ঢাকা ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

চিলমারী নৌবন্দর হতে পারে আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র

প্রয়োজন সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ
চিলমারী নৌবন্দর হতে পারে আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র

‘ওকি গাড়িয়াল ভাই হাঁকাও গাড়ি তুই চিলমারী বন্দরে’। পল্লিগীতি ও ভাওয়াইয়া গানের সম্রাট মরহুম কণ্ঠ শিল্পী আব্বাস উদ্দিনের গাওয়া এই গানটির আবেদন যুগ থেকে যুগে; প্রজন্ম থেকে প্রজন্মকে চিলমারী বন্দরের কাছে টানে। বিখ্যাত প্রাচীন এই বন্দর নগরী চিলমারীকে দেখতে প্রায় প্রতি দিনই শতাধিক মানুষ ছুটে আসে ব্রহ্মপুত্র নদের তটে, চিলমারী নৌবন্দরে। সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে চিলমারী বন্দরকে পর্যটনের আওতায় নিয়ে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলার। কুড়িগ্রাম জেলাতে তেমন কোনো আকর্ষণীয় পর্যটন এলাকা কিংবা ইকো পার্ক অথবা বিনোদনের জন্য উল্লেখ করার মতো নির্ধারিত জায়গা নেই। তাই কুড়িগ্রাম সদর থেকে শুরু করে লালমনির হাট ও রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে গড়ে ওঠা প্রাচীন নৌ বন্দর চিলমারীতেই ঘুরতে আসে। চিলমারী নৌ ঘাট থেকে নৌকা ভাড়া নিয়ে বিনোদনপ্রেমিরা নদী পেরিয়ে চলে যায় ব্রহ্মপুত্র নদের বুকে ভেসে ওঠা চরগুলোয়। ঘুরে বেড়ায় সেখানে মুক্ত হাওয়ায়। সাদা ঘাস ফুলের সাথে নিজেকে জড়িয়ে ছবি তুলে। বিকাল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দর্শনার্থীর ভিড়ে মুখরিত হয়ে ওঠে চিলমারী নৌ-ঘাট এলাকা (রমনা)। অনেক দর্শনার্থী অটোরিকশা নিয়ে দেখতে চলে যায় উপজেলার বাহারেরঘাট ব্রিজ, আকালুরঘাট ব্রিজ এলাকার মুক্ত বিলে। আবার অনেকে নৌকা নিয়ে চলে যায় নির্মাণাধীন হরিপুর-চিলমারী সেতু এলাকা ও ফকিরের হাট টি বাঁধে।

বিশেষ করে দুই ঈদের দিন থেকে ঈদ-পরবর্তী কয়েক দিন পর্যন্ত এসব স্থানে বিনোদনপ্রেমি মানুষের ভিড় বেড়ে যায়। উপজেলার কোথাও কোনো বিনোদন পার্ক না থাকায় ঈদের ছুটিতে ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ঘেঁষে ফকিরের হাট এলাকা থেকে জোড়গাছ বাজার এলাকা পর্যন্ত। সরকারি কিংবা ব্যক্তি উদ্যোগে এসব এলাকায় বিনোদন পার্ক কিংবা বসার স্থান করা হলে শুধু স্থানীয়রা নয়, বাহির থেকেও দর্শনার্থী চলে আসবে গাড়িয়াল বন্ধুর টানে এই চিলমারীতে। এমনটাই মনে করছেন এখানকার সচেতন মহল।

গেল দুটি ঈদের দিন বিকালে সরেজমিন বাহারেরঘাট এলাকায় দেখা যায় ব্রিজের সামনের বিলের রাস্তা ধরে প্রায় ১ কিলোমিটার এলাকায় তিল ধারনের জায়গায় নেই। বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ সেখানে ভিড় করেন। রাস্তার ওপর কয়েকটি ঝালমুড়ি, আচার, বাদাম ও হরেকরকম আলপনার দোকান বসেছে।

সেখান থেকে দর্শনার্থীরা নিজেদের ইচ্ছামতো বাদাম, ঝালমুড়ি ও আচার কিনে খাচ্ছে। একই অবস্থা দেখা গেছে আকালুরঘাট ব্রিজসহ বিভিন্ন স্পটে। হাজার নারী-পুরুষ শিশু, বৃদ্ধসহ নানা বয়সি হাজার হাজার মানুষের ভিড় জমেছিল চিলমারী নৌ বন্দরে। পড়ন্ত বিকালে চিলমারী রমনা নৌ বন্দরে গিয়ে বন্দরের পল্টুনে উঠে ছবি তুলতে দেখা যান অনেক নারী-পুরুষকে। ব্রহ্মপুত্র নদের তীরঘেঁসে অনেক মানুষকে ঘুরে বেড়ায়। এ সময় কথা হয় কুড়িগ্রাম থেকে নৌ বন্দরে মা বাবার সাথে বেড়াতে আসা মৌসুমী (১৮), টিনা (২০) রাসেল (১৪), উলিপুর থেকে বেড়াতে আসা তিনা (২৩), জুলফিকার আলী (৫০), মাজেদা বেগমসহ (৪০) অনেকের সাথে। তাদের সবার একটাই দাবি, চিলমারীকে পর্যটন এলাকা সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা করে বিনোদনের জন্য নানা উদ্যোগ নেয়া হোক। সরকারি কিংবা ব্যক্তি উদ্যোগে এসব এলাকায় বিনোদন পার্ক কিংবা বসার স্থান করা হলে শুধু স্থানীয়রা নয়, বাহির থেকেও প্রচুর দর্শনার্থী চিলমারীতে আসবে বলেই তাদের ধারণা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত