চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক বাপ্পি হত্যা মামলায় দুজনের মৃত্যুদণ্ড ও তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং একজন আসামিকে খালাস দিয়েছেন আদালত। গতকাল বুধবার চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালত এই রায় দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানার উত্তর লক্ষ্যারচর এলাকার মন্ডলপাড়ার জাকির হোসেনের মেয়ে রাশেদা বেগম (২৮) ও পটিয়া থানার শোভনদন্ডী এলাকার হারুনুর রশিদের ছেলে হুমায়ুন রশিদ (২৮)। যাবজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- বরগুনা জেলার তালতলী থানার সোনাকাটা ইউনিয়নের লাউপাড়া আকন্দ বাড়ির মনসুর আলীর ছেলে আল আমিন (২৮), নোয়াখালী জেলার সাধুরাম থানার ব্রহ্মপুর এলাকার আন্দার বাড়ির মৃত হাবিবুল্লাহর ছেলে আকবর হোসেন রুবেল ওরফে সাদ্দাম (২৩) ও খাগড়াছড়ি জেলার সদর থানার শালবন এলাকার ফিরোজ সরকার বাড়ির হাফিজুল ইসলামের ছেলে মো. পারভেজ আলী (২৪)। জাকির হোসেন ওরফে মোল্লা জাকির নামে একজন আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী নেছার আহম্মেদ। তিনি বলেন, পাঁচজন আসামির মধ্যে মৃত্যুদণ্ডাপ্ত রাশেদা বেগম, যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আল আমিন ও আকবর হোসেন পলাতক রয়েছে। রায়ের সময় আদালতে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত হুমায়ুন রশিদ ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত মো. পারভেজ আলী এবং খালাস পাওয়া জাকির মোল্লা উপস্থিত ছিলেন। পরে হুমায়ুন রশিদ ও মো. পারভেজ আলীকে সাজা পরোয়ানা মূলে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৫ নভেম্বর নগরীর চকবাজার থানার কেবি আমান আলী রোডের একটি তিনতলা ভবন থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় আইনজীবী ওমর ফারুক বাপ্পির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় নিহত আইনজীবীর বাবা আলী আহমদ বাদী হয়ে চকবাজার থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত শেষে পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর তৎকালীন পরিদর্শক ও বর্তমান খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা ২০১৮ সালের ৪ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। ২০২০ সালের ১৫ অক্টোবর অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে আসামিদের বিরুদ্ধে বিচার শুরু করেন আদালত।
চট্টগ্রাম মহানগর পিপি মো. আবদুর রশিদ বলেন, বাপ্পি হত্যা মামলায় মোট ৩২ জন সাক্ষী ছিলেন। আদালত ২৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন। আদালত সাক্ষী ও প্রমাণের ভিত্তিতে দুজনের মৃত্যুদন্ড, তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং একজন আসামিকে খালাস দিয়েছেন।
পিপিকে মামলা পরিচালনায় সহযোগিতা করেন চট্টগ্রাম অতিরিক্ত মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট দুলাল চন্দ্র দেবনাথ, অ্যাডভোকেট ফারহানা রবিউল লিজা ও অ্যাডভোকেট তৌহিদা আক্তার খানম রাবেতা।