ছবিটি হঠাৎ করে দেখলে মনে হবে কোনো এক সাধারণ বাঙালি নারী চোখের চিকিৎসা করাতে রাজধানীর জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের বহির্বিভাগের সামনে অপেক্ষা করছেন। তবে একটু খেয়াল করলে এবং ভালো করে পরখ করলে দেখা যাবে, তিনি আর কেউ নন, তিনি হচ্ছেন আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা। এদেশের সাধারণ মানুষের মতো তিনিও নিয়মিত ওই হাসপাতালে তার চক্ষু পরীক্ষা করান। তিনি যখনই ওই হাসপাতালে চোখের চিকিৎসার জন্য যান, নিজে দাঁড়িয়ে থেকে ১০ টাকা দিয়ে চিকিৎসার সিøপটি গ্রহণ করেন। ডাক্তার দেখান, কারো কারো সঙ্গে হাসিমুখে ছবিও তোলেন। এদেশের সরকারপ্রধান হয়ে তিনি লাইনে দাঁড়িয়ে এবং বহির্বিভাগে চিকিৎসকদের কাছ থেকে সেবা নেয়ার মধ্যদিয়ে এদেশে এক অন্যন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন। কোনো প্রকার ইতস্ততা বোধ না করে অত্যন্ত স্বাভাবিকভাবে তিনি টিকিট কেটে আবারও চিকিৎসা নিলেন গতকাল। এদেশের সাধারণ মানুষ যেমন হাসপাতালের বহির্বিভাগের সামনে সুশৃঙ্খলভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে ১০ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সেবা দেন, প্রধানমন্ত্রী ঠিক তেমনিভাবে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের বহির্বিভাগে চেখের চিকিৎসা নিলেন। চোখ পরীক্ষা শেষে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল ঘুরে দেখেন এবং এর বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হন। এ সময় হাসপাতালে উপস্থিত রোগীদের সঙ্গে তিনি কথা বলেন, তাদের কাছে দোয়া চান এবং তাদের সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী নিজেও দোয়া করেন। এ দেশের জনগণের ভোটে প্রধানমন্ত্রী হয়ে সাধারণ বেশে শেখ হাসিনার ১০ টাকা দিয়ে চিকিৎসা গ্রহণের মধ্য তিনিও সাধারণ মানুষের কাতারে মিশে গেলেন। সাধারণ মানুষ তাকে তাদের অত্যন্ত একজন আপনজন হিসেবে অনুভব করতে পেরেছেন। ওই সময় হাসপাতালটিতে রোগী এবং রোগীর আত্মীয়স্বজন ও দর্শানার্থী ছিলেন। তারা দেশের প্রধানমন্ত্রীকে তাদের মাঝে পেয়ে উল্লসিত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর আগমনে এই হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও কর্মকর্তা ও কমী রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেয়ার ক্ষেত্রে অনুপ্রাণিত ও অধিকতর দায়িত্বশীল হয়েছেন। এর বাইরে যারা আছেন তারাও ভেবেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আসলেই বঙ্গবন্ধুর যোগ্য উত্তরসূরি এবং এদেশের আপামর মানুষের একজন আপনজন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশের চিকিৎসাসেবার মানোন্নয়নে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তার চিন্তার ফসল কমিউনিটি ক্লিনিক আজ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছে একটি মডেল হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়ার জন্য তিনি যে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করেছেন সেখান থেকে মানুষ সব ধরনের চিকিৎসা পাচ্ছে। সেই সঙ্গে পাচ্ছে বিনা পয়সায় সরকারি ওষুধ।
আওয়ামী লীগ সরকার দেশের উপজেলা, জেলা এবং বিভাগীয় পর্যায়ে গড়ে উঠা সরকারি হাসপতালের শয্যাসংখ্যাই বৃদ্ধি করেনি। চিকিৎসা যন্ত্রপাতির আমদানি শুল্ক কমিয়ে দেয়ার মধ্যদিয়ে দেশের বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে উঠা হাসপাতাল ও ক্লিনিকে এখন আধুনিক যন্ত্রপাতির সাহায্যে চিকিৎসা প্রদান ও জটিল রোগ নির্ণয়ে পরীক্ষা করা হচ্ছে। রাজধানীর ঢাকার বাইরে বিশেষায়িত চিকিৎসা বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার চিন্তা চেতনাও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। দেশের সকল হাসপাতালে যাতে মানুষ সব ধরনের চিকিৎসা পায় সেই ব্যবস্থা আওয়ামী লীগ সরকার করেছে। বৈশ্বিক করোনাকালে বিশেষ বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে ডাক্তার নিয়োগ এবং সেই অনুপাতে নার্স ও টেকনিশিয়ান নিয়োগ করার মধ্যদিয়ে শেখ হাসিনার সরকার করোনা পরিস্থিতি অত্যন্ত সাফল্যের সঙ্গে মোকাবিলা করেছেন। করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলার মধ্যদিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোল মডেলে পরিণত হয়েছেন। বিনা পয়সায় করোনা চিকিৎসার পাশাপাশি করোনার টিকার চতুর্থ ডোজও পেয়েছেন অনেকে। গুরুত্বপূর্ণ এই চারটি ডোজ নিজের পকেটের পয়সা খরচ করে গ্রহণ করার সামর্থ্য এদেশের অধিকাংশ মানুষের নেই। অথচ বিনা পয়সায় করোনার ডোজগুলো নিয়ে মানুষ এখন অনেকটা দুশ্চিন্তামুক্ত জীবন যাপন করছেন। এসব কিছুর মূলে রয়েছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।