ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ২০২২ সালের জানুয়ারি-ডিসেম্বর পর্যন্ত আয় কমে ব্যয় বাড়লেও ধারবাহিকতায় বেড়েছে দলের তহবিল। ২০২২ পঞ্জিকা বছরে (জানুয়ারি-ডিসেম্বর) আয় হয়েছে ১০ কোটি ৭১ লাখ ৩৫ হাজার ৭৬৮ টাকা। আর ব্যয় হয়েছে ৭ কোটি ৮৬ লাখ ৮৪ হাজার ৫৭৯ টাকা। উদ্বৃত্ত রয়েছে ২ কোটি ৮৪ লাখ ৫১ হাজার ১৮৯ টাকা। গতকাল আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ এইচএন আশিকুর রহমান ২০২২ পঞ্জিকা বছরের নিরীক্ষিত হিসাব প্রতিবেদন জমা দিয়ে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, প্রতি বছর আমাদের উদ্বৃত্ত বাড়ছে। এ মুহূর্তে আমাদের অ্যাকাউন্টে স্থায়ী আমানত রয়েছে (২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত) ৭৩ কোটি ২৮ লাখ ২১ হাজার ৩৫৫ টাকা। মনোনয়ন ফরম বিক্রি, প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ ফরম বিক্রি, অনুদান ও সম্পত্তি থেকে আয় হচ্ছে দলের প্রধান আয়ের খাত। আর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ভাতা, সংগঠন পরিচালন ব্যয়, অফিস ভাড়া ও প্রকাশনা বাবদ ব্যয় দেখিয়েছে।
আগের পঞ্জিকা বছরে নিরীক্ষিত হিসাব প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে আওয়ামী লীগের আয় হয় ২১ কোটি ২৩ লাখ ৪৬ হাজার ১৬৬ টাকা, তহবিল থেকে ৬ কোটি ৩০ লাখ ১৯ হাজার ৮৫২ টাকা ব্যয় দেখানো হয়। ওই বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে আওয়ামী লীগের তহবিলে স্থিতি ছিল ৭০ কোটি ৪৩ লাখ ৭০ হাজার ১৬৬ টাকা। মহামারির প্রথম বছর ২০২০ সালে ১০ কোটি ৩৩ লাখ ৪৩ হাজার ৫৩৩ টাকা আয় দেখিয়েছিল আওয়ামী লীগ। আর ব্যয় ছিল ৯ কোটি ৯৪ লাখ ৪৯ হাজার ৯৩১ টাকা। ২০১৯ সালে আওয়ামী লীগের আয় ছিল ২১ কোটি টাকা। আর তার আগে একাদশ সংসদ নির্বাচনের বছর ২০১৮ সালে ২৪ কোটি টাকা আয় দেখিয়েছিল দলটি।
আওয়ামী লীগ নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নিরীক্ষিত হিসাব দিয়েছে জানিয়ে কোষাধ্যক্ষ বলেন, আমাদের হিসাব নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দিয়েছি। আয়-ব্যয়ে হিসাব স্বচ্ছ। উন্নয়ন বেশি হয়েছে, দিনে দিনে সদস্য সংখ্যা বাড়ছে। সামনে আশা করি, আমানত আরও বাড়বে। দলীয় কর্মকাণ্ডও বাড়ছে, খরচও বাড়ছে।
ব্যয় বাড়ার বিষয়ে আওয়ামী লীগ দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া জানান, করোনা মহামারির ৩ বছরে সব রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ড সীমিতভাবে ছিল। এখন বাইরের কর্মসূচি বেশি হারে হচ্ছে, এতে দলের ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে।
আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল অডিট রিপোর্ট ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলমের কাছে জমা দেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, অর্থ ও পরিকল্পনাবিষয়ক উপকমিটির সদস্য জাফরুল শাহরিয়ার জুয়েলও উপস্থিত ছিলেন।
বর্তমানে বাংলাদেশে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল রয়েছে ৪২টি। আইন অনুযায়ী পর পর ৩ বছর দলের আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা না দিলে সংশ্লিষ্ট দলের নিবন্ধন বাতিলের বিধান রয়েছে।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী, প্রতি বছর ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আগের পঞ্জিকা বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব নিবন্ধিত নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নিরীক্ষা করিয়ে দলগুলোকে নির্বাচন কমিশনে জমা দিতে হয়।