অন্যরকম
পাখিদের মধ্যেও বিচ্ছেদ পরকীয়া!
প্রকাশ : ১১ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আলোকিত ডেস্ক
গাছগাছালির মধ্যে শরীর ডুবিয়ে কলকাকলিতে ঘুম ভাঙানোর গান শোনায় পাখিরা। প্রেমিকাকে ডাক পাঠানোর গান আবার আরেক। তাতে সুরও মিষ্টি। সুর তাল লয় ছন্দে প্রেম করত পাখিরা। তারপর পাশে থাকার অঙ্গীকার করত। তবে পাখিদের সেই প্রেমণ্ডবিয়েও নাকি এখন আর টিকছে না! ফটাফট প্রেম হচ্ছে আবার ঝটপট বিচ্ছেদও হয়ে যাচ্ছে। কেন পাখিদের মধ্যেও বিচ্ছেদ বাড়ছে তার ব্যাখ্যা করেছেন বিজ্ঞানীরা। রয়্যাল সোসাইটির জার্নাল ‘দ্য প্রসিডিংস’ দাবি করেছে, মানুষের মতো পাখি-সমাজেও বিচ্ছেদ বাড়ছে। চীন ও জার্মানির বিজ্ঞানীরা পাখিদের সংসারে নাক গলিয়ে দেখেছেন, পাখিদের দাম্পত্যে ঝগড়া বাড়ছে। সংসার নাকি টিকছেই না। এখনও পর্যন্ত ২৩২টি পাখি-দম্পতির বিচ্ছেদ দেখেছেন তারা। ব্যাপারটা আসলে খুবই মর্মান্তিক। বিজ্ঞানীরা বলছেন, আজকাল পরকীয়ায় জড়াচ্ছে পাখিরাও। সাধারণত, পুরুষ ও স্ত্রী পাখি গাঁটছড়া বাঁধার পরে প্রথম সন্তান আসা পর্যন্ত একসঙ্গেই থাকে। এটাই পাখিদের নিয়ম। বিজ্ঞানীদের দাবি, ইদানীং দেখা যাচ্ছে প্রথম ব্রিড হওয়ার আগেই পুরুষ পাখি বা স্ত্রী পাখি অন্য সঙ্গী খুঁজে নিচ্ছে। অথবা অন্য সঙ্গীর সঙ্গে গোপনে প্রেম করছে। সঙ্গীর একজন পরকীয়ায় জড়ালে, অন্যজন তা কিছুতেই মানতে পারছে না। ফলে বিচ্ছেদ। আবার এমনও দেখা যাচ্ছে, পাখি দম্পতির একজন অনেক দূরে উড়ে গিয়ে আর ফিরে আসছে না। সেখানেই অন্য সংসার পাতছে। ফলে বিচ্ছেদ হচ্ছে অচিরেই। অথিথি পাখিদের ক্ষেত্রে ঠিক এ কারণে বিচ্ছেদ বেশি হচ্ছে। ‘লং ডিসট্যান্স রিলেশনশিপ’ আজকাল পাখিরাও পছন্দ করছে না। পাখিদের মধ্যে অবসাদের প্রবণতাও দেখেছেন বিজ্ঞানীরা। তারা বলছেন, পাখিদের বিচ্ছেদের শুনে ব্যাপারটা হাস্যকৌতুক হিসেবে মনে হলেও মোটেও তা অস্বাভাবিক ব্যাপার নয়। ডিজিটাল সভ্যতার বাড়াবাড়ির কারণে পাখিদের পারস্পরিক কথোপকথন ও তাদের বংশবিস্তারের প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে। মানুষের মতো পাখিদেরও নিজেদের সমাজ, গোষ্ঠী থাকে। কিন্তু এখন পাখিরা নিজেদের বাসস্থান হারাচ্ছে। পাখিদের প্রেম আর জমছেই না। পাখিরা ভাব বিনিময়ের পদ্ধতিই ভুলে যাচ্ছে। এই গবেষণা আগামী পৃথিবীর কাছে এক অশনি সংকেতই বটে। গবেষকরা বলছেন, একটা সময় আসবে যখন পৃথিবী থেকে মুছে যাবে পাখির গান। হারিয়ে যাবে সব সুরেলা পাখিরা।