বিশ্বের গড় তাপমাত্রার রেকর্ড ভেঙেছে চলতি মাসে। ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির বেশি দেখা যাচ্ছে। অন্যদিকে আমেরিকার বেশ কিছু অঞ্চলেও ভয়াবহ গরম মোকাবিলা করছেন মানুষ।
এই পরিস্থিতিতে সামনে এসেছে ভয়ঙ্কর তথ্য। বলা হচ্ছে, চলমান জুলাই মাস হতে পারে শত শত বছরের মধ্যে সবচেয়ে উষ্ণ মাস। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা নাসার এক বিশেষজ্ঞ একথা জানিয়েছেন।
গতকাল শুক্রবার আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের জুলাই ‘হাজার বছরের মধ্যে না হলেও শত শত বছরের মধ্যে’ সম্ভবত বিশ্বের সবচেয়ে উষ্ণতম মাস হবে বলে মন্তব্য করেছেন নাসার শীর্ষ জলবায়ুবিদ গ্যাভিন শ্মিট। গত বৃহস্পতিবার তিনি এই মন্তব্য করেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং মেইন ইউনিভার্সিটির পরিচালিত সরঞ্জামের হিসাব অনুসারে এরইমধ্যে এই গরম ও তাপপ্রবাহের দৈনিক রেকর্ডগুলো ভেঙে গেছে।
সাংবাদিকদের সঙ্গে বৃহস্পতিবার নাসার ব্রিফিংয়ে গ্যাভিন শ্মিট বলেন, যদিও এই দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সামান্য মতভিন্নতা রয়েছে তারপরও প্রচণ্ড তাপের প্রবণতাটি সন্দেহাতীত এবং এই বিষয়টি সম্ভবত মার্কিন সংস্থাগুলোর প্রস্তুতকৃত মাসিক প্রতিবেদনে আরো দৃঢ়ভাবে প্রতিফলিত হবে। তিনি আরো বলেন, ‘আমরা সারা বিশ্বে অভূতপূর্ব পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছি। আমরা ইউরোপে, চীনে এবং যুক্তরাষ্ট্রে যে তাপপ্রবাহ দেখছি তা আসলে সব রেকর্ড ভেঙে ফেলছে।’ তিনি বলেন, তাপপ্রবাহের এই প্রভাবগুলোর জন্য শুধুমাত্র এল নিনোর আবহাওয়ার ধরনকে দায়ী করা যায় না। মূলত এটি ‘সত্যিই কেবলমাত্র আবির্ভূত হয়েছে’।
গ্যাভিন শ্মিট বলেন, বর্তমান তাপপ্রবাহের পেছনে যদিও এল নিনো ছোট ভূমিকা পালন করছে, তারপরও ‘আমরা যা দেখছি তা হলো- প্রায় সর্বত্রই সামগ্রিকভাবে উষ্ণতা বেড়েছে। বিশেষ করে মহাসাগরগুলোতে। আমরা অনেক মাস ধরে সমুদ্র পৃষ্ঠের রেকর্ড-ব্রেকিং তাপমাত্রা দেখছি। এমনকি সেটি গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলের বাইরেও’। তার ভাষায়, ‘আমরা মনে করি, এই ধরনের পরিস্থিতি অব্যাহত থাকবে এবং যে কারণে আমরা মনে করছি এটি অব্যাহত থাকবে, সেটা হলো- আমরা বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউজ গ্যাসগুলোকে আগের মতোই প্রবেশ করাচ্ছি।’ বিশ্বে এখন যা হচ্ছে তাতে ২০২৩ সাল যে বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে উষ্ণ বছর হবে তেমন সম্ভাবনা দিনে দিনে বাড়ছে। গ্যাভিন শ্মিট অবশ্য তার হিসাবের ওপর ভিত্তি করে বর্তমানে তেমন কোনো সম্ভাবনাকে ‘ফিফটি-ফিফটি’ বলছেন। যদিও তিনি বলছেন, অন্য বিজ্ঞানীরা এমন সম্ভাবনাকে ৮০ শতাংশের মতো উচ্চতায় রেখেছেন। এছাড়া চলতি বছরের তুলনায় ২০২৪ সাল আরো বেশি উষ্ণ বছর হবে বলেও নিজের আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন নাসার শীর্ষ এই জলবায়ুবিদ।