ঢাকা ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১৫ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

অন্যরকম

মাটি খুঁড়লেই কোটি টাকার হীরা!

মাটি খুঁড়লেই কোটি টাকার হীরা!

ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্য এমন এক অঞ্চল যেখানে প্রায়ই মাটি খুঁড়ে পাওয়া যায় কোটি টাকার হীরা। সেখানে খরিফ মৌসুম শুরুর আগে চাষের জমিতে কাজ করতে গিয়ে এক লহমায় ভাগ্য বদলে গিয়েছিল এক দিনমজুরের। জমিতে কোদাল চালাতেই হাতে উঠে এসেছিলে একটি হীরা। সেটি ২ কোটি রুপিতে বিক্রি করেছিলেন তিনি। অন্ধ্রপ্রদেশের কুর্নুল জেলার ওই অখ্যাত দিনমজুরের আগে এভাবেই ভাগ্য ফিরেছে বহুজনের। গ্রীষ্মের রুক্ষ জমিতে অঝোরে বৃষ্টি নামলেই নরম মাটি সরে গিয়ে বেরিয়ে যায় হীরাসহ নানান দামি রত্ন। মূলত অন্ধ্রের অনন্তপুর ও কুর্নুল জেলার মধ্যেকার এলাকায় হিরার খোঁজ মেলে। বর্ষা এলেই রায়লসীমাসহ অন্ধ্রের নানা এলাকায় হীরা খোঁজার ‘মৌসুম’ শুরু হয়ে যায়। গণমাধ্যমের দাবি, ২০২১ সালে জন্নাগিরি গ্রামে ২ কোটি ৪ লাখ রুপির হীরা খুঁজে পেয়েছিলেন তিনজন। গত বছর একটি হীরা খুঁজে পাওয়ায় অন্ধ্রের এক কৃষকের ঘরে ঢুকেছিল ৪০ লাখ রুপি। আবার ৩০ ক্যারাটের হীরা মেলায় অন্য এক কৃষক ১ কোটি ৪ লাখ রুপি পেয়েছিলেন।

স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৯ সালে একটি হীরার জন্য ৬০ লাখ টাকা পান এক কৃষক। পরের বছর অন্ধ্রের দুই বাসিন্দার ভাগ্যবদল হয়েছিল। দুটি দামি রত্ন খুঁজে পেয়েছিলেন তারা। তবে সে দুটি যথাক্রমে পাঁচ এবং ছয় লাখ অর্থমূল্যের হলেও নাকি মোটে দেড় লাখ ও ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছিলেন তারা। মধ্যযুগে বিজয়নগর সাম্রাজ্যের রমরমার সময় হীরা-জহরতের জন্য খ্যাতি ছিল রায়লসীমা অঞ্চলের।

কথিত আছে, ওই সময় শাকসবজি বিক্রির মতো হীরাসহ নানান দামি রত্নের বিক্রিবাট্টা চলত হাম্পিতে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দামি রত্নের কেনাবেচার ধরনে বদল এসেছে। তবে দশকের পর দশক ধরে কুর্নুল জেলার তু¹লি, জন্নাগিরি, মদ্দিকেরা ও অনন্তপুরের বজ্রকরুর এলাকায় বর্ষাকালে ‘হীরার ফসল’ তোলেন বহুজন। অন্ধ্রের নানান প্রান্ত থেকে বর্ষায় এই এলাকাগুলোতে জড়ো হন হীরা শিকারিরা। স্থানীয়রা ছাড়া পাশের রাজ্য কর্ণাটক, তেলঙ্গানা থেকেও রায়লসীমায় ভিড় করেন অনেকে। এই ভিড়ের মধ্যে হীরা ব্যবসায়ীরাও রয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জন্নাগিরি গ্রামের এক বাসিন্দার দাবি, চাষের জমিতে একটি হীরা খুঁজে পেয়েছিলেন। তবে পুলিশ প্রশাসনের থেকে হেনস্তার ভয়ে এবং নিজের সুরক্ষার কথা ভেবে সেটা দেড় কোটি টাকায় বিক্রি করেন। তার সন্দেহ, ওই হীরার দাম আরও বেশি। ওই বাসিন্দার আরও দাবি, হীরা বিক্রির পর পুলিশকে ছয় লাখ এবং রাজস্ব দপ্তরকে চার লাখ টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে। বাকি টাকায় তার যাবতীয় ঋণ শোধ করেছেন। বর্ষার মৌসুমেই অন্ধ্রের জমিতে হীরা ‘ফলে’ কেন? তার কারণ খুঁজতে অন্ধ্রের মাটিতে কোনো গবেষণা হয়নি। তবে একমাত্র বৃষ্টির মৌসুমেই জমির ওপরে উঠে আসে দামি পাথরগুলো। খনি বিশেষজ্ঞ এবং ভূতত্ত্ববিদদের মতে, এই এলাকাগুলোতে সরকারি উদ্যোগে গবেষণা চালানো উচিত।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত