নড়াইলের লোহাগড়া ও কালিয়া উপজেলার মধুমতি ও নবগঙ্গা নদীর ভাঙনকবলিত চর অঞ্চলের চাষিদের বাদাম চাষে ভাগ্য বদলাতে শুরু করেছে। এ অঞ্চলের চাষিদের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বাদাম চাষ। সাধারণত জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে বাদামের আবাদ শুরু হয় এবং জুন-জুলাই মাসে জমি থেকে বাদাম উত্তোলন করা হয়। অল্প খরচে ভালো ফলন ও অধিক লাভ হওয়ায় নদী তীরবর্তী চরবাসী কৃষক বাদাম চাষের দিকে ঝুঁকছে। কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নতুন চর জাগা মাটিতে ধান, পাট, গম, সরিষাসহ অন্যান্য ফসল হয় না। বাদাম চাষ ভালো হয়। পর পর তিন বছর জমিতে বাদাম চাষ করলে মাটির গুণাগুণ ফিরে আসে। এর ফলে সেই জমিতে ধান, পাট, গম, সরিষাসহ অন্যান্য ফসল চাষাবাদের উপযোগী হয়। জেলায় এ বছর ৩৫০ হেক্টর আবাদের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও ৩৯৩ হেক্টরে বাদাম আবাদ হয়েছে। নড়াইলের তিনটি উপজেলার মধ্যে লোহাগড়া ও কালিয়া উপজেলায় বাদামের আবাদ হয়। জেলায় চলতি বছর ৭৪৪ মেট্রিক টন বাদাম উৎপাদন হয়েছে। কৃষক মো. বুলু মিয়া জানান, কৃষি জমি সবটুকু নদীতে চলে (ভেঙে) যাওয়ার পরে হতাশ হয়ে পড়েছিলাম তখন অনেক কষ্টে সংসার চলেছে।
অন্যের জমি বর্গা নিয়ে বাদাম চাষ করে ভালো আছি। এ বছর এক একর জমিতে বাদাম চাষ করেছিলাম খরচ বাদে এক লাখ ২০ হাজার টাকা লাভ হয়েছে। নড়াইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক দীপক কুরার রায় বলেন, চলতি বছর ৯০০ জন বাদাম চাষির মাঝে বিনামূল্যে বীজ বিতরণ করা হয়েছে। মধুমতি ও নবগঙ্গা নদী চর এলাকায় বাদাম চাষে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সব সময় কৃষকের পাশে থাকে। এ চাষ লাভজনক হওয়ায় দিন দিন বাদাম চাষ বাড়ছে। চর অঞ্চলের জনপদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাদাম চাষ ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। ভাঙনে নিঃস্ব হওয়া পরিবারগুলো বাদাম চাষের মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছে।