোষ। তাপমাত্রা বেশি থাকলে শুক্রাণুর মধ্যে থাকা ডিএনএ ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলেও জানিয়েছেন গবেষকরা। অন্যদিকে ক্যান্সারের জেরে মানুষের মধ্যে বন্ধ্যাত্বের পরিমাণ বাড়ছে বলেও জানিয়েছেন গবেষকরা। শুক্রাণুর ক্ষতিগ্রস্ত ডিএনএ মেরামতির জন্য মানুষের কোনো জিনগত বিবর্তন হয়নি বলে ধারণা করা হচ্ছে।