ঢাকা ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ৩১ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সুসংবাদ প্রতিদিন

ড্রাগন চাষে তাজের বছরে আয় ২০ লাখ টাকা

ড্রাগন চাষে তাজের বছরে আয় ২০ লাখ টাকা

উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়েও চাকরির পেছনে না ছুটে ড্রাগন ফল চাষ করে সফলতার মুখ দেখছেন গাজীপুরের যুবক বায়েজিদ বাপ্পি তাজ। প্রযুক্তি ও ইউটিউবের সহায়তায় বাবার পতিত জমিতে ড্রাগন চাষ শুরু করেন। তিনি প্রাথমিকভাবে ২ লাখ টাকা পুঁজি নিয়ে এই ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করেন। এর কয়েক বছরের ব্যবধানে এখন তার বাৎসরিক আয় ১৮ থেকে ২০ লাখ টাকা। ছেলের এমন সাফল্যে এখন বাবাও খুশি। তবে শুরুর গল্পটা এত সহজ ছিল না। ড্রাগন চাষের জন্য পরিবারের কাছে অর্থ-সহায়তা চাইলে তার বাবা তাকে নিরুৎসাহিত করেন। কিন্তু বাপ্পির যে স্বপ্ন তা থেমে যাননি। শিক্ষাজীবনে নিজের নামে থাকা একটি ব্যাংকের স্থায়ী আমানত ভেঙে ২ লাখ টাকা পান। সেই টাকা দিয়েই শুরু করেন স্বপ্নের কৃষি খামার। সেই খামারের নাম দেন তার বাবার নামে মমতাজ উদ্দিন ড্রাগন ফ্রুটস খামার। গাজীপুরের শ্রীপুরের মাওনা গ্রামের মমতাজ উদ্দিনের ছেলে বায়েজিদ বাপ্পী তাজ। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। আর এখন দিনের অধিকাংশ সময় ব্যয় করেন ড্রাগন চাষ সম্প্রসারণে। চারা তৈরি, এলাকার বেকার যুবকদের উৎসাহিত করা, প্রশিক্ষণ দেয়া, বাগান তৈরিতে সহায়তা করায় তার মূল কাজ। দীর্ঘ ৬ থেকে ৭ বছরে নিজের স্বপ্ন পূরণের পথে অনেকটা এগিয়ে গিয়ে এখন অন্যদেরও তিনি ড্রাগন ফল চাষে পথ দেখাচ্ছেন। ২০১৬ সালে মাত্র আটটি ড্রাগনের চারা নিয়ে যে স্বপ্ন শুরু করেছিলেন তাজ, কয়েক বছরের ব্যবধানে তার বাগানে এখন ফলযোগ্য ড্রাগন গাছ রয়েছে ১০ হাজারের ওপরে। এর মধ্যে বাণিজ্যিক উৎপাদনে তিনি আট ধরনের জাত ব্যবহার করলেও তার কাছে আরো বেশ কিছু উন্নত জাতও রয়েছে। প্রতিটি ড্রাগনগাছ বছরে ৮ মাস (শুধু শীতকাল বাদে) একাধারে ফল দেয়। প্রতিটি গাছ থেকে ২০ কেজি পর্যন্ত ফল পাওয়া যায়। বর্তমান বাজারে প্রতি কেজি ফল পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত। ৩ বছরে একটি ড্রাগন গাছ পরিপক্বতা অর্জন করে। ১৫ বছর পর্যন্ত ফল দিতে সক্ষম ড্রাগনগাছ। বায়েজিদ বাপ্পি তাজের বাবা মমতাজ উদ্দিন বলেন, বিদেশি ফল চাষের পেছনে আমি ছেলেকে প্রথমে নিরুৎসাহিত করি। পরে যখন দেখি তার বাগানে ফুল-ফল এসেছে, এরপর আমারও ভালো লাগা শুরু হয়। আমাদের দেশের আবহাওয়ার উপযোগী হওয়ায় বিদেশি ফলটি মানুষের মধ্যে জনপ্রিয় হচ্ছে। বাণিজ্যিক উৎপাদনে এসে বছরে ১৮ থেকে ২০ লাখ টাকা আয় করতে পারছি। তিনি বলেন, এখন মূল কাজ ড্রাগন ফলের চাষ সম্প্রসারণে আশপাশের মানুষদের প্রশিক্ষিত করে তোলা। চারা তৈরি করে বাগান তৈরিতে তাদের সহায়তা করা। এ পর্যন্ত প্রায় শতাধিক মানুষকে ছোট-বড় বাগান তৈরিতে সহায়তা করেছি। অনেকেই শখের বসে বাসার ছাদেও চাষ করছেন, ফলনও পাচ্ছেন। আমাদের এখানে কৃষি উদ্যোক্তা বায়েজিদ বাপ্পি তাজের সফলতা এলাকার অন্য যুবকদেরও পথ দেখাচ্ছে। আমাদের কৃষি বিভাগও তাদের সব ধরনের সহায়তা প্রদানে বদ্ধপরিকর।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত