ঢাকা ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সুসংবাদ প্রতিদিন

ভাসমান বেড তৈরিতে ব্যস্ত কৃষক

ভাসমান বেড তৈরিতে ব্যস্ত কৃষক

পিরোজপুরের নাজিরপুর বিলাঞ্চলে ভাসমান বেড তৈরির কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষক। বৃষ্টির পানির দেখা পেয়ে কৃষকের এ কাজের ব্যস্ততা বেড়ে গেছে। উপজেলার কলারদোয়ানিয়া, পদ্মডুবি, মনোহরপুর, দেউলবাড়ী, সোনাপুর, বিলডুমরিয়াসহ বিভিন্ন বিলে কৃষকের এ ব্যস্ততা রয়েছে। ভাসমান বেডের ওপর উৎপাদিত কৃষি সবজি নিয়েই বেঠাকাটা ঐতিহ্যবাহী ভাসমান সবজি বাজার বসে। ভাসমান সবজি চাষি ফরিদ বালি জানান, কচুরিপানার ঘন, লম্বা ও পুরু স্তরের ওপর একটি নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যরে বাঁশ ফেলে এ বেড তৈরি করা হয়। এরপর বাঁশের ওপর দাঁড়িয়ে শরীরের ভারসাম্য ঠিক রেখে দুই পাশ থেকে কচুরিপানা টেনে এনে বাঁশের ওপর স্তরে স্তরে সাজাতে হয়। কচুরিপানার স্তর সাজানোর সময় কচুরিপানা পানিতে যেভাবে থাকে, সেভাবে ঘন করে অর্থাৎ দাঁড় করে সাজাতে হবে। পরবর্তী অর্ধেক স্তর সাজানোর সময় কচুরিপানা উল্টো করে সাজাতে হবে অর্থাৎ এর শিকড় উপরের দিকে থাকতে হবে। তারপর পা দিয়ে চেপে চেপে উঁচু স্তর তৈরি করতে হবে যাতে কোনো ফাঁকা জায়গা না থাকে। এরপর স্তূপের ওপর উঠে প্রয়োজনীয় কচুরিপানা তুলে পরিমাণ অনুযায়ী ধাপ তৈরি করতে হবে। ধাপের উপরের অংশে অপেক্ষাকৃত ছোট কচুরিপানা, খুদি পানা, টোপা পানা দেয়া ভালো। বন্যা, ঢেউ বা জোয়ার-ভাটার স্রোত থাকলে বেডের মাঝামাঝি জায়গায় বাঁশের খুঁটি বা বেডের চারপাশে ফ্রেম দিতে হবে। একই এলাকার কৃষক হোসাইন মোল্লা জানান, ভাসমান বেড তৈরির পর উপরিভাগ আবাদ উপযোগী হতে প্রায় ১৫ থেকে ২০ দিন সময় লাগে। বেড তৈরির পর তাতে সারি করে বীজ বোনা যায়। আদা, হলুদ, কচু প্রভৃতি ফসল সরাসরি রোপণ করা যায়। চারা ৫-৬ ইঞ্চি হলে এবং শিকড়ের মাথা বল থেকে বের হলেই (কালো হওয়ার আগেই) বেডে লাগাতে হবে। বিড়া বা ব্যাগের চারা একত্রে বেডে নির্দিষ্ট পরিমাণ গর্ত করে রোপণ করতে হবে। বিড়ার আকার ছোট হলে পার্শ্বে পচা কচুরির আস্তরণ দিতে হবে। নতুন আস্তরণের সাথে ১-২ চা চামচ জৈব সার প্রয়োগ করলে চারা তাড়াতাড়ি বাড়বে। চারা লাগানোর পর সামান্য পানি দিয়ে চারা ও চারার গোড়া ভিজিয়ে দেয়া আবশ্যক। চারা বেশি লম্বা হলে বাউনি দিতে হবে। অধিক ফলন পাওয়ার জন্য ভাসমান বেডে ঢ্যাঁড়শ, টমেটো, বেগুন, কলমিশাক ইত্যাদি ফসলের সাথে আন্তঃফসল ও মিশ্র ফসল হিসেবে ঝিঙে, লালশাক, পুঁইশাক, ধনিয়া, ডাঁটা প্রভৃতি চাষ করা যায়। নাজিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইশরাতুন্নেছা এশা জানান, এ উপজেলার বিলাঞ্চলে ভাসমান বেডে কৃষি সবজি উৎপাদনের সুনাম দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত