সরকারের ভুল থাকবে, দেখতে হবে দেশটা এগিয়ে গেছে কি না
রাঙ্গুনিয়া সমিতির সুধী সমাবেশে তথ্যমন্ত্রী
প্রকাশ : ১৭ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টগ্রাম ব্যুরো
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সরকার পরিচালনা করতে গিয়ে নিশ্চয়ই আমাদের ভুলত্রুটি থাকবে, ভুলত্রুটি মানুষেরই হয়। পৃথিবীর কোনো সরকার শতভাগ নির্ভুল কিছু করতে পারে না। ৫০০ বছর অতীতের সরকারেও ভুল ছিল, আগামী ৫০০ বছর পরের সরকারেরও ভুল থাকবে। তবে দেখতে হবে সরকার দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে গেছে কি না। কেউ স্বীকার করুক বা না করুক, গত সাড়ে ১৪ বছরে দেশ এগিয়ে গেছে। গত শনিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম শহরস্থ রাঙ্গুগুনিয়া সমিতি আয়োজিত সুধী সমাবেশে রাজধানীর গ্রীন রোডের বাসা থেকে অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
নিজের নির্বাচনি এলাকা রাঙ্গুগুনিয়া উপজেলার সুধীজনের উদ্দেশ্যে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সরকারের এই অগ্রযাত্রা যাতে অব্যাহত থাকে, সেজন্য আপনাদের সহযোগিতা চাই। আমি সব দল ও মতের মানুষের এমপি হওয়ার চেষ্টা করেছি। গত সাড়ে ১৪ বছর সবার জন্য আমার দুয়ার খোলা ছিল। ভবিষ্যতেও যদি কোনো নিবেদন নিয়ে আপনাদের দুয়ারে আসি, দয়া করে আপনাদের দুয়ারটাও দলমত নির্বিশেষে খোলা রাখবেন, সেটিই আপনাদের কাছে আমার প্রত্যাশা।
তিনি বলেন, আমার দলের নেতাকর্মীদের সবসময় বলি ক্ষমতায় থাকলে বিনয়ী হতে হয়, মাথা নিচু করে চলতে হয়, বিনয় মানুষকে মহান করে। আমি চেষ্টা করছি আপনাদের পাশে থাকার। সরকারের মন্ত্রী ও দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি আমি প্রতি সপ্তাহে চট্টগ্রামে ও রাঙ্গুনিয়ায় যাই।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান বলেন, রাঙ্গুনিয়া একটি কৃষিপ্রধান জনপদ। চাষাবাদে সুবিধার জন্য তিনটি রাবার ড্যাম নির্মাণ করা হয়েছে। আমাদের প্রচুর কৃষিজমি আছে। আগে রাঙ্গুনিয়া থেকে কৃষিপণ্য শহরে আসত, এখনো আসে। তবে, এখন কিছু কিছু কৃষিপণ্য শহর থেকে রাঙ্গুনিয়া যাওয়া শুরু করেছে। প্রচুর কৃষিজমি অনাবাদি পড়ে রয়েছে। রাঙ্গুনিয়ায় কৃষিজমি অনাবাদি পড়ে থাকার কারণ নেই।
তিনি বলেন, অনেক ছেলে বিদেশে গেছে, সেখান থেকে টাকা পাঠায়, পরিবারে অন্যরা কাজ না করে জমিগুলো অনাবাদি ফেলে রেখেছে, এতে দেশের ক্ষতি হচ্ছে। রাঙ্গুনিয়ার কোনো কৃষিজমি যাতে অনাবাদি না থাকে, সেদিকে সবাইকে নজর দিতে হবে। কালিন্দীরাণী সড়ক ও মরিয়মনগর ডিসি সড়ক প্রশস্তকরণের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।
রাঙ্গুনিয়ার উন্নয়ন নিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, গত সাড়ে ১৪ বছরে এমন কোনো স্কুল, কলেজ ও আলিয়া মাদ্রাসা নেই; নতুন ভবন হয়নি। এমন কোনো বেসরকারি মাদ্রাসা, মসজিদ, মন্দির ও প্যাগোডা নেই, বরাদ্দ পায়নি। নতুনভাবে ২৮টি মসজিদ নির্মিত হয়েছে। আগেও অনেকে রাঙ্গুনিয়া থেকে নির্বাচিত এমপি ও মন্ত্রী ছিল। তারা কতটুকু করতে পেরেছেন, আপনারা জানেন।
তিনি বলেন, আমি চেষ্টা করেছি রাঙ্গুনিয়ার মানুষের কল্যাণে কাজ করার। কয়েক হাজার ছেলেমেয়ের চাকরি হয়েছে। বিএনপি করে এমন পরিবারের চাকরিও আমার হাত দিয়ে হয়েছে। ১৪ বছর আগে রাঙ্গুনিয়ার অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম মরিয়মনগর ডিসি সড়ক, পারুয়া ডিসি সড়ক ও কালিন্দীরাণী সড়কের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। আজকে রাঙ্গুনিয়ার সমস্ত রাস্তাঘাট পিচঢালাই হয়ে গেছে। এভাবে রাঙ্গুনিয়ার প্রতিটি গ্রাম ও জনপদ বদলে গেছে। আপনারা যদি ভবিষ্যতেও সুযোগ দেন তাহলে মানুষের পাশে থাকার সেই চেষ্টা আমার সব সময় থাকবে।
চট্টগ্রাম নগরীর ষোলশহরস্থ এলজিইডি ভবনের কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী মিলনায়তনে রাঙ্গুনিয়া সমিতির আহ্বায়ক খালেদ মাহমুদের সভাপতিত্বে সুধী সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন চুয়েটের ভিসি ড. রফিকুল আলম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. সেকান্দর চৌধুরী, এলজিইডির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তফাজ্জল হোসেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক হিন্দোল দাশ, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান স্বজন কুমার তালুকদার, জেলা পরিষদ সদস্য আবুল কাশেম চিশতি, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা আরহাজ জহির আহমদ চৌধুরী, সিডিএ’র বোর্ড সদস্য মুহাম্মদ আলী শাহ, জেলা রেড ক্রিসেন্টের সাধারণ সম্পাদক মাস্টার আসলাম
খাঁন, আবুধাবী বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি ইফতেখার হোসেন বাবুল প্রমুখ।