ঢাকা ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ৩১ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

কয়েদিদের ৬০ ভাগ মাদকে জড়িত

কয়েদিদের ৬০ ভাগ মাদকে জড়িত

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এমপি বলেছেন, জেলখানায় থাকা কয়েদিদের ৬০ শতাংশের কাছাকাছি মাদক কারবারি ও মাদক সেবনকারী। সাক্ষী-প্রমাণের অভাবে মাদক কারবারি ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে। ছাড়া পেয়ে তারা আরো বেশি করে মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছে। গতকাল শনিবার মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার হাঁসাড়া ইউনিয়নের আলমপুরে আন্তর্জাতিকমানের স্পেশালাইজড মাদকাসক্তি ও মানসিক হাসপাতাল ‘আহ্ছানিয়া হেনাআহমেদ মনোযত্ন কেন্দ্র’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমরা যদি উন্নত বাংলাদেশ গড়তে চাই, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে চাই, তাহলে যুব সমাজকে এই মরণ নেশা থেকে বাঁচাতে হবে। সেজন্য জনপ্রতিনিধিসহ সবার সহযোগিতা চাই।’ মন্ত্রী বলেন, আমি পৃথিবীর বহু দেশ ঘুরেছি। প্রাথমিকভাবে ইউরোপের খুব ভয়ংকর অবস্থা ছিল। কিন্তু তারাও আজ ভালো অবস্থানে চলে এসেছে। আমি জানি বাংলাদেশ এখনো সেই পর্যায়ে যায়নি। আমাদের ৭০ থেকে ৮০ লাখ মানুষ হয়তো মাদকদ্রব্য ব্যবহার করেছে। সে তুলনায় হাসপাতাল (মাদক নিরাময় কেন্দ্র) খুবই অপ্রতুল। তবু আমরা শুরু করেছি।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, ‘মাদক নিয়ন্ত্রণে আমরা কাজ করছি। মিয়ানমার সীমান্ত সুরক্ষিত করতে কাজ অব্যাহত রয়েছে। বিজিবিকে শক্তিশালী করা হয়েছে। সীমান্তে যোগাযোগের জন্য হেলিকপ্টার কেনা হয়েছে।’

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের সভাপতি কাজী রফিকুল আলমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবদুল ওয়াহাব ভূঞা, বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম, মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী নাহিদ রসুল এবং মুন্সীগঞ্জ পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান আল-মামুন। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন মিশন স্বাস্থ্য সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ। এছাড়া বক্তব্য দেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের আবাসিক মনোচিকিৎসক ড. মো. রাহেনুল ইসলাম, শ্রীনগর উপজেলা চেয়ারম্যন মো. মশিউর রহমান মামুন, হাঁসাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যন মো. সুলাইমান খান, আহ্ছানিয়া মিশন নারী মাদকাসক্তি চিকিৎসা কেন্দ্রের ইয়ানা জামান ও অভিভাবক রেবেকা জামান প্রমুখ।

জানা যায়, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন প্রতিষ্ঠিত মনোযত্ন কেন্দ্র মাদক নির্ভরশীল ও মানসিক রোগীদের বহুমুখী বিশেষায়িত চিকিৎসাসেবা প্রদান করবে।

পাঁচ তলাবিশিষ্ট কেন্দ্রটিতে রয়েছে ৫০টি বেড, খোলামেলা পরিবেশ, কেবিন, ডিল্যাক্স শয্যা, অ্যসিসমেন্ট, একক ও গ্রুপ কাউন্সিলিং সুবিধা, মেডিটেশন, কেস ম্যনেজমেন্ট, লাইব্রেরি, শরীর চর্চার জন্য জিম, ধর্ম চর্চার ব্যবস্থা, অ্যাম্বুলেন্স, পারিবারিক কর্মসূচি, চিকিৎসা-পরবর্তী ফলোআপ সুবিধা।

এছাড়া ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন পরিচালিত পার্শ্ববর্তী হেনা আহমেদ হাসপাতাল থেকে এক্স-রে, অত্যাধুনিক সব ডায়াগনস্টিক, আল্ট্রাসনোগ্রাম, আধুনিকমানের অপারেশন থিয়েটারও জরুরি চিকিৎসাসেবার সুবিধাও রাখা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য সেক্টরের আওতায় ১৯৯০ সাল থেকে মাদকবিরোধী কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে এবং বর্তমানে নারীসহ চারটি চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে মাদক নির্ভরশীল ও মানসিক রোগের চিকিৎসার সেবা প্রদান করছে এবং জাতীয় পর্যায়ে একাধিকবার পুরস্কার অর্জন করেছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত