বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সব ছাত্র সংগঠনের রাজনীতি নিষিদ্ধ করে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) কর্তৃপক্ষ। কিন্তু নিষিদ্ধের পরেও গত বৃহস্পতিবার ঘোষিত কেন্দ্রীয় কমিটিতে বুয়েটের দুই নিয়মিত শিক্ষার্থীকে পদায়ন করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। শুধু তাই নয়, অতীতে বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত ও ছাত্রলীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের অঞ্চলের নেতাকর্মীরা কমিটিতে বিভিন্ন পদ পেয়েছেন।
জানা যায়, পদ পাওয়া বুয়েটের দুই শিক্ষার্থীর একজন হলেন, হাসিন আজফার পান্থ। তাকে তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। হাসিন বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের ১৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। এছাড়া বুয়েটের অপর শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেন রাহিমকে সদস্য পদ দেয়া হয়েছে। যিনি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। হাসিন বুয়েটের আহসান উল্লাহ হল ও রাহিম তিতুমীর হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। তারা দুজনেই বুয়েটের নিয়মিত শিক্ষার্থী।
সব ধরনের ছাত্র সংগঠনের রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকার পরেও ছাত্রলীগের কমিটিতে বুয়েট শিক্ষার্থীদের পদায়নে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। অনেকেই একে বুয়েটে ছাত্রলীগের রাজনীতিকে প্রবেশ করানোর কৌশল হিসেবে দেখছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বুয়েট শিক্ষার্থী বলেন, ‘ছাত্রলীগের কমিটিতে বুয়েট শিক্ষার্থীদের পদ দেয়ার মানে হচ্ছে তারা আবারো এখানে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছে এবং এই কাজটি করতে গিয়ে তারা ধীরে ধীরে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছে; এটিও তার একটি অংশ।’
রাজনীতি নিষিদ্ধের পরেও বুয়েট শিক্ষার্থীদের ছাত্রলীগে কেন পদায়ন করা হয়েছে- এমন প্রশ্নের জবাবে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, বুয়েটে ছাত্রলীগের কোনো কমিটি দেয়া হয়নি। যাদের পদ দেয়া হয়েছে তারা কেন্দ্রীয় কমিটিতে কাজ করবেন; বুয়েটের হয়ে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ এবং এখানো কোনো কমিটি বা ছাত্ররাজনীতি থাকতে পারবে না। কেউ যদি ক্যাম্পাসের বাইরে গিয়ে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকে, সেটা আমাদের বিধিনিষেধের মধ্যে পড়ে না। চলমান কোনো শিক্ষার্থী রাজনৈতিক পদ ধারণ করার প্রজ্ঞাপনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আবরার ফাহাদের মৃত্যুর পর যে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে, সেখানে বলা হয়েছে, ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ। এখন তারা (দুজন পদধারী) যদি ক্যাম্পাসের মধ্যে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে, নিয়ম অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এছাড়া বিতর্কিতরাও পেয়েছেন ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ণ পদ। গত বছরের ডিসেম্বরে দায়িত্ব পেয়ে বিতর্কিতদের কমিটিতে ঠাঁই না দেওয়ার ঘোষণা দেন সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান। কিন্তু তাদের এ ঘোষণার পরেও গত বৃহস্পতিবার দেয়া সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ পেয়েছেন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে অভিযুক্তরা। ৩০১ সদস্যের এ কমিটিতে চাঁদাবাজি, যৌন হেনস্তা, সিট-বাণিজ্য, মারধর, কক্ষ দখলের অভিযোগ থাকা নেতারাও স্থান পেয়েছেন। ধর্ষণের অভিযোগও আছে একজনের বিরুদ্ধে। সংগঠন থেকে বহিষ্কৃত ও অব্যাহতি পাওয়া কয়েকজনও পদ পেয়েছেন। সূত্র জানায়, ১নং সহ-সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব দীর্ঘদিন রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় ছিলেন। সহ-সভাপতি তাহসান আহমেদ রাসেলের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। ধার দেওয়া ক্যালকুলেটর ফেরত চাওয়ায় তার অনুসারীদের নির্যাতনে এহসান রফিক নামে এক শিক্ষার্থীর চোখ মারাত্মকভাবে জখম হয়। পরবর্তীতে নিরাপত্তাহীনতার কারণে সেই শিক্ষার্থী দেশ ছেড়ে চলে যান। সহ-সভাপতি সানোয়ার পারভেজ পুলক ছাত্রলীগ থেকে সাবেক হওয়ার পর যুবলীগে যোগ দেন। যুবলীগের পদবঞ্চিত হওয়ায় তিনি ঠাকুরগাঁও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের পদ প্রত্যাশী ছিলেন। সাদ্দামের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হওয়ায় পরবর্তীতে তিনি আবার ছাত্রলীগে সক্রিয় হন। সহ-সভাপতি শাহেদ খান বর্তমানে ঠিকাদারি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসীমউদ্দীন হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক থাকাকালে তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। সহ-সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভার ও উপ-পাঠাগার সম্পাদক রাজিয়া সুলতানার বিরুদ্ধে ইডেন কলেজে শিক্ষার্থী নির্যাতন, চাঁদাবাজিসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। রিভার অডিও ফাঁসকাণ্ডে ইডেন কলেজে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল। ২নং সদস্য হাসমত উল্লাহ শাওনের বাবা মো. মানিক খাঁন মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার ১১নং চাঁনপুর ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি। তার বড় ভাই মোহাম্মদ রিয়াজ খান ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শ্রমিক দলের সদস্য সচিব, মেজ ভাই ফয়সাল মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার চাঁনপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সদস্য সচিব এবং শাওন নিজেও ইউনিয়ন ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। শাওনের পূর্বপুরুষ প্রত্যেকেই কট্টরপন্থি বিএনপি রাজনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে।
দীর্ঘদিন রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় ছিলেন সহ-সভাপতি আবু সাইদ কনক। ৩ থেকে ৪ বছর তাকে কোনো কর্মসূচিতে দেখা যায়নি। পরবর্তীতে সাদ্দাম সভাপতি হওয়ার পর তিনি সক্রিয় হন। সহ-সভাপতি আব্দুল আলিম খানও ডাকসু নির্বাচনের পর রাজনীতি থেকে আড়ালে চলে যান। সাদ্দাম সভাপতি হওয়ার পর মাইম্যান হিসেবে আবারো তার আবির্ভাব ঘটে। সহ-সভাপতি মো. শাহজালালের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ২২ ডিসেম্বর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের সামনে রোকেয়া হলের সাবেক এজিএস ও নতুন কমিটির উপ-সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সম্পাদক ফাল্গুনী দাস তন্বীকে মারধরের অভিযোগে মামলা রয়েছে। ওই মামলায় আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করেছিলেন।
গত বছরের মার্চে রাজধানীর আনন্দবাজারের ৭টি দোকান থেকে এককালীন ১০ লাখ ও প্রতি মাসে ১ লাখ টাকা করে চাঁদা দাবি করেন অমর একুশে হল ছাত্রলীগের সভাপতি এনায়েত এইচ মনন ও সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুল হাসান সোহাগ; যা দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল। শুধু তাই নয়, রাজধানীর বঙ্গবাজারে চাঁদাবাজি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ থেকে অব্যাহতি পান ইমদাদুল হাসান সোহাগ। এরপরও এনায়েত এইচ মনন উপ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও ইমদাদুল হাসান সোহাগ উপ-বিজ্ঞান সম্পাদকের পদ পেয়েছেন। আল আমিন রহমানের বিরুদ্ধে ঢাবি অধিভুক্ত সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে ২০১৮ সালে আন্দোলনরত ছাত্রীদের যৌন হেনস্তার অভিযোগ রয়েছে।
শেখ শামীম আহম্মেদ তূর্য্যরে বিরুদ্ধে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের এক ছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে হোটেলে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগের সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। ঢাবির মাস্টারদা সূর্য সেন হলের কক্ষ থেকে বরাদ্দ পাওয়া ছাত্রকে বের করে দিয়ে নিজের কর্মীদের তোলার অভিযোগ রয়েছে সৈয়দ শরিফুল ইসলাম শপুর বিরুদ্ধে। ২০২০ সালের ২১ জানুয়ারি শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের চার শিক্ষার্থীকে ছাত্রশিবির সন্দেহে মারধর করে হলছাড়া করার অভিযোগ আছে সাইফুল্লা আব্বাছী অনন্তের বিরুদ্ধে। একই অভিযোগ রয়েছে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন রানা ও উপ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক আমির হামজার বিরুদ্ধেও। হামজার বিরুদ্ধে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও গণমাধ্যমকর্মীকে মারধরের অভিযোগও রয়েছে।
গভর্নমেন্ট কলেজ অব অ্যাপ্লাইড হিউম্যান সায়েন্স (হোম ইকোনমিকস) কলেজ শাখার সভাপতি শারমিন সুলতানা সনি ও সাধারণ সম্পাদক আকলিমা আক্তার প্রভাতী যথাক্রমে উপ-উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবন সম্পাদক এবং উপ-সাহিত্য সম্পাদক পদ পেয়েছেন। তাদের দুজনের বিরুদ্ধেই কলেজের সামনে লেগুনাস্ট্যান্ড ও ফুটপাতের দোকান থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। আরেক উপ-সাহিত্য সম্পাদক ও বদরুন্নেসা কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক হাবিবা আক্তার সাইমনের বিরুদ্ধে হোস্টেলের রুম দখল ও মারধরের অভিযোগ রয়েছে।
মারধর করে বহিষ্কৃত হন আরিফুল ইসলাম। এখন পদ পেয়েছেন উপ-প্রশিক্ষণ সম্পাদকের। সাংগঠনিক সম্পাদক তানভীর শিকদার ও শিক্ষা পাঠচক্র সম্পাদক মো. মিশাত সরকারের বিরুদ্ধে পলাশী বাজারের মালিক সমিতি ও এক জুসের দোকানদারের কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগ রয়েছে। ২০১৮ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ মিনারে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মারধরের অভিযোগ রয়েছে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু ইউনুসের বিরুদ্ধে। বিজয় একাত্তর হলের প্রাধ্যক্ষের কক্ষ ভাঙচুরের অভিযোগে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ও ছাত্রলীগ থেকে সাময়িক বহিষ্কৃত হয়েছিলেন। চাঁদা না পেয়ে কর্মী পাঠিয়ে লেগুনা ভাঙচুর ও মালিকদের মারধরের অভিযোগ আছে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুনেম শাহরিয়ার মুন ও উপশিক্ষা পাঠচক্র সম্পাদক রিয়াজুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
টিএসসিতে মাতাল অবস্থায় মেয়েদের ওয়াশরুমে প্রবেশ করে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির অভিযোগ উঠেছিল উপ-স্কুলছাত্র সম্পাদক তানজিন এ আলামিনের বিরুদ্ধে। টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার পশ্চিম কালীদাস পানাউল্লা পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে যোগ দেওয়া জেবুন্নাহার শিলা পেয়েছেন সদস্য পদ।
নতুন কমিটিতে আঞ্চলিকতায় প্রাধান্য, সিনিয়র-জুনিয়র অনুসরণ না করে পদায়নেরও অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া কমিটিতে পদ পাওয়া অনেকেই আবার কমিটি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন। তারা জানান, সংগঠনের জন্য দিন-রাত পরিশ্রম ও সব কর্মসূচিতে অংশ নিয়েও কাঙ্ক্ষিত পদ পাননি অথবা কমিটিতেই জায়গা হয়নি। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের এলাকা থেকে পদায়ন করা হয়েছে। যদিও কেন্দ্রীয় কমিটিতে সারা দেশ থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নেতা থাকবেন বলে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা দিলেও তার প্রতিফলন পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সহ-সভাপতি করা হয়েছে ৭১ জনকে। এর আগে এই পদে ৬১ জন থাকলেও এবার কমিটির আকার অপরিবর্তিত রেখে এই পদ ১০টি বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া কমিটিতে যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ১১ জন এবং সাংগঠনিক সম্পাদক রয়েছেন ১১ জন। ৩০১ সদস্যবিশিষ্ট এই কমিটিতে সভাপতি সাদ্দাম হোসাইনের নিজ অঞ্চল উত্তরবঙ্গ এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের অঞ্চল বরিশাল হতেই পদায়িত করা হয়েছে প্রায় এক-তৃতীয়াংশকে। সংখ্যার হিসেবে যেটি প্রায় ৯০ জন। এর মধ্যে সহ-সভাপতি পদে ১৪ জন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক তিনজন, সাংগঠনিক সম্পাদক ছয়জন, সম্পাদক ১০ জন, উপ-সম্পাদক ৩৯ জন, সহ-সম্পাদক ছয়জন। এক্ষেত্রে সিলেট ও ময়মনসিংহ অঞ্চল নেতৃত্বে আসার ক্ষেত্রে তলানিতে রয়েছে। ঢাকার বাইরে থেকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে মাত্র আটজন স্থান পেয়েছেন।
৩০১ সদস্যের এই কমিটির মধ্যে সবচেয়ে বেশি পদ পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। সংখ্যায় ২২৬ জন যা মোট সংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে মাত্র দুইজন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একজন করে সদস্য করা হয়েছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির একমাত্র সদস্য হলেন আদনান হোসেন। তাকে সহ-সম্পাদক করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে একমাত্র ব্যক্তি হলেন কাজী নূর-উন-নবী। তাকে দেয়া হয়েছে উপ-গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদকের পদ।
সার্বিক বিষয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘ফৌজদারি অপরাধ, চাঁদাবাজি ইত্যাদি প্রমাণ হওয়ার বিষয়। গণমাধ্যমে তো সংবাদ আসেই। তবে কেউ যদি আইনানুগ প্রক্রিয়ায় অপরাধী হয়, তাহলে আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব। এরকম কিছু আমরা পাইনি। সব অঞ্চল থেকে পদায়ন করা হয়েছে। কোনো ধরনের আঞ্চলিক প্রাধান্য দেয়া হয়নি।’ জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন প্রশ্নে সাদ্দাম বলেন, ‘যে যেই পদের যোগ্য তাকে সেই পদ দেওয়া হয়েছে। সাংগঠনিক দক্ষতা বিবেচনায় পরে অন্যদেরও উপকমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।’
সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, ‘একজন চাকরি ছেড়ে দিয়ে মাস্টার্স করছেন। তাই তাকে পদায়ন করা হয়েছে। এছাড়া অনেকে পার্টটাইম চাকরি করেন। সেটা করতেই পারে। করোনা বিবেচনায় বয়স শিথিল করা হয়েছে। নারীর ক্ষমতায়ন লক্ষ্য রেখে অনেক ক্ষেত্রে জুনিয়রকে সিনিয়রের ওপরে রাখা হয়েছে। ফাল্গুনী দাস তন্বীকে মারধরকারী মো. শাহজালালকে পদ দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘শাহজালালের বিষয়টি আদালতে রয়েছে, দোষী প্রমাণিত হলে তার এই পদে থাকার সুযোগ থাকবে না।’