প্রবাস জীবনের ইতি টেনে দেশেই সফলতার গল্প রচনা করেছেন রাঙামাটির মিলটন চাকমা। রাঙামাটি সদরের সাফছড়ি ইউনিয়নের মধ্যপাড়া এলাকায় নিজের দুই একর জমিতে চার হাজার ড্রাগনের চারা রোপণ করেছেন তিনি। মিলটন চাকমা জীবনের শুরুতে শ্রীলঙ্কায় এ লেভেল পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। এরপর পাড়ি জমান দক্ষিণ কোরিয়ায়। সেখানে দীর্ঘ ৮ বছর কাটানোর পর বাসনা জাগে উদ্যোক্তা হওয়ার এবং বেকারদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার। সেই বাসনাকে বাস্তবে রূপ দিতে ফিরে আসেন দেশে। উদ্যোক্তা হতে বিভিন্ন সময় ইউটিউবে চোখ রাখেন এবং ড্রাগন চাষে মন স্থির করেন তিনি। আর তাতেই অবশেষে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পান তিনি। নাটোর জেলায় দুবাই ফেরত বন্ধুর কাছ থেকে ড্রাগনের চারা সংগ্রহ করেন ও পরামর্শ নেন। ড্রাগনের পাশাপাশি তিনি আরও ৫০০টি পেয়ারা গাছ এবং ২৫০টি মাল্টা গাছের চারা লাগিয়েছে। এসব গাছের চারা স্থানীয় কৃষি বিভাগ থেকে সংগ্রহ করেছেন তিনি। এরপর তাকে আর পেছনে ফিরে থাকাতে হয়নি। এখন তার শুধুই সফলতার পাঠ রচিত হচ্ছে। তার বাগানে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হযেছে কয়েকজন বেকার যুবকের। স্থানীয়রা বলছেন, মিলটন ড্রাগন চাষ করে শুধু নিজেই স্বাবলম্বী হননি, তাকে দেখে স্থানীয় অনেক বেকার যুবকও ড্রাগন চাষে উৎসাহী হচ্ছেন। ড্রাগন বাগানের কর্মচারী কমল জ্যোতি চাকমা বলেন, মিলটন দাদার বাগান গড়ে তোলার শুরু থেকে আমি আছি। এখানে আমি দেড় বছর ধরে কাজ করছি। এ বাগানটিতে কাজ করতে অনেক ভালো লাগছে। সাফছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত নারী সদস্য (১, ২, ৩) সুমিত্রা চাকমা বলেন, মিলটন দাদার বাগানটি দেখে আমি অনেক কিছু শিখেছি। নিজের পরিত্যক্ত জায়গায় ৩০টি ড্রাগন গাছ লাগিয়েছি। ফলনও পাচ্ছি। পিচ মিশন এগ্রো ফার্মের স্বত্বাধিকারী ড্রাগন চাষি মিলটন চাকমা বলেন, আমি ২০২২ সালের শুরুতে ড্রাগনের চাষ শুরু করি। বর্তমানে গড়ে তোলা বাগান থেকে ৯ মাসে চারবার ফল বিক্রি করেছি। প্রতিবারে ২৭ থেকে ২৮ কেজি ফল বিক্রি করি। প্রতিবার ফল বিক্রি থেকে আয় হয় দেড় থেকে ২ লাখ টাকা। পাশাপাশি অনলাইনে বাগানের উৎপাদিত ফল বিক্রি করা হয়। প্রথম বছরে ৬০ থেকে ৬৫ ভাগ ফলন পাচ্ছি। পরের বছর থেকে আরো বেশি ফলন পাব বলে আশা করছি। সাফছড়ি ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান বলেন, মিলটন চাকমা সফলতা দেখিয়েছেন। কৃষি বিভাগ তাকে গুরুত্ব দিয়ে সহযোগিতা করছে। এ কৃষি কর্মকর্তা আরো বলেন, বর্তমান সরকার কৃষিকে গুরুত্ব দিয়েছে। সরকারের সেই লক্ষ্যকে বাস্তবায়নে আন্তরিকভাবে কাজ করছে কৃষি বিভাগ।