দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ৯ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং তার স্ত্রী ড. জোবাইদা রহমানকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তবে এই সাজার বিষয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তাদের বিরুদ্ধে সাজা দিয়ে বিএনপিকে সরকারবিরোধী আন্দোলন থেকে সরানো যাবে না। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়া এবং নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার জন্য ফরমায়েশি রায় দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখতে সরকার তার কোনো প্রতিপক্ষ রাখতে চায় না। এজন্য ফরমায়েশি রায় দেওয়া হয়েছে। বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে নীলনকশা বাস্তবায়ন করছে সরকার।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, নজিরবিহীনভাবে দ্রুততার সঙ্গে সাক্ষ্য নিয়ে রায় দেওয়া হয়েছে। এই ফরমায়েশি রায় প্রত্যাখ্যান করেছে জনগণ। তিনি বলেন, জনগণের যে জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে বিএনপির এক দফার আন্দোলনে, এটাকে নস্যাৎ করতে এই সাজানো রায়। সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে দলীয়করণ করে প্রতিটি রায় ফরমায়েশি দেওয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় তারেক রহমানকে টার্গেট করেছেন এমন মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এসব করে জনগণের আন্দোলন দমানো যাবে না।
এ বিষয়ে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের ঢাকা ইউনিটের সভাপতি ও তারেক-জুবাইদার পক্ষে আইনি লড়াই করতে আবেদন জমা দেয়া আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, এ মামলায় মোট ৫৭ জন সাক্ষী ছিল। মাত্র ১৬ কার্য দিবসে ৪২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন আদালত। যা আদালত অঙ্গনে নজিরবিহীন। দ্রুত এই মামলা শেষ করতে সরকারের হস্তক্ষেপ ছিল। দুই দিন সাক্ষ্যগ্রহণ করেছে রাত ৭টা পর্যন্ত। কোর্ট অফিসার হিসেবে মামলার শুনানিতে আইনজীবীদের থাকার আইনগত অধিকার রয়েছে। কিন্তু এই মামলায় আমাদের আইনজীবীদের পিপির নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীরা মারধর করে বের করে দিয়েছে। আজ (গতকাল বুধবার) আবার আদালত ফরমায়েশি রায় দিলেন।
এদিকে, বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের দাবি, এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে নজিরবিহীন দ্রুততম সময়ে। রাতের অন্ধকারে সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে। এমনকি এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের দিন তাদের আইনজীবীরা যাতে এজলাসে থাকতে না পারে পিপির নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীরা মারধর করে বের করে দিয়েছে। আদালত ফরমায়েশি রায় দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তারেক রহমান, জুবাইদা রহমানসহ তিনজনের বিরুদ্ধে রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পরের বছর তাদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়া হয়। চলতি বছরের গত ১৩ এপ্রিল তারেক রহমান ও জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।