বুধবার রাজপথে বিএনপি-আ.লীগ
প্রকাশ : ১০ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
সরকার পতনের একদফা আন্দোলনের চূড়ান্ত ঘোষণা দেয়ার দিন-তারিখ ঠিক করেছে বিএনপি। আগামী বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনস্থ দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ থেকে সরকার পতনের এক দফা কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছে দলটি। যথারীতি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও সেদিন তাদের ‘পাল্টা’ কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে থাকার জন্য শান্তি সমাবেশ ডেকেছে।
বিএনপির কর্মসূচির দিন সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে ওইদিন বিকালে শান্তি সমাবেশ করবে ক্ষমতাসীনরা। ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল দুপুরে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়টি জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে শান্তি সমাবেশের ডাক দিয়েছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর আওয়ামী লীগ। শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে সমাবেশ সঞ্চালনা করবেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি। আরো বক্তব্য রাখবেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির। সমাবেশে অংশগ্রহণ করবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা, মন্ত্রিসভার সদস্য এবং ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগের নেতারা।
একই দিনে দুটি রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি ঘোষণাকে পাল্টাপাল্টি হিসেবে দেখছেন দেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, নির্বাচনকালীন সরকার ইস্যুতে এখনো বিপরীত মেরুতে দুই দল-আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। একই দিনে দুই দলের কর্মসূচি ঘোষণায় সাধারণ মানুষের মধ্যে বাড়ছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি থেকে রাজপথে সংঘাত-সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার অশঙ্কা রয়েছে। রাজনীতি যদি সংঘাতের পথে চলে যায়, সেটা কারো জন্যই মঙ্গল বয়ে আনবে না। দেশের অর্থনীতি অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়বে। যার প্রভাব পড়বে প্রতিটি সেক্টরে। রাজনৈতিক দলগুলোও এ প্রভাবের বাইরে থাকতে পারবে না।
সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সাধারণ মানুষের উদ্বেগ এবং দেশের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে রাজনৈতিক দলগুলোকে ইতিবাচক রাজনীতি করতে হবে। সেটা না হলে আবার রাজপথে মারামারি, হানাহানি শুরু হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক ড. সাবের আহমেদ চৌধুরী বলেন, একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সব পক্ষকেই ব্যালেন্স করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে হবে। এতে দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিরাজ করবে। জনগণেরও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আস্থা তৈরি হবে।
অবশ্য আওয়ামী লীগ বলছে, শান্তি সমাবেশ পাল্টাপাল্টি কোনো কর্মসূচির নয়। বিএনপির কর্মসূচি মানেই সন্ত্রাস-নৈরাজ্য। আওয়ামী লীগ কোনো সংঘাত চায় না। তবে কেউ সহিংসতা করলে তাদের প্রতিহত করা হবে। অপরদিকে রাজপথের বিরোধীদল বিএনপি বলছে, সরকারের পদত্যাগ, বর্তমান সংসদ বিলুপ্ত, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন ও নতুন নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে নির্বাচন করার একদফা আন্দোলন ঘোষণা দেওয়া হবে বুধবার।