মাগুরায় প্রথম বারের মতো উচ্চফলনশীল জি-৯ জাতের কলা চাষ করেছেন সদর উপজেলা হাজিপুর ইউনিয়নের নড়িহাটি গ্রামের বিকাশ কুমার ধর। কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে টিস্যু কালচার পদ্ধতিতে উৎপাদিত এ জাতের কলা চাষে ভালো ফলন ও বেশি দামে বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি আশা করছেন। বাণিজ্যিকভিত্তিতে এ জাতের কলা চাষ কৃষক পর্যায়ে বৃদ্ধি করা গেলে ভালো ফলনের পাশাপাশি কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারেন বলে কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে। কৃষি অফিসের দেয়া তথ্য মতে, টিস্যু কালচারের মাধ্যেমে উৎপাদিত জি-৯ জাতের উচ্চ ফলনশীল কলার চারা হয় সম্পূর্ণ রোগ মুক্ত। এ জাতের কলার ফলন বেশি, সুস্বাধু। তাই এ জাতের কলা চাষ করে অধিক লাভবান হতে পারেন কৃষকরা। সাধারণ জাতের কলায় যেখানে কাধিতে ৬০ থেকে ১২০টি কলা পাওয়া যায়, সেখানে উচ্চফলনশীল এ জাতের কলায় এক কাঁদি থেকে ২২০ থেকে ২৪০টি বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে তার চেয়েও বেশি ফলন পাওয়া য়ায়। শুরুতে এটি দেখতে সবুজ হলেও পাকার পর হলুদ রঙের হয়। যা দেখতে সাগর কলার মতো। এটি বেশি দিন সংরক্ষণ করা যায়। সরেজমিন নড়িহাটি গ্রামে গিয়ে কথা হয় বিকাশ কুমার ধরের সঙ্গে। তিনি সরকারি চাকরির পাশাপাশি কৃষি কাজের সাঙ্গেও জড়িত। তিনি জানান, ৩৫ শতাংশ জমিতে উচ্চ ফলনশীল জি-৯ জাতের কলা চাষ করেছেন। টিস্যু কালচার পদ্ধতিতে উৎপাদিত এ চারা তিনি সংগ্রহ করেন গাজীপুর জেলার একটি নার্সারি থেকে। প্রতি ৬ ফুট দূরত্বে মোট ৪০০টি কলা গাছ লাগিয়েছেন তিনি। প্রতিটি গাছে ধরেছে কলা। ফলনও ভালো হয়েছে। চারা সংগ্রহ থেকে শুরু করে জমি প্রস্তুত ও লাগানোসহ এ পর্যন্ত কলা চাষে আমার ব্যয় হয়েছে প্রায় এ লাখ টাকা। কলার ভালো ফলন ও পোকামাকড়ের আক্রমণ ঠেকাতে ব্যাগিং পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। ফলন খুবই ভালো হয়েছে। একটি কাঁদিতে অন্তত ২৬০ থেকে প্রায় ৩০০টি কলা ধরেছে। ৪০০টি কলা গাছ থেকে ৪ লাখ টাকা বিক্রি করতে পারব বলে আশা করছি। মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুফি মো. রফিকুজ্জামান জানান, জি-৯ জাতের কলার জাতটি উচ্চ ফলনশীল কলার জাত। টিস্যু কালচার পদ্ধতিতে এ কলার চাষ মাগুরাতে এই প্রথম। এ জাতের কলায় রোগবালাই তেমন হয় না। খেতেও সুস্বাদু। সাধারণ জাতের কলা গাছে যে পরিমাণ কলা ধরে সে তুলনায় এ গাছে অনেক বেশি কলা ধরে। এটি চাষ ও বিক্রির মাধ্যমে কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারেন। মাগুরা জেলায় এ কলা চাষ বৃদ্ধির জন্য আমরা কৃষক পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছি।