ঢাকা ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১৫ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞার রুল শুনবেন হাইকোর্ট

তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞার রুল শুনবেন হাইকোর্ট

প্রিন্ট, ইলেকট্রিক ও অনলাইন গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচার বন্ধের বিষয়ে জারি করা রুল শুনবেন হাইকোর্ট। এ কারণে রুল প্রস্তুত হওয়ার পর আবেদনকারীদের আসতে বলেছেন হাইকোর্ট।

গতকাল বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ নির্দেশনা দেন। আদালতে এদিন রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট মো. কামরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম ও অ্যাডভোকেট নাসরিন সিদ্দিকা লিনা। অন্যদিকে বিএনপির পক্ষ থেকে ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির আইনবিষয়ক সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, সুপ্রিমকোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার বদরোদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিমকোর্ট ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. কামরুল ইসলাম সজলসহ আরো অনেক আইনজীবী।

রিটকারী আইনজীবীরা গণমাধ্যম, ইউটিউব, ফেইসবুক, টুইটারসহ সব মাধ্যমে তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচার বন্ধ সংক্রান্ত রিটের বিষয়ে জারি করা রুল শুনানির জন্য গতকাল হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে প্রার্থনা জানান। তখন হাইকোর্ট বলেন, রুল তো এখনো প্রস্তুত হয়নি। আগে রুল প্রস্তুত হোক, তখন আদালতে আসেন। পরে এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট মো. কামরুল ইসলাম বলেন, জারি করা রুলটির জবাব সবাই দিলেও পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এখনো রুলের জবাব দেননি। এ কারণে এখনো রুলটি শুনানির জন্য প্রস্তুত হয়নি। তাই সবকিছু মিলিয়ে রুলটি প্রস্তুত হওয়ার পর হাইকোর্ট আমাদের আবেদন নিয়ে যেতে বলেছেন। তারপর শুনানি করবেন। এর আগে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ বিষয়ে জারি করা রুল শুনানির জন্য আবেদন করা হয়। গত বুধবার সাবেক মন্ত্রী ও সুপ্রিমকোর্টের অ্যাডভোকেট মো. কামরুল ইসলাম এ আর্জি (ম্যানশন সিøপ) উপস্থাপন করেন। এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম ও অ্যাডভোকেট নাসরিন সিদ্দিকী লিনা।

আইনের দৃষ্টিতে পলাতক থাকা অবস্থায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য বা বিবৃতি সব ধরনের গণমাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশ নিষিদ্ধ করতে প্রয়োজনীয়ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন এ আদেশ দিয়েছিলেন। একই সঙ্গে তারেক রহমানের বিদেশে বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানাতে পররাষ্ট্র সচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তার পাসপোর্টের মেয়াদের বিষয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) একটি প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। রুলে তারেক রহমানের বক্তব্য প্রকাশ ও প্রচার নিষিদ্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেন বিবাদীদের নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল। তথ্য সচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, আইন সচিব, পররাষ্ট্র সচিব, আইজিপি, বিটিভির মহাপরিচালক, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, একুশে টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক, দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্পাদক ও তারেক রহমানসহ বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। ওই সময় বলা হয়, সম্প্রতি (তৎকালীন সময়ে ২০১৫ সালের ৬ জানুয়ারি) দেশের ইতিহাস ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে তারেক রহমানের দেওয়া বক্তব্য তুলে ধরে তা প্রচারে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আইনজীবী নাসরিন সিদ্দিকী লিনার পক্ষে রিটটি করেন আইনজীবী সানজিদা খানম।

আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. ইউসুফ হোসেন হুমায়ূন, অ্যাডভোকেট (মরহুম) সাহারা খাতুন, বর্তমান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, বর্তমান অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এসএম মুনীর, সাবেক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মোমতাজ উদ্দিন মেহেদী, অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ রায়।

ওই সময় সুপ্রিমকোর্টের অ্যাডভোকেট (বর্তমানে মন্ত্রী) শ ম রেজাউল করিম বলেছিলেন, আইনের দৃষ্টিতে পলাতক থাকা অবস্থায় তারেক রহমানের কোনো বক্তব্য-বিবৃতি প্রচার বা প্রকাশ নিষিদ্ধ করতে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ফলে সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ অনলাইনে তারেক রহমানের কোনো ধরনের বক্তব্য প্রচার করা যাবে না। তারই ধারাবাহিকতায় এটি আবার শুনানির উদ্যোগ নেন আওয়ামী লীগের আইনজীবীরা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত