অন্যরকম
দ্বীপে গেলেই মৃত্যু নিশ্চিত!
প্রকাশ : ২৩ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আলোকিত ডেস্ক
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক দ্বীপ। প্রশান্ত মহাসাগরের বিকিনি অ্যাটল নামের প্রবাল দ্বীপটি আদতে একটি মৃত্যুকূপ। আমেরিকা এই দ্বীপে বহু পারমাণবিক পরীক্ষা করেছে, যার কারণে এখানে বসবাসকারী বহু মানুষের জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এই দ্বীপে যে যান তার মৃত্যু অনিবার্য। কেন এমন হয়, চলুন এই দ্বীপ সম্পর্কে কিছু অদ্ভুদ তথ্য জেনে নেওয়া যাক। নিশ্চয়ই ভাবছেন যে কেন এমন ঘটে, একটি দ্বীপ কীভাবে মৃত্যুকূপে পরিণত হতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই জায়গাটিতে পারমাণবিক বোমার পরীক্ষাস্থল হিসেবে ব্যবহার করেছিল। জাপানের হিরোশিমা এবং নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণের পর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে। স্বাক্ষরিত হয় পরমাণু চুক্তি। কিন্তু তা সত্ত্বেও আমেরিকা পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা বন্ধ করেনি। বিকিনি অ্যাটল মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ নামে পরিচিত এই স্থানটি দুই বর্গ কিলোমিটার জায়গাজুড়ে বিস্তৃত এবং এলাকাটি আজ জনশূন্য।
এই দ্বীপে আমেরিকা ২৩টি পারমাণবিক বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে: এমনিতেই অতীতে এই দ্বীপের জনসংখ্যা খুব কম ছিল, এখানে বসবাস করতেন মাত্র ১৬৭ জন বাসিন্দা। দ্বীপে বসবাসকারীদের মার্কিন সেনাবাহিনী অন্য স্থানে পাঠিয়ে দেয়। তাদের জানানো হয় যে, আগামী দিনে যুদ্ধ বন্ধ করতে এখানে যে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুরুতে এখান থেকে মানুষ যেতে রাজি না হলেও, পরে এখানকার জননেতা সবাইকে রাজি করান। এরপর, আমেরিকা ১৯৪৬ থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত এই দ্বীপে মোট ২৩টি পারমাণবিক পরীক্ষা চালায়, যার মধ্যে ২০টি ছিল হাইড্রোজেন বোমা।
দ্বীপের লোকজনকে বলা হলো ফিরে আসতে: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেই পারমাণবিক পরীক্ষায় একটি বোমা ছিল, যা কি না নাগাসাকিকে ধ্বংসকারী বোমার চেয়ে হাজার গুণ বেশি শক্তিশালী। ২০১৭ সালে প্রবাল দ্বীপে পরিদর্শন করতে যাওয়া এক অধ্যাপক অনুমান করেছিলেন যে, বোমা বিস্ফোরণের ফলে সৃষ্ট ধ্বংসাবশেষ মহাকাশের ৬৫ কিলোমিটারেরও বেশি উপরে চলে গেছে। ১৯৬০-এর দশকে, মার্কিন পরমাণু শক্তি কমিশন এই দ্বীপটিকে বাসযোগ্য ঘোষণা করে এবং এখানে বসবাসকারী লোকদের আসতে অনুমতি দেয়।
দ্বীপটি বসবাসের উপযোগী নয়: যদিও একদশক পরেই এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়। কারণ গবেষণায় দেখা গেছে যে, এখানে বসবাস করতে আসা মানুষের শরীরে সিজিয়ামণ্ড১৩৭ এর মাত্রা ৭৫ শতাংশ বেড়ে গেছে। সোজা কথায়, তাদের শরীরে রেডিয়েশনের পরিমাণ অনেক বেড়ে গিয়েছিল। সিজিয়ামের কারণে শরীরে নানা ধরনের রোগ থেকে শুরু করে এবং সেই কারণে মানুষের মৃত্যুও হতে পারে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, আজও সেখানে যাওয়া ঠিক নয়।