চাকরির প্রলোভনে অর্থ আত্মসাতের মামলায় শেরপুরের জমশেদ আলী মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম রেজা (৫২) ও তার তিন সহযোগীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে শেরপুর সদর জি.আর আমলী আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন জানালে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারিন ফারজানা উভয় পক্ষের শুনানি শেষে তাদের সবাইকে জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। অপর তিনজন হচ্ছেন একই কলেজের প্রভাষক আলফাজ উদ্দিন (৪২), আত্মীয় মো. শেখ জামাল (৪৩) ও মো. হযরত আলী (৪৫)।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কোর্ট পরিদর্শক খন্দকার শহিদুল হক বলেন, আসামিরা উচ্চ আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক আমলী আদালতে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে জামিননামা দাখিল ও আত্মসমর্পণ না করে সেই নির্দেশনা অমান্য করেছেন। এ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে দুর্নীতিপরায়ণ অধ্যক্ষ ও তার তিন সহযোগীকে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় স্বস্তি ফিরে এসেছে আন্দোলরত এলাকাবাসীর মধ্যে। এখন তারা দ্রুত অধ্যক্ষের অপসারণসহ শাস্তি দাবি করেছেন।
আদালত সূত্র জানায়, সদর উপজেলার লছমনপুর ঘিনাপাড়া গ্রামের মো. নুর ইসলামের ছেলে মো. মোতালেব মিয়াকে (২৩) জমশেদ আলী মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজে ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে চাকরি দেওয়ার প্রলোভনে অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম রেজা প্রভাষক আলফাজ উদ্দিন ও আত্মীয়ের সহযোগিতায় ২০২২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা নেন। পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে চাকরির ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলেও চাকরি না হওয়ায় মোতালেব মিয়া চলতি বছরের ২৬ মে অধ্যক্ষের কাছে টাকা ফেরত দাবি করলে তিনি সহযোগীদের প্ররোচনায় তা দিতে অস্বীকার করেন। ওই ঘটনায় ৭ জুন মোতালেব মিয়া বাদী হয়ে অধ্যক্ষসহ চারজনের বিরুদ্ধে শেরপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এরপর আসামিরা ১৩ জুন উচ্চ আদালত থেকে ৬ সপ্তাহের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন লাভ করেন। কিন্তু উচ্চ আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক আসামিরা আমলী আদালতে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে জামিননামা দাখিল ও আত্মসমর্পণ করেনি। উল্লেখ্য, অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম রেজার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বাক্ষর জালিয়াতি, নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অভিযোগ তুলে তার অপসারণের দাবিতে জমশেদ আলী মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও কলেজ গভর্নিং বডির সাবেক সভাপতি মিনহাজ উদ্দিন মিনালের নেতৃত্বে দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির ব্যানারে দীর্ঘদিন ধরে লাগাতার আন্দোলন চলছে।