যশোর বিমানবন্দরের নবনির্মিত টার্মিনাল ভবন উদ্বোধন করা হয়েছে। এই টার্মিনাল ভবন নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৩২ কোটি টাকা।
গতকাল সোমবার টার্মিনাল ভবনটি উদ্বোধন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে বিশ্বের অন্যতম এভিয়েশন হাবে পরিণত করার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর এই লক্ষ্যকে সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য আমাদের সবার আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের এভিয়েশন শিল্পকে স্মার্ট এভিয়েশন শিল্পে রূপান্তর করা। এদেশের স্মার্ট এভিয়েশন শিল্প প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের নীতিগত সমর্থনের কারণে দেশের এভিয়েশন খাতে বিনিয়োগ বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী দেশের এভিয়েশন শিল্পের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, কারিগরি ও জনদক্ষতা উন্নয়ন এবং সময়োপযোগী আইন ও নীতি প্রণয়নের ফলে দেশের এভিয়েশন শিল্প দ্রুত প্রবৃদ্ধি লাভ করছে। তিনি জানান, বিগত ১০ বছরে বাংলাদেশের এভিয়েশন মার্কেট প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে এবং আগামী ১৫ বছরে বাংলাদেশের এভিয়েশন সেক্টরের প্রবৃদ্ধি হবে প্রায় তিনগুণ। মাহবুব আলী বলেন, শেখ হাসিনার নির্দেশে দেশের সব বিমানবন্দরে যাত্রীসেবার মানোন্নয়ন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে যাত্রীদের জন্য নিরাপদ ও স্বস্তির পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে।
এরই অংশ হিসেবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এয়ার ফিল্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত এবং ১৯৬০ সালে অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর হিসেবে যাত্রা শুরু করা যশোর বিমানবন্দরে গত সাড়ে ১৪ বছরে ব্যাপক উন্নয়নকাজ করা হয়েছে। এর অপারেশনাল কার্যক্রমও বেড়েছে বহুগুণ।
তিনি বলেন, নতুন এই নান্দনিক টার্মিনাল নির্মাণের ফলে এই এলাকার জনগণ ও বিমানবন্দর ব্যবহার করে যাত্রীরা বিমান এখন থেকে আরো উন্নত ও আধুনিক সেবা পাবেন। এই অঞ্চলের পর্যটন শিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্যসহ অন্যান্য অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রসারেও ভূমিকা রাখবে এই বিমানবন্দর। এই দৃষ্টিনন্দন ও আধুনিক টার্মিনাল এই এলাকার মানুষের জন্য শেখ হাসিনার উপহার।
বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়িত প্রকল্পের মাধ্যমে এই নতুন টার্মিনাল ভবন নির্মাণের ফলে যশোর বিমানবন্দর বছরে ১০ লাখ যাত্রী ব্যবস্থাপনা করার সক্ষমতা অর্জন করবে। নতুন টার্মিনাল ভবনে রয়েছে আটটি চেক-ইন কাউন্টার, পাঁচটি লাগেজ স্ক্যানিং মেশিন, পাঁচটি আর্চওয়ে, ভিআইপি লাউঞ্জ ও কার পার্কিং। এছাড়া এই প্রকল্পের অধীনে রানওয়ে লাইটিং সিস্টেম উন্নয়ন, বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন ও আবাসিক ভবন নির্মাণ, কার্গো এয়ারক্রাফট পার্কিং, ট্যাক্সিওয়ে নির্মাণ, পানি শোধনাগার নির্মাণ, যোগাযোগ ও নিরাপত্তা যন্ত্রাদি স্থাপন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য দেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য, যশোর-২ আসনের সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) ডা. নাসির উদ্দিন, যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ এবং বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন।