সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার নরিনা মধ্যপাড়া গ্রামের বিধবা পাতানো ধর্ম বোনের অশ্নীল ছবি ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে ১৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে প্রতারক জাহিদুল ইসলামকে (৫০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সে ওই উপজেলার নুকালি গ্রামের নাজিম শেখের ছেলে এবং সে নারী-পুরুষ উভয় কণ্ঠে কথা বলতে পারে। শাহজাদপুর থানার ওসি নজরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি আলোকিত বাংলাদেশকে জানান, নরিনা গ্রামের ওই গৃহবধূর স্বামী মারা যান ২০১৭ সালের প্রথম দিকে। তিনি তার চার সন্তান নিয়ে স্বামীর বাড়িতেই বসবাস করতেন। একই বছর এপ্রিল মাসের প্রথম দিকে জাহিদুল নিজেকে পাবনার এতিম শাকিল পরিচয় দিয়ে বিধবাকে ধর্ম বোন বানায়। একপর্যায়ে সে বিধবার বাড়িতে বেড়াতে আসে এবং তাকে নিজ ভাইয়ের মতো আপ্যায়ন করে পাতানো বোন। ভাইবোন হিসেবে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলে ওই দিন বিকালে জাহিদুল চলে যায়। কয়েক দিন পর জাহিদুল তাকে ফোন দিয়ে বলে- গোপনে আপনার কিছু অশ্নীল ছবি তুলেছি। আমি যখন আপনার বাড়িতে ছিলাম তখন আপনি ওয়াশরুমে গোসল করতে গিয়েছিলেন। সে সময়সহ আরো কিছু নগ্ন ছবি তুলেছি। আমাকে মোটা অঙ্কের টাকা না দিলে এ ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়া হবে। এ ভয় দেখিয়ে প্রথমে ১ লাখ টাকা নেয় এবং অনান্য সিমকার্ড দিয়ে নিজেকে সাংবাদিক ও পুলিশ পরিচয় দিয়ে পর্যায়ক্রমে ১৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারক জাহিদুল। ওই বিধবা ভয়ে জমানো টাকাসহ গহনা বিক্রি করেও এ টাকা দেয়া হয়। এরপরও ওই প্রতারক আরো টাকা দাবি করে। এতে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন ও আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। নিরুপায় হয়ে ২৫ জুলাই তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় অভিযোগ করেন। এ অভিযোগের পর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শাহজাদপুর সার্কেল) কামরুজ্জামানের দিকনির্দেশনায় তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ওই প্রতারককে শনাক্ত করা হয়। শনাক্তে দেখা যায়, তার বাড়ি একই উপজেলার নুকালি গ্রামে এবং সে নারী-পুরুষ উভয় কণ্ঠে কথা বলতে পারে। গত বুধবার ভোররাতে ওই গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন ও দুইটি সিমকার্ড উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে প্রতারণার কথা স্বীকার করে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা হয়েছে।
