সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর পৌর এলাকার জনতা ব্যাংকের গ্রাহকের প্রায় অর্ধকোটি টাকা নিয়ে উধাও সেই পিয়ন (অস্থায়ী) আওলাদ হোসেন রঞ্জু আকন্দকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সে ওই এলাকার পারকোলা মহল্লার মৃত নুরুল হকের ছেলে। শাহজাদপুর থানার ওসি নজরুল ইসলাম মৃধা গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন এ তথ্য নিশ্চিত করেন। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে, গত ৬ জুলাই ওই জনতা ব্যাংকের গ্রাহক আবু হানিফ তার টাকা তুলতে এসে চেক জমা দিয়ে জানতে পারেন, তার অ্যাকাউন্টে কোনো টাকা নেই। তিনি তখন ব্যাংক কর্মকর্তাদের বলেন, গত ২ মে পিয়ন রঞ্জুর মাধ্যমে ৫ লাখ টাকা জমা দিয়েছি। পরে ব্যাংকের ম্যানেজার জেহাদুল ইসলামের মাধ্যমে জানা যায়, ওই তারিখে তার নামে কোনো ভাউচার নেই এবং ওই পিয়ন ঈদের ছুটির পর থেকে ব্যাংকে অনুপস্থিত। এভাবে সে ব্যাংকের সিল ও স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া ভাউচার তৈরি করে ২৫ জন গ্রাহকের প্রায় অর্ধকোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এ বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে গ্রাহকরা ব্যাংকে আসতে শুরু করেন। এ বিষয়ে ব্যাংকের ম্যানেজার সংশ্লিষ্ট থানায় একটি জিডি করেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল বিপিএম (বার) পিপিএম’র (বার) দিকনির্দেশনায় গত সোমবার রাতে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার পূর্ব মিয়াপাড়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, রঞ্জু ২০০৩ সালে স্থানীয় জনতা ব্যাংকের পিয়ন কাম পরিচ্ছন্নতা কর্মী (অস্থায়ী) পদে যোগদান করেন। ২০০৭ সালে তার কাজের পাশাপাশি ডেসপাসের কাজ শুরু করেন। ব্যাংকের প্রবেশ দ্বারে একটি ডেস্ক স্থাপন করে তিনি গ্রাহক অ্যাকাউন্ট খুলতে এলে ফরম পূরণ করে দিতেন। ২০১৬ সালের দিকে রঞ্জু ১৫ লাখ টাকা ঋণি হয়ে পড়েন। এ ঋণের টাকা পরিশোধের জন্য স্থানীয় কয়েকটি এনজিও থেকে তিনি ঋণ নেন। প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা কিস্তি দিতে হতো তাকে। ২০২২ সালের শুরুতে তিনি গ্রাহকদের কাছ থেকে জালিয়াতি করে টাকা নেয়ার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী পরিচিত লোকদের টার্গেট করে তাদের অ্যাকাউন্ট খুলে দিতে থাকেন। গ্রাহক যখন টাকা জমা দিতে আসতেন তখন তার কাছে টাকা দিয়ে চলে যেতেন। কিন্তু রঞ্জু ওই টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে নিজের কাছে রাখতেন এবং পরের দিন গ্রাহককে ভুয়া জমা রসিদ দিতেন। এ কৌশলে তিনি গ্রাহকদের সাথে প্রতারণা করেছেন বলে স্বীকারোক্তি দেন। সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।